অনেক কথা১১
শেয়ার ও উত্থানপতন–
* শেয়ার কেলেঙ্কারির বিষয়টা ভাবার মতো, ‘তাঁরা চোর হলেও তাঁদেরকে চোর বলা যাবে না, কারণ তাঁরা সম্মানি ব্যক্তি’ এখানে অসংখ্য প্রশ্ন আসে, চোরকে চোর বলা যাবে না, এ কেমন যুক্তি? যে সম্মানের অধিকারি হয় সে চুরি করে কীভাবে? একজন সম্মানি ব্যক্তি অসম্মানি কাজে লিপ্ত হয় কীকরে? চোর ত চোরই, চোরের আবার সম্মান কী? যেখানে কোটি টাকার বিনিময়ে দুই টাকার সম্মান কেনা যায় না, সেখানে হাজার কোটি টাকার কারসাজি–তবে এ কেমন সম্মানি?
সেদিন ভারতের এ ঘটনাটা যে দেখেছে হৃদয়ের ক্ষত তার কোনোদিন ভরবে না। পৃথিবীকে অবাক করে দেওয়ার মতো একটি ঘটনা! সামান্য একটা স্বর্ণের চেন চুরির দায়ে প্রশাসনের ভদ্রজনেরা কী অভদ্র কাণ্ডই-না করেছে, পাষাণেরও বুক ফেটে কান্না হয়। বেচারা চোর কী অমানুষিক নির্যাতনই-না সহ্য করেছে, দেখলে দানবের চোখেও পানি আসে! লাথিঘুষা বেদমাঘাতের পর পায়ে তার ভেড়ি লাগিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় মোটরবাইকের পিছে বেঁধে টেনে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুলিশফাঁড়িতে! সত্যি, বড়ই মর্মন্তুদ এঘটনা। এমন বর্বরতা বোধহয় পৃথিবীতে বিরল। সেও চোর, এরাও চোর; চোরের আবার সম্মানি! এ বলে যে চোরকে প্রশ্রয় দেয় এবং আশ্রয় তৈরি করে সে-ই বড় চোর। চোর যত বড় সম্মানের অধিকারীই হোক-না কেন, চোরকে কেউ সম্মান করবে না।
* যার যত উত্থান তার তত পতন। উত্থানের যেমন একটা সীমারেখা আছে, পতনেরও তদ্রূপ একটা সীমারেখা আছেই; সবকিছুরই স্বতন্ত্র একটা মাপকাঠি থাকে।
* আমি পাখা পেয়ে উড়তে পারি সুখে কিন্তু পাখা ভেঙে পড়ার আঘাত সইতে পারি না।
* মনে রাখতে হবে, আকাশে উড়ার আনন্দ যত সুখের মাটিতে পড়ার আঘাত আরও বেশি দুঃখের।
* চন্দ্রকরের স্বাদ যে পেয়েছে একবার সূর্যকিরণ তার জন্যে জ্বালাময় হবেই।
* যেকোনো কিছুর একটা সীমারেখা থাকা ভাল। অতিরিক্ত কোনো কিছু যেমন ভাল নয়, অতি লাভের সবকিছু তেমন ক্ষতিকর।
* অসীমকে ধরার পিছে ছুটতে গেলে সসীম হারানোর সম্ভাবনা বেশি।
* আজকের পৃথিবীটা এমন একস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখান থেকে শুধু ভাবা যায়–দেখা যায় না।
* অতি বাড়ন্তগতি যেমন রোধ করা জরুরি, অতি হ্রাসের গতিধারাও তেমন রোধ করা প্রয়োজন। সব জিনিসের একটা সীমাবদ্ধতা এবং মাপকাঠি আবশ্যক।
* বর্তমানে জায়গাজমির মূল্য যেহারে বাড়ছে, আগামীতে জমি নামের কোনো ভূমি মানুষের নাগালে থাকবে না। কোকাফের আবেহায়াত যেমন দোষ্প্রাপ্য, এ পৃথিবীর মাটিও একদিন কোহিনূরে পরিণত হবে।
* উড়তে উড়তে যখন আর উড়ার সামর্থ্য থাকে না তখন তার মাটির আসন ছাড়া অন্যকোনো আশ্রয় থাকে না।
* তারল্যভয়াবহতা যেখানে, সেখানে হয়তো ভেসে যায়–নাহয়তো শুকে যায়! এই সঙ্কটোত্তরণে রাষ্ট্রপ্রধান এবং সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারিদের সহায়তা আবশ্যক।
* তারল্যসঙ্কট হোকবা আর্থিকপরিমণ্ডলে, হোকবা রাজনৈতিকপরিমণ্ডলে, হোকবা সামাজিকপরিমণ্ডলে যেখানেই হোক-না কেন, সেখানেই প্রধানদের প্রধান দায়িত্ব পালনে অনড় থাকতে হয়। শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়, তাঁদেরকে হাতেকলমে–সশরীরে মাঠপর্যায়ে অবতরণ করতে হয়।
* বিরাট বিদ্রোহ যেখানে, সেখানে বিরাট পর্বতও নড়ে; বিদ্রোহীরা সকল কাঠিন্যকে তারল্য করতে পারে। তাই বিদ্রোহের আগুন জ্বলার পূর্বে সকল সমস্যার সমাধান করা অতি জরুরি। কারণ অসংখ্য বারুদের জন্যে একটি দিয়াশলাই যথেষ্ট।
চলবে…