অনেক কথা৪
মাতৃবাক্য ও পিতৃকথা–
* যাঁর পদছায়ায় পাই আমি শান্তির আভাস
তাঁর পদতলে কেন নয় আমার স্বর্গবাস।
* মা-বাবার কোনো তুলনা নেই। মা-বাবাকে যে শ্রদ্ধা করে না সে জীবনে মানুষ হতে পারে না।
* মাতাপিতা যেমনি হোক–মাতাপিতাই। তাঁরা সন্তানের কাছে কোনো কিছু দাবি না করলেও তাঁদের আশা অনেক–একজন সন্তান যেন কর্তব্যপালনে অবহেলা না করে।
* সন্তান যত বড় শিক্ষিতই হোক, মা-বাবাকে শিক্ষাদানের ক্ষমতা নেই।
* একজন নারী যতই বীরবিদুষী হোক না কেন, সে কখনো-না-কখনো একজন পুরুষের কাছে আত্মসমর্পণ করতেই হয়। আর এভাবে একজন নারী মাতৃত্ব গ্রহণে তার নারীত্বের পরিচয় দিতেই হয়।
* মায়ের কোনো বিকল্প নেই, যে মাতৃদায়িত্ব বুঝে না তার মা হওয়ার অধিকার থাকে না।
* ‘মা’ একটি ক্ষুদ্র শব্দ : অসীম মমতার খনি–পৃথিবীর কোনো অভিধানে খুঁজে পাবে না মায়ের মতো বৃহৎ ধ্বনি।
* মাতার বিকল্প মাতাই এবং পিতার বিকল্প পিতাই। দুনিয়াতে এমন কোনো দরদবান নেই, মাতাপিতার স্থান পূরণ করতে পারে।
* মা-বাবার পায়ের নিচে যদি সন্তানের স্বর্গ হয়, তা হলে তাঁদের মুখোমণ্ডলে ঈশ্বরাকৃতি দেখতে অপরাধ কি?
* মাকে কেউ দুঃখ দিবে না, আঘাত করবে না। যে মাকে দুঃখ দেয়, আঘাত করে সে জীবদ্দশায় নরকবাস ভোগ করে–তারপর মুক্তি কোথায় জানি না।
* সন্তানহারা জননী আর মণিহারা ফণির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সুতরাং মায়ের অবদান সবচেয়ে উপরে।
* মায়ের মমতার কোনো সমতা নেই।
* যেই নারী স্বেচ্ছায় সতীত্ব হারায় সেই নারী মাতৃত্বের মহানতা হারায়।
* যেই নারীর মাতৃধারণক্ষমতা অক্ষম সেই নারীর জীবন অসাড়।
* আমার মাতাপিতা যতই নগণ্য হোক আমার জন্য পরম গণ্য।
* আমার জন্মদাতা এবং আমার জন্মদাত্রী আমার ঈশ্বর বটে।
* আমার জন্মদাতা এবং জন্মদাত্রী আমার সৃষ্টিদাতার চেয়ে বড় নয়। কিন্তু আমার হাজার জনমে হাজার বছরের এবাদত বাবা-মার চরণে উৎসর্গ করেও মোক্ষণ হবে না। সুতরাং এ পৃথিবীতে জনক-জননীর চেয়ে বড় কে?
* আমি মাটির মতো উদার এবং আকাশের মতো বিশাল হতে পারি কিন্তু মাতাপিতার অবদানের কাছে ধূলিকণাসমান হতে পারব না।
* বিধাতার পরে পিতা অতএব পিতার চেয়ে বড় আর কেউ নেই।
* সংসারকে স্বর্গ বানাতে পারে একজন কর্তা আবার সংসারকে নরকে পরিণত করতে পারে একজন কর্ত্রী। সুতরাং কর্তাকর্ত্রীকে মনে রাখতে হবে ঈশ্বরকে…
* অবুঝমনে আমি বহুবার পিতাকে অবহেলা করেছি : সেই পিতার গুণবর্ণন–আমার দশ জনমেও সম্ভব নয়।
* আমার বাবা যেখানে দাঁড়িছে সেখানেই নমনীয়তার সৃষ্টি হয়েছে, সুতরাং মনুষ্যত্বের এমন গুণ ওঁর মধ্যে ছিল, যেটা বুঝা আমার মতো একজন মূর্খ সন্তানের সাধ্যাতীত।
* মানবের ঊর্ধ্বে কোনো ধর্ম নেই, মনের ঊর্ধ্বে কোনো কর্ম নেই। মানুষ আর মন দুয়ে মিলে করতে পারে বেহেস্ত-দোজখ।
* অন্তর্যামীর কাছ থেকে কোনো কিছু যেমন গোপন করা যায় না, জনক-জননীর কাছ থেকেও তেমন কোনো কিছু গোপন করা ভাল না।
* পৃথিবীতে সবকিছু অতিমাত্রায় প্রাপ্ত বা রপ্ত করা সম্ভব। কিন্তু মাতৃস্নেহ কিংবা পিতৃপ্রণয় পৃথিবীর কোনো ধনসম্পদ ও হীরেজহতের বিনিময়ে প্রাপ্ত বা রপ্ত করা সম্ভবপর নয়–এমন ভালবাসা মাতাপিতার।
* এসংসারে একমাত্র অভিভাবকই আপন। মানুষ হতে পশুপাখি পর্যন্ত নিজসন্তানের জন্যে স্বার্থত্যাগ হতে জীবনবিসর্জন পর্যন্ত দেয়। কিন্তু দুনিয়াতে এমন কতক অভিভাবক আছেন তাঁরা সন্তানদের ভাল ত কামনা করেন তবে সদাচরণ করেন না; এরূপ অভিভাবকের কাছে মিনতি, তাঁরা যেন সন্তানদের প্রতি সংযমী হন এবং হাসিখুশি জীবনযাপনে সহায়তা করেন। কারণ, মৃত্যুযন্ত্রণার চেয়ে দুঃখযন্ত্রণা অনেক বড়।
চলবে…