নিঃস্ব হয়ে
পৃথিবীরে নিঃস্ব করতে পারে যত প্রেম তত প্রেম তোমার মনের মাঝে;
রাতের শবনম শিউলীর বুকে ঝরে বাঁধে জ্যোৎস্নার প্রেম, উঠে বেজে
বাসন্তী নিশিতে ঝিঁঝিঁর গুঞ্জন, ভোরের কিরণ ফোটে কুয়াশায় সেজে।
আমিতো রাত হয়েছি, শরতের অমাবশ্যা; নিঃস্ব হয়ে থেকেছি নক্ষত্রে চেয়ে;
আঁধারে একাকিত্বের বাঁধনে বেঁধেছে আমারে জ্যোৎস্নার প্রেম, রুপ হয়ে
বৈশাখীর তুফানে পাগল করেছে মরুবালি, নীলের পাড়ে উঠে গান গেয়ে।
বহু শতাব্দী ধরে পাগল করেছে মানুষকে স্বর্গের তৃষা, সে সব ভুলেছি;
তোমার বুকের মাঝে সংগোপনে বেঁধেছে যে স্বপ্ন, তাই হৃদয়ে বুনেছি;
সাগর জলের আলিঙ্গন মুছে গেলেও যেমন ফেরে চিল জলে, আমি ফিরেছি।
নদীতে ফিরেছে আবার সাগরের জল, মাঠেতে ধান ক্ষেতে এসেছে জোয়াড়,
অচেনা ডোবায় ফোটেছে রঙিন পদ্ম, যুগে বিলীন সমুদ্রে জেগেছে চর,
বহুদিন খাঁচাবন্দী বাবুই অতিকায় তালগাছে বেঁধেছে নতুন ঘর।
আমি ভুলেছি আমারে যেমন নবদ্বীপের বালি ভুলেছে সে ছিল কোন পাড়ে,
নিঃস্ব হয়েছে জ্যোৎস্না রাত দেখে পূর্ণিমা তার দিকে চেয়ে থাকতে দূরে;
জীবন প্রদীপ নিয়ে অচেতন আকাশ চেতনা সৃজনে দূরে নিয়ত ঘোরে।
আমিও সৃজন করেছি আমারে যেমন একমাত্র কবিতাই টিকাবে তারে,
আলো হয়ে দেখা দেবে আঁধারের যৌবন, নিঃস্ব করবে প্রভাতে পৃথিবীরে;
শালিকের ঝাঁক পাঁকা ধানের খেতে ভুলে যাবে খাবারের কথা শীষের সুরে।
মাটির প্রদীপ জ্বলেছে ঘরকোণে বাইজীর সুরে, বারবার কেঁপেছে লাজে;
নিঃস্ব করেছে বাতাস মদিরার ঘ্রান যখন পঞ্চমীর চাঁদে তমা-চোখ সাজে;
লক্ষীপেঁচা আড়চোখে তাতে বহুদিন প্রিয়ারে দেখেনি বলে চাঁদের ভাঁজে;
পৃথিবীরে নিঃস্ব করতে পারে যত প্রেম তত প্রেম তোমার মনের মাঝে;
২৪-২৭.১০.১৩, জাজিরা ও ঢাকা।