সালমান শাহ ও দুই দশকের বিহ্বলতা
অনেকেই আজ সালমান শাহ’কে স্মরণ করছেন, তাকে ও তার চলচ্চিত্র নিয়ে নিজ নিজ স্মৃতি সবার সাথে শেয়ার করছেন । ভাবলাম আমিও না হয় প্রিয় নায়ককে নিয়ে আমার যে বিস্ময় তা শেয়ার করি –
বিটিভি’তে সালমান শাহ’র চলচ্চিত্র দেখতাম আর মুগ্ধ হতাম তার সুদর্শন চেহারা, স্মার্টনেস, মুচকি হাসি আর সাবলীল অভিনয় দেখে । তার ষ্টাইল সেন্স সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল । তিনি ছিলেন সত্যিকারের ষ্টাইল আইকন, কারণ তার মাথায় কাপড় বাঁধা, ছেড়া-ফাড়া জিন্স, ছোট্ট পনিটেল, ষ্টাইলিশ গাড়ি-বাইক ড্রাইভ করাসহ এখনকার চলতি কোন ফ্যাশনটা সেই নব্বই দশকের প্রথম ভাগে তিনি করে যাননি তা তার ছবিগুলো দেখলে অবাক চোখে দেখে যাই শুধু !
আমার উপর আমার বড় ভাইয়ার অনেক প্রভাব, সেই ছোট্ট থেকে তার পছন্দই আমার পছন্দ । ভাইয়া সালমান শাহ’র পাগল টাইপ ভক্ত ছিল, আমাদের বাসায় কারো রুমের দেয়ালে আজ পর্যন্ত কোন নায়ক-নায়িকার পোষ্টার লাগানো হয়নি । কিন্তু ৯৬-এ একবার লাগানো হয়েছিল – সালমান শাহ’র পোষ্টার, এক পাগল ভক্তের ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ ।
সেই বয়সে নায়ক কি জিনিস ‘খায় না মাথায় দেয়’ তাই বুঝি না, তবুও বাসায় এক অপরিচিত সুদর্শন যুবকের পোষ্টার দেখে সেই যে বিভোর হয়েছিলাম এখন পর্যন্ত বাংলা চলচ্চিত্রে আমার সেই মোহ ভাঙার মতন কেউ আসেনি ।
সালমান শাহ’র রহস্যময় মৃত্যুর ১৭ বছর পরও এমন অনেকেই আছে যারা তার মৃত্যুর পর জন্ম নিয়েও তার ছবি দেখে ভিনদেশি মেগাষ্টার-সুপারষ্টারদের পাশে সরিয়ে আজ তাকে স্মরণ করছে এক বুক আফসোস নিয়ে ।
অন্তর্ধানের প্রায় দুই দশক পরেও মাত্র ২৭ টি চলচ্চিত্রে কাজ করা যে নায়ককে জাতি আফসোস ভরে স্মরণ করে, তাকে তো কালজয়ী বলাই যায় ।
আমার এই স্মৃতিচারণ সেই কালজয়ী নায়ক সালমান শাহ’র প্রতি ।