শিউলি ফুলের সেই দিনগুলি ।
গতকাল রাত আটটার দিকে বাড়ি ফিরছিলাম। বাইরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো । তবে অন্ধকারে ডুবে ছিল চাঁদ । আমি একমনে হাঁটছিলাম । উদ্দেশ্য তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা। এর মধ্যই আচমকা নাকে এসে লাগলো এক ফুলের মিষ্টি গন্ধ। মনে করার চেষ্টা করলাম কি ফুলের গন্ধ এটা। খুব পরিচিত যে এই গন্ধ! কতকাল ধরে আমার দেহের সাথে লেপটে আছে! বুঝলাম এটা শিউলি ফুলের গন্ধ।এখন শরত। এ সময়ই শিউলি ফুল ফোঁটা শুরু করে।
যাকে আমরা গ্রামে শেফালী ফুলও বলে ডাকি। ছোট ছোট সাদা আর বোঁটাটা হালকা লাল। এক গাছে অসংখ্য ফুল ফোটে । হঠাৎ আমি যেন ছোটবেলায় হারিয়ে গেলাম । আমার বাড়ির পাশে অনেক পুরাতন একটা শিউলি গাছ ছিল। একটু বাঁকা হওয়ায় সহজেই গাছে চড়া যেতো। হিন্দু ধর্মের হওয়ায় আমার দায়িত্ব ছিল পূজার জন্য ফুল কুড়ানো । আমি খুব ভোরবেলা উঠতাম । উঠেই চলে যেতাম ফুল কুড়াতে । গাছে চড়তাম । পরে জোরে গাছ নাড়াতাম আর ফুলগুলো মাটিতে পরত। পরে নিচে নেমে সেগুলো ঝুড়িতে রাখতাম। কয়েক বছর হয়ে গেলো গাছটা কেটে ফেলা হয়েছে। জায়গার বড় অভাব! আমিও অনেক বড় হয়েছি । সেই ফুল কুড়ানোর দায়িত্ব আর নেই। আর শিউলি ফুলেরও কদর কম। চাষ করে লাভ করা যায় না তো! নামী দামি ফুলের কাছে এ যে বড় নগণ্য! এ যে আমারি মতন। ফলে আমিও আর ফুল কুড়াতে যাই না। তাই গন্ধটা বুঝতে একটু সময় লাগলো। আমার সৃতিতে আজও গাছটির ছবি সেরকমই আছে। চোখ বুজলেই দেখি আমি গাছে উঠে ফুল ছোবার চেষ্টা করছি । বাড়ি ফিরছি মুঠো মুঠো শিউলি ফুল নিয়ে ।