“বেঁচে থাকিতে চাই”
বেঁচে থাকিতে চাই-
হাজার বছর ধরে,
দেহখানিতে নহে গো-
তোমাদের অন্তরে।
বেঁচে থাকিতে চাই-
জাত-বেজাতের গন্ডি পেরিয়ে,
হাঁটিতে চাই অনন্তকাল ধরে
সীমানা প্রাচীর মাড়িয়ে।
দেহখানি আমার রেখে দিও গো
আঁধার কুঠিরের অন্দরে,
অবাধ অধিকার দিও গো মোরে
চিরসবুজ স্মৃতির প্রান্তরে।
আমার সাদাকালো ছবি বেঁধে রেখো না
কাহারো ঘৃণার ফ্রেমে,
তবে অবহেলা করে রাখিতে পারো
যেখানে অকেজ স্মৃতি জমে।
কৃতজ্ঞতার স্থান পাবো তো জানি
করিনি তো এমন কোনো কর্ম।
তবে হলফ করে বলিতে পারি
কাহারো ক্ষতি স্বজ্ঞানে নহে ছিল মোর ধর্ম।
অবসর কালে যদি পারো
চোখ বুলিও মোর ছাইপাঁশ কবিতার চরণে।
তবেই আমি বেঁচে থাকিবো
হাঁটিবো তোমাদের স্মৃতি সরণে।
অলিতেগলিতে অন্তত মোরে যেও নাকো তো ভুলে
রাজপথের প্রতিটি মাইলফলকে নাহি বা স্মরিলে মোরে।
যদি কাহারো মনের ঝুলবারান্দার টবের ফুল দোলে
বিকাল বেলার নরম আলোতে আমার কবিতা পড়ে।
এমনও তো হতে পারে ভুলে যাবে মোরে
মোর রক্তের আপন ভ্রূণ।
অচেনা দেশের অচেনা আত্মীয়
তবুও স্মরিবে মোরে যদিও ভিন্ন জাত-খুন।
অতোটা দূরে নাই বা উড়াইলাম
আশার স্বতন্ত্র ঝাণ্ডা।
শুধু স্মৃতির পাটাতনে একটুখানি ঠাই দিতে
হইও না গো কুণ্ঠা।
কেবলি মোরে দিও ঠাঁই
তোমাদের স্মৃতির বটবৃক্ষতলে।
দিও না গো তাড়িয়ে মোরে
অবহেলিত যাযাবর বলে।