Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

দুইজন অমরাবতীর গল্প (বিজ্ঞান কল্পকাহিনী)

: | : ০৬/১০/২০১৩

পূর্ব প্রকাশিতের পর

ইরা নীরা র খোজে এসে দেখে নীরা খুব বিষন্ন ভাবে জানালা দিয়ে দুরের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। নীরার ছেলে ত্রিনিদ খালামনি দেখে তা করে খল করে একটা হাসির ভঙ্গি করে সামনে র দিকে ছুটে যেতে লাগলো। স্পষ্ট ই বুঝা যাচ্ছে সে খালামনির সাথে দৌড় বা গোল্লাছুটের প্রতিযোগিতা করতে যাচ্ছে। ইরা যতই তাকে পাকড়াও করার চেষ্টা করছে সে প্রানপনে হামা দিয়ে ছোট একটা দাত বের করে ভেংচির হাসির ভঙ্গিতে সারা ঘরে হামা দিয়ে যাচ্ছে। সদ্য তার একটা দাত গজিয়েছে। তাই সে নিজেকে খুব মূল্যবান মনে করছে। যে তাকে দেখতে আসছে সে তার দিকে দাত বের করে দেখিয়ে দিচ্ছে। সে খুব স্বাধীনতায় বিশ্বাসী হয়ে গেছে এই ক্ষুদ্র বয়সে। কেউ তাকে কোলে করে কোথায় নিতে চাইলে প্রানপনে চিত্কার দিয়ে ছোট শরীর নাড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়। সবার সঙ্গে সে হামাগুড়ি দিয়ে রওয়ানা করতে চায়। সে এখনো হাটতে শিখেনি। কিন্তু সবাইকে দেখে প্রানপনে সে ও চেষ্টা করে হাটার। যখন সে সফলকাম হয়না হাটতে তখন গগন বিদারী চিত্কার দেয়।

ধরছি আমার বাবাটাকে ইরা শক্ত করে পাকড়াও করে। সে আচড়ে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করে খালামনির কোল থেকে। খালামনি ছাড়ার পাত্র না শক্ত করে পেটে বুকে নাকে নাক ঘষে আদর করে দিল। ত্রিনিদ খল খল করে হাসতে লাগলো এবং হাসতে হাসতে খালামনির চুল মুঠি করে ধরল সে তার প্রথম প্রমান দিতে চেষ্টা করলো শারীরিক শক্তিতে পুরুষের কাছে মেয়েরা অসহায়।

ইরা অসহায় এর একবার বোন্ এর দিকে তাকায়। নীরাকে দেখে মনে হচ্ছে সে অন্যমনস্কতার অতলে অবস্থান করছে। এইযে ইরা এসেছে তার ছেলের সাথে খেলা করছে কোনো কিছু যেন তার মন কে স্পর্শ করছেনা। এমনকি সে মনে হয় টের ও পায়নি ইরা বেশ কিছুক্ষণ হলো তার ছেলের সাথে সময় কাটাচ্ছে। এত সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চাটাকে ফেলে নীরা কিভাবে অন্যমনস্ক হয়ে আছে ইরা ভেবে পায়না।

ইরা এসে নীরার পিছনে এসে দাড়ায় সহানুভূতিতে বোনের কাধে হাত রাখে

কি হয়েছে আমার বোন্ ?শরীর ঠিক আছেত ?
তোমার দুষ্ট বাচ্চাকে সামলানো মুশকিল।

নীরা এমনভাবে মাথা নাড়ল বুঝা যাচ্ছে না আসলে সে কি ইরার কোনো কথা আদৌ শুনছে।

নীরা আমার মনে হয় তুমি একটু ঘর থেকে বের হও হাটাহাটি কর তোমার ভালো লাগবে। ত্রিনিদাদ এর যে ক্লোন টি আছে তার সাথে কাজ কর ভালো লাগবে।

না ভালো লাগবেনা সে কিছুতে আমার। সে ত্রিনিদাদ না সে আমাকে গত নয় মাসে একবার ও দেখতে আসেনি তার শিশু সন্তানকে দেখতে আসেনি। আমি তাকে পছন্দ করিনা একইসঙ্গে নীরা রাগ আর দুঃখ নিয়ে কথা বলল। এথেনা কেন আমার ত্রিনিদাদ এর সুন্দর মুখ এই অনুভূতিহীন ক্লোন টার মধ্যে বসালো এখন চাইলে আমি ত্রিনিদাদ কে ভুলে স্বাভাবিক হতে পারছিনা।

ভুলার দরকার নাই বোন্ ইরা কাতর গলায় বলল। এই কষ্ট কে শক্তিতে পরিনত কর বোন্।পুরুষের প্রেম ভালবাসা কি জীবনের সব ?বৃহত্তর ভালবাসায় নিজেকে নিয়োজিত কর বোন্। পৃথিবী তোমার দিকে তাকিয়ে আছে এই শিশু টি তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। সে বোনকে বললনা কিছুটা একই কষ্টের মধ্যে দিয়ে সেও যাচ্ছে।

ইরা ত্রিনিদ কে নিয়ে একটু ঘুরতে গেল আর নীরা অনেকদিন পরে তার কাজের এপ্রনটি আজকে পরল আর ভাবলো তাইত আমি আমি অনেক স্বার্থপর হয়ে গেছি আমার উপরে যত দায়িত্ব সব ভুলে গেছে বাচ্চাকে পর্যন্ত খেয়াল করে দেখছিনা।

নীরা আসতে আসতে এসে দাড়ায় সেই ল্যাব এ যেখানে ত্রিনিদাদ কাজ করছে। ত্রিনিদাদ ক্লোন টি তাকে দেখে হেসে উঠে দাড়ায়

গুড মর্নিং মিস বিউটিফুল নীরা আপনি কেমন আছেন?সকৌতুকে জিজ্ঞাসা করে ত্রিনিদাদ এর ক্লোন টি । বলে আবার পাশের এক সহকারী নারী ক্লোন র সাথে আলাপ আলোচনা আর খুনসুটিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

আহ কে বলবে সে ত্রিনিদাদ না ,সব কিছু ই ত্রিনিদাদ এর সুধু নীরার প্রতি আগের সেই আবেগিত মনটা নাই।

নীরা আবার বিষন্ন বোধ করলো ত্রিনিদাদ কে দেখে। সে কি পারবে প্রতি মুহুর্তে ত্রিনিদাদ অবহেলা বরদাস্ত করে কাজে মনোযোগী হতে এবং এই মহাবিশ্বকে কিছু আবিস্কার উপহার দিতে।

(পরবর্তিতে)

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top