মেঘের কোলে রোদ-৪
রোমিলা অবাক চোখে তাকিয়ে বলল, তারমানে তুই বলছিস স্বপ্নটপ্ন সব মিছে কথা?
অতসী হেসে বলল, হ্যাঁ, ওটা স্বপ্ন নয়, বানানো গল্প।
—-তবে যে তোর বাবা বললেন, তুই আমাকে স্বপ্নে দেখেছিস,তাই তিনি মাংস আনতে যাচ্ছেন?
—উনি আমার কাছে যেমন শুনেছেন, তেমন বলেছেন।
— তার মানে?
— এই তো শুরু হল তোর গোয়েন্দাগিরি,স্বভাব দেখছি মলেও যাবে না। শোন তবে আসল গল্প,
আজ আমার বাবার জন্মদিন। আমি দাদুর ডাইরী পড়ে জেনেছি। বাবা হচ্ছেন এই এলাকার
ডাকসাইটে কৃপণ। তিনি ছেলেমেয়ের জন্মদিনে এক পয়সা খরচ করেন না। নিজের জন্মদিনের কথা
তাই কাউকে ভুলেও বলেন না। এদিকে আমার মাথায় ভূত চাপল, বাবার জন্মদিনে আনন্দ করব।
ভাইকে দিয়ে গাছ থেকে নারকেল পাড়ালাম। নিজে গরুর দুধ দুইলাম।মাকে পায়েস তৈরী করতে
দিয়ে চা নিয়ে চললাম বাবার বৈঠকখানায়। সেখানে তাকে বললাম,বন্ধুকে স্বপ্ন দেখেছি, সে আসছে।
বাবা বিশ্বাস করলেন। থলে নিয়ে বাজারে ছুটলেন।
— সে না হয় বুঝলাম, কিন্তু আমি হঠাৎ হাজির হলাম কেন। আমার তো দার্জিলিং অব্দি রিজার্ভেশন
ছিল, আমি কি তোর বানানো গল্পের টানেই নেমে পড়লাম?
— হবে হয়তো। টেলিপ্যাথী বলে একটা কথা বইয়ে পড়ছি,শয়তানকা নাম লিয়া আর শয়তান হাজির।
দুই বন্ধু হাসতে শুরু করল। হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল বাগানে। তাদের হাসির শব্দে বাগানের গাছগুলি
পাতা নড়িয়ে দুলে উঠল। ডানার ঝাপটা মেরে পাখি উড়ল। ফুলের হাসি প্রতিভাত হল সুর্যের আলোক রেখায়।
তপতী একসময় অবাক হয়ে দেখল, ঘাসের উপর শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে রোমিলা। অদ্ভুত মেয়ে। খেয়ালী।
ঘুমিয়ে আছে যেন ছোট্ট শিশুটি।
#