আবার আমি
আমাকে দৃশ্যে পাবে না আর–
আমি চলে যাব স্বর্গপ্রিয়ার সাথে
দিনশেষে–গোধূলি-আঁধারে।
নিশিথে ফুটে যেকুসুম তারই ঘ্রাণে হয়তো
কোনদিন অনুমান করতে পার সত্যিকারের ভালবাসলে
হয়তো দেখবে আমায় ফুটফুটে জোছনার আবছায়াতে
ঐ যে দূরে–ভয়াল কালো জলের বিরাট বিলে
হয়তো রক্তকমল হয়ে ফুটব আমি আবার
আমার প্রেমে মত্ত জলপরিরা হুমড়ি খাবে রাতদিন
হৃদয়লেনদেনে আমিও কিবা পাগল হব তাদের প্রেমে।
আমাকে দেখতে পাবে না আর–
আমি অদৃশ্যবালিকার নিগূঢ়প্রেমে
মগ্ন হয়ে কাটাব পুনর্জীবন স্বর্গের বাগানে।
সেখানে–দূরে–বহুদূরে–হয়তো আরও দূরে
চিরকুমার-কুমারীদের পুরে স্থায়ী বসবাস
আমাকে চিনতে পারবে না কখন–পারবে না আর
আবার আমি তোমার কথা মনে করে
দ্রোণ হয়ে ফুটতে পারি কোমলকান্তের ঘাসে
তোমার চলার পথে কাঁটা হব না তবে
কারও ভালবাসার রক্ষক হয়ে জড়াব আঁচলে।
আমাকে দেখতে পাবে না তুমি–
আমি তোমার হাসির ঝলকে ঝরে পড়ে
হয়তো কান্নার অতল মহাতলে ডুবে যাব।
আবার হয়তো তোমার নাম ধরে
সৃষ্টির সমস্ত রঙে মিশে গিয়ে
রাঙাতে পারি বিষাদের রংহীন সংসার
আমার কথা নাইবা মনে করলে
আমি রয়ে যাব তোমার স্মৃতির কুলায়
ভুলে যাব ওসব বেদনার নীলদর্শন
দেখব বন্দনার প্রণয়হরিৎ কেমন রূপ।
আমাকে কোথাও পাবে না আর–
তোমার আরাধ্যভুবন রচিত হবে যখন
কানিজের পুত্র মালিজের সাথে
অথবা ছেনোকার দৌহিত্র রেবিলের সঙ্গে
ছুটে যাও নির্ভয়ে কামনার বাড়িতে–
ভেনিস শহর যবদ্বীপ জাফলং হয়ে
অথবা হিমালয় থেকে হিমচাঁদের প্রাসাদে
সুদূর আকাশ থেকে অই আকাশে
তোমার মধুচন্দ্রিমার বিস্ময় নগরে
ভয় করো না ভূত হয়ে আসব না কবে।
আমাকে পাবে না কখনো–
বৈরত বেজিং বার্লিন রোম
প্যারিস লন্ডন টোকিও নিউয়র্ক–
এই বেতবনে বাঁশঝাড়ে হিজলতলায়
ডাহুক হয়ে জন্ম নিলে ধন্য সেজনমে
বারবার আমি জন্মিতে চাই বাংলার ঘরে–
ঘুঘু-শালিক-দোয়েলবেশে জন্ম হলে দুঃখ নেই
আবার আসতে চাই মহেন্দ্ররূপে তোমার বাড়ির পাশে
কিবা আসি আমি আবার খঞ্জনা হয়ে তোমার আঙিনায়
ডেউয়াগাছটিতে বসে চেয়ে থাকব তোমায় অনিমেষে।
১২ শ্রাবণ, ১৪১১–
মানামা, আমিরাত।