Today 12 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

মুক্তচিন্তা বনাম ধর্মচিন্তা ।

: | : ১০/০৯/২০১৩

অনেক আগেই এই লেখাটি লিখার একটা ইচ্ছে ছিল । কিন্তু নানান ইস্যু এবং নিজের অলসতার সুযোগ নিয়ে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি । আজও খুব একটা প্রান পাচ্ছি না । কিছু অলসতাও ভীড় করেছে । তাই নিজের প্রতি সন্দেহ রেখেই চেষ্টা করে গেলাম ।

 

রাজনৈতিক অস্হিরতার সঙ্গে ইদানীং যুক্ত হয়েছে মুক্তচিন্তা ও ধর্মচিন্তার পারস্পরিক বিরোধপূর্ন অবস্হান । এক রাজনৈতিক অস্হিরতাই যেখানে আমাদের সমস্ত সম্ভাবনাকে টেনে ধরেছে সেখানে এই উপদ্রব আমাদেরকে আরো শংকিত করে তুলছে । অবশ্য এ উপদ্রব আমাদের জন্য নতুন কিছু নয় । তাছাড়া এ উপদ্রব রাজনৈতিক সমীকরনের বাহিরের কোন উপদ্রব নয় । শুধুমাএ উৎপওিটা কোথাও কোথাও সন্দেহমুক্ত । তারপর সবই এবং সবাই ঐ একই সমীকরনে নানান চলক হিসেবে নিজেকে উপস্হাপন করে এবং যার যার মতো সুবিধাজনক স্হানে অবস্হান করেন ।

 

কিন্তু মুক্তচিন্তা বা ধর্মচিন্তার মৌলিক অবস্হানে এই বিরোধ অসঙ্গতিপূর্ন । এবং উভয় গোষ্ঠীই সমান ভাবে দায়ী । আমরা একদিকে মৌলবাদীদের হিংস্র থাবা দেখি মানবতার উপর অন্যদিকে তথাকথিত মুক্তচিন্তাবিদদের অসভ্য আস্ফালন দেখি মানুষের মূল্যবোধের উপর । এই সংঘর্ষে নিরীহ ধর্মপ্রান মানুষেরা জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে অন্ধ ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সমর্থন করে যায় । আর মুক্তচিন্তাধারীদের পাশে দাঁড়ায় কিছু জ্ঞান পাপী ও নানান মিডিয়া । এবং সর্বোপরি চলে আসে আমাদের রাজনৈতিক যোগবিয়োগ । ফলে ধর্ম যেমন রাজনীতি দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় তেমনি মুক্তচিন্তাও ক্ষত হয় ঐ রাজনৈতিক আঘাতেই । আমাদের দুঃখ আমরা কোনটিকেই রক্ষা করতে পারি না । আর এর দায় যতটা না রাজনীতিবিদদের তারচেয়েও বেশী আমাদের এই দুই উভয় গোষ্ঠীর । যখনই তারা নিজেদের ভুলকে ন্যায় বলে টিকিয়ে রাখার জন্য রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে তখনই তারা  একদিকে যেমন নিজেদের সর্বনাশ ডেকেছে তেমনি সৃষ্টি করেছে বিশাল মানবতার সংকট ।

 

আমরা একদিকে যেমন মৌলবাদীদের উৎপীড়ন দেখি তেমনি দেখি তথাকথিত মুক্তচিন্তাবিদদের নিপীড়ন । মৌলবাদীরা ধর্মকে পুঁজি করে যেমন ব্যবসায় নামে তেমনি ঐ মুক্তচিন্তাবিদরা ধর্মকে আঘাত করে সহজ সস্তা প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে । এই দু’য়ের মাঝে আপাদমস্তক কোন পার্থক্যে দেখি না । উভয়েই তার স্বার্থ রক্ষায় ধর্মকে ব্যবহার করে । শুধুমাএ অবস্হানটা ভিন্ন হয় । এবং তা যৌক্তিকভাবেই ।

 

এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মুক্তচিন্তার দলে জ্ঞানী গুনীর সংখ্যায় বেশী । এবং এরা জগতের আধুনিক শিক্ষা ও সভ্যতার সাথে পরিচিত । অন্যদিকে এদেশে ধর্মচিন্তার যে গোষ্ঠী তারা এতিম শ্রেনীর এবং রাষ্ট্রের সকল প্রকার সুবিধা বঞ্চিত । তারা যে ধর্মশিক্ষা পায় আর আসলে ধর্ম যা তার পাথর্ক্য তারা উপলব্ধি করতে পারে না । এই ব্যর্থতা যতটা না ওদের তারচেয়ে অনেক বেশী রাষ্ট্রের ও সমাজের ।  একটা শিক্ষাব্যবস্হাকে রাষ্ট্র ও সমাজ এতিমের শিক্ষা বানিয়ে রাখবে আর তাদের কাছ থেকে যুগপোযোগী আধুনিক আচরন আশা করবে  এটা কতটা যৌক্তিক ?

 

এসব অন্ধ ধর্মগোষ্ঠী সহিংসতার দ্বারা যে ধর্মচর্চার রূপ দেখায় তাতে সত্যিকারের ধর্মভীরুরাও আতংকিত হয়ে পড়ে । পৃথিবীর সকল ধর্মই শান্তির কথা বলে । তাহলে এই অশান্তি চর্চা কেন ?

 

আমার সবচেয়ে আক্ষেপ মুক্তচিন্তাবিদদের নিয়ে । এরা আধুনিক শিক্ষা লাভের পরও কোন মুক্তচর্চার কচকচানিতে মানুষের মূল্যবোধকে আঘাত করতে  যায় । নিজেকে প্রতিষ্ঠার এত এত পথ থাকতেও কেন ধর্মকে আশ্রয় করে এদের প্রতিষ্ঠা পেতে হবে ? ধর্মীয় কুসংস্কার আর ধর্মকে আঘাত করার মধ্যে পার্থক্যে এদের চেয়ে বেশী কারো জানার কথা নয় । তারপরও আমরা দেখি শুধুমাএ প্রতিষ্ঠার লোভে কেউ কেউ অযৌক্তিক যুক্তি দাঁড় করায় । আমরাও এদের মহাজ্ঞানী ভেবে হাততালি দেই । এবং  অযৌক্তিক যুক্তিবাদীকে সমাজে  পরিচিতি করিয়ে দেই সাহিত্যিক হিসেবে । অথচ আইন পেশায় তার সম্ভাবনা ছিল অপার । আর সব যুক্তির যৌক্তিক সমাধান না খুঁজে অযৌক্তিকভাবে ধর্মকে আঘাত করার স্বাধীনতাকে যারা মুক্তচর্চা বলে তাদের সাথে প্রকৃত মুক্তচর্চার কোন সর্ম্পক আছে বলে মনে হয় না । পৃথিবীর সকল যুক্তির উওর আপনার জানা থাকবে এমন পরম জ্ঞানী যদি আপনি হয়ে থাকেন সে একান্তই আপনার ব্যাপার । আপনার স্রষ্ট্রার কাছে আপনার দায়বদ্ধতা । এই নিয়ে  আমাদের আপওি নেই । কিন্তু আপনার বিশ্বাস অবিশ্বাস দিয়ে বৃহৎ সমাজকে দেখতে যাবেন না । মানুষের মূল্যবোধে আঘাত করবেন না । সে অধিকার আপনার নেই ।

 

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top