ছিলাম মানুষ হইলাম ভূত (একজন আদম সন্তানের ভূত হওয়ার পিছনের ঘটনা)
ছিলাম মানুষ হইলাম ভূত (একজন আদম সন্তানের ভূত হওয়ার পিছনের ঘটনা)
শিশুতোষ রসাল ভূত কাহিনী
এভাবে কতক্ষণ আর ছাদে ঝুলে থাকতে হবে কে জানে সে এখন আসিফ সাহেব এর বেড রুম এ যে সিলিং ফ্যান টা আছে সেখানে ঝুলে আছে l
সদ্য ত্রিপিটক এ পাড়াতে ভূত হয়ে এসেছে l
আগের সপ্তাহে চাদা র ভাগ নিয়ে কথাকাটির এক পর্যায়ে তার বিশ্বাসঘাতক বন্ধু রা তাকে মেরে শেওড়া গাছের নিচে ফেলে গেছে l
গাছের উপরে অবস্থান করছিল এই দুই ব্লগ এর ভূতদের দলপতি ঘুটঘুট আর তার সহযোগী মিটমিট জানা যায় তাদের নামকরণ তারা নিজেরা করেছেন ঘুটঘুট আর মিটমিট
তাদের ঘুটঘুটে চেহারা র কারণে নাকি এই নামকরণ তার l
তার দীর্ঘ ভূত জীবনের ইতিহাস খুব উজ্জল এ পর্যন্ত প্রায় একহাজার মেয়ে কে ঘুটঘুট হাসি দেখিয়ে দাত কপাটি লাগিয়ে দিয়েছেন অন্ততপক্ষে পনর হাজার ছেলে মেয়েকে অজ্ঞান করেছে ভেংচি কেটে l
তবে তারা কোনো সন্ত্রাস এ বা কাওকে জখম করা ভূত সমাজে নীতিবিরুদ্ব তারা সুধু খেলতে ভালবাসে বা ভয় দেখাতে পছন্দ করে l
সেই তার এই গৌরবজ্জল ইতিহাসে আজ এ কোন অবমাননা
ছোট দুই বিচ্ছু পিচ্চি র কাছে এই অসন্মান তার ভেংচির বদলে তার মুখে পিচকারী দিয়ে কালি ছিটিয়ে দিল তারপর ভেংচি কেটে বাই ভূত আঙ্কেল বলে হাসতে হাসতে দৌড় দিল
দাতে কিরমির করে প্রতিজ্ঞা করলো এই অপমানের শোধ নিবে l
সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে আজ ত্রিপিটক এর এখানে আসা ঘুটঘুট এর ঈছে তে l
এত সুন্দর বাচছা কে ভয় দেখাবে কি তার ইচ্ছে করছে বুকে জড়িয়ে আদর করতে
তার নিজের ছোট ভাই এর কথা মনে পড়তে লাগলো l
আসিফ কবিতা পড়ছে জোরে জোরে
আসিফ নজরুল ঢাকা university এর অধ্যাপক l
শোনা গেল তারে লাশ কাটা ঘরে নিয়ে
তার মরিবার হইলো স্বাদ
—০——–০———-০
কাদম্বিনী মরিয়া প্রমান করিল যে সে মরে নাই
সে জোরে বলতে লাগলো রবি বাবু আপনাকে অনেক ভালবাসি শ্রদ্বা করি কিন্তু তারপর ও বলি আপনার উচিত ছিল এভাবে বলা
কাদম্বিনী বাচিয়া থাকিয়া প্রমান করিল সে মরে নাই
সে বাচিয়া ছিল l
হটাত এক ঝফাং শব্দ করে ত্রিপিটক খাটের উপর পড়ল
আসিফ আতকে উঠে বিছানায় বসলো l
এই তুই কে ?তোর্ কাপড় চোপড় কোথায় ? তোর্ চেহারা এত বিছরি কেন
স্যার আমি ভূত আমার নাম ত্রিপিটক
তুই ভূত অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আসিফ ত্রিপিটক এর দিকে
———————————————————————————————————————-
আসিফ সাহেব ত্রিপিটক আর দুই ছেলে একসঙ্গে খেতে বসেছে
আসিফ এর দুই ছেলে আনোয়ার নজরুল বড় বয়স আট বছর
সে পড়ে গভট লাবরেটোরি স্কুল এ তৃতীয় শ্রেণীতে আর ছোটো মনোয়ার স্কলাস্টিকায় লেভেল ওয়ান
পড়াশোনায় তাদের যেমন দুষ্টামিতে তাদের ধারকাছে কেউ ঘেষতে পারেনা
স্কুল পাড়া সবজায়গা থেকে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে
বড় আনোয়ার যা করে ছোট টি তা অনুসরণ করে
প্রতিদিন বিকাল এ ছাদে চলে আসে মাকে লুকিয়ে। বাবার দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে আশেপাশে র সব বাসার ভিতরে দেখতে থাকে তার থেকে দুই তিন টা মাথা বাছাই করে যেসব মাথায় চুল নাই তাদের টাক বরাবর গুলতি নিক্ষেপ
হয়তবা কোন ভদ্র লোক আয়েশ করে জানালার পর্দা সম্পূর্ণ সরিয়ে প্রাকৃতিক বাতাস সেবন করিতে খবরের কাগজ পড়িতেছিলেন তখন ই দুষ্ট আনোয়ার এর গুলতি নিক্ষেপ ভদলোকের নধর টাক লক্ষ্য করে
ভদ্রলোক মাগো বলে চেয়ার উল্টে মাটিতে পড়ে যায় উঠে বাজখাই গলায় চিত্কার করতে করতে বলতে থাকে সামনে যদি তদের পাই কাছে আল্লাহ র কসম তোগরে কাচা গিল্লা খাইয়া লামু
বকতে বকতে অদৃশ্য গুলতি নিক্ষেপ কারীকে খুজতে থাকে
দুই বিচ্ছু ততক্ষণে হওয়া
এইভাবে সেইদিন ঘুটঘুট আর মিটমিট এর সাথে তাদের সংঘর্ষের অবতারণা
পরশু আনোয়ার আর মনোয়ার স্কুল থেকে ফেরার পথে তালুকদার আঙ্কেল এর সাথে দেখা
এই আঙ্কেল টা একটা পচা বাজে আঙ্কেল এক রিক্সা ওয়ালা কে এত জোরে থাপ্পর মারলো ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হওয়াতে
ছোট মনোয়ার বলল দেখছ ভাইয়া আমাদের বাবা কত ভালো ঐদিন রিক্সা ওয়ালার কষ্ট দেখে একশত টাকা দিল আর এই বাজে আঙ্কেল ?
দাড়া মনোয়ার চল এখনি অপারেশন ওম্বোর ফাইভ সঙ্গে সঙ্গে ছাদে এসে অব্যর্থ নিশানায় তালুকদার আঙ্কেল এর মাথা বরাবর গুলতি নিক্ষেপ
ঠিক ঐসময়ে আনোয়ার দের ছাদে যে আম গাছ টা ছিল তার ডালে ঘুটঘুট আর মিটমিট স্বচক্ষে সেই ঘটনা অবলোকন করিতেছিল
আনন্দে ঘুটঘুট আর মিটমিট গড়াগড়ি করিয়া হাসিতেছিল
তারা বলিতেছিল
সাবাস বীরের বাচ্চা সাবাস মানুষের বাচ্চা
ভূত দলপতি ঘুটঘুট তোমাদের অভিনন্দন জানাইতেছে
কিন্তু আনোয়ার মনোয়ার ভয় পেয়ে যায় ঘুটঘুতের এর চেহারা দেখে ভয় পেয়ে ভূত দের নিশানা করলো তাদের ষষ্ঠ গুলতি আর পিচকারী দিয়ে কালী ছিটিয়ে দিল মনোয়ার
তারপর ভুত্গুলার চোখ ছানাবড়া করে দিয়ে নিচে নেমে গেল দূর দার করে
অসহ্য যন্ত্রনায় দাত কিরমির করতে করতে ঘুটঘুট মাটিতে পড়ে গেল
সে বলতে লাগলো এর প্রতিশোধ আমি নিব রে বিছুর বাচ্ছা
সেই থেকে টানা তিনদিন ধরে ঘুটঘুট আর মিটমিট আনোয়ার দের বাসার রেলিং ধরে ঝুলে ছিল মওকার অপেক্ষায়
সেই সুযোগ আর আসিছিলনা কিন্তু সারাক্ষণ শোনা যাচ্ছিল বিছুগুলির হাসি আর দৌড়া দৌড়ি র আওয়াজ
কথা হইতেছিল ঘুটঘুট আর মিটমিট এর মাধ্যে ঠিক এইরূপ
ঘুটঘুট : এই মিটমিট যন্ত্রণা হইলো তো ভারী
মশা তো ফালা ফালা করে ফেলতেছে রে তোরে ও কি কামড়াইছে নাকিরে ?
মিটমিট:::জি ভাই এটা তো বুজতেছিনা আমাদের তো শরীর নাই আমরা সুধু একটা কায়া মশা কি খাইতেছে ভাইজান
ঘুটঘুট :আমাদের অসহায় মানুষ গুলির কি আছে বল ? আমাদের রাজনীতি তো মানুষ গুলোর রক্ত মাংশ খাইয়া শেষ কইরা লাইছে রে ?মশা খাইয়া আর মজা পাচ্ছেনা রে তাই আমাদের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করে ভিক্ষা চাচ্ছে তার ও বাচতে হবে রে
মিটমিট : চলেন ভাইজান লাইট নিভানো দেখতেছি এখন সময় ভয় দেখানোর
এরপরে গাছে চলে যাব ভাইজান
খুব ঘুম আইতাছে ভাইজান
ঘুটঘুট : শোন সুধু কম্বল ফালায় দিবি আর পায়ে একটু সুড়সুড়ি দিবি বেশি কিছু করবিনা কিন্তু
দুইজনে পা টিপে টিপে আনোয়ার দের বিছানার কাছে এসে বসলো
কম্বল টেনে সরাতে যাবে ছোট মনোয়ার শোয়া থেকে উঠে বসে পিট্ পিটে চোখে তাকিয়ে রইলো
ভয় দেখাবে কি তারা ভয় পেয়ে চমকে মুখ লুকানোর চেষ্টা করলো
আনোয়ার ও উঠে বসলো শোয়া থেকে
আচ্ছা আঙ্কেল তোমার কোন শয়তানী কাজের জন্য ভূত হয়েছ ? জিজ্ঞাসা করে আনোয়ার
আমরা কোনো শয়তানি করে ভূত হইনাইরে বাবা মানুষ ই শয়তানি করে মাইরা আমাগোরে ভূত বানাইছেরে
তাই আনোয়ার চিন্তায় ডুবে গেল এই কথা ভেবে ?
কে বেশি খারাপ মানুষ না ভূত ?
(পরবর্তিতে)