Today 12 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

প্রিয়ন্তী-১৬ (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙ্গা তরুণী)

: | : ১০/১১/২০১৩

Priontiসুশান্তর চেয়ে প্রশান্ত বড়, শৈশব থেকেই সে কিছুটা দূরন্ত প্রকৃতির তাই কেউ কেউ তাকে প্রশান্ত নামে না ডেকে দূরন্ত বলে ডাকতো। প্রায় দিনই স্কুল থেকে কোন না কোন অভিযোগ আসতো, বেশিরভাগ দিনই ক্লাসের পড়া ফাঁকি দিয়েছে, কোনদিন কাউকে মেরেছে, কোনদিন ধাক্কা দিয়েছে, কোনদিন শিক্ষককে গালি পর্যন্ত দিয়েছে। প্রশান্তর স্কুল জীবনের এসব অভিযোগ শুনতে শুনতে তার বাবা এক রকম অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিল। সে মনে মনে ঠাকুরের কাছে জপ করছিল কোনভাবে স্কুল জীবন শেষ হলেই হয়। তারপর কলেজে নতুন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে হয়ত প্রথম প্রথম এত কিছু করার সাহস পাবে না।
কিন্তু ঘটনা ঘটলো উল্টা। তার স্কুল জীবনের অভিযোগগুলো দুষ্ট ছেলে বলে কান মলে দেওয়া কিংবা কয়েকটা কঞ্চির বাড়ি দেওয়া পর্যন্তই সমাপ্তি ঘটতো। কিন্তু কলেজে তার বাড়াবাড়ি ক্ষমার অযোগ্য। হঠাৎ করে প্রশান্ত বাড়ি থেকে উধাও হলো, খোঁজাখুঁজি শুরু হলো। বেশিদূর যায়নি তার পিসির বাড়িতে গেছে। কারণ হিসেবে জানা গেল, পিসি তাকে খুব আদর করে, তাই বেড়াতে গেছে, ক’দিন থেকে আবার চলে আসবে। বাবা-মা দু’জন আপাততঃ আশ্বস্থ হলো কিন্তু প্রকৃত কারণ অনুমান করা গেল আরো দু’দিন পর। কলেজ থেকে একটা নোটিশ এলো, আগামীকাল কলেজে মিটিং আছে, মিটিংয়ের আলোচ্য বিষয় দেখে বাবা কৃষাণ দত্ত-এর মুখ যেন ফ্যাকাশে হয়ে গেল, সে দূর্গা, দূর্গা বলে নোটিশটা পকেটে পুরলো।
কৃষাণ দত্ত ধনাঢ্য ব্যক্তি, শুধুমাত্র আবাদি জমিই এক’শ বিঘার কম হবে না, প্রায় দশ বিঘা জমির ওপর একটা আম বাগান আছে। একটা রাইস মিল আছে, বড় আকারের চাতাল আছে। ব্যবসায়ী হিসেবেও সে পোক্ত, জীবনের শুরু কৃষি কাজ দিয়ে, মাত্র দশ বিঘা জমি নিয়ে। দশ বিঘা জমিকে সে শত বিঘা অতিক্রান্ত করেছে, ব্যাংকে শূন্য স্থিতিকে সে হয়ত কোটিতে উন্নীত করেছে কিন্তু এসব উন্নতির কারণ হিসেবে তার আছে মেধা, শ্রম এবং টাকার কড়াক্রান্তি হিসাব। হিসেবের বেলায় সে পাকা। কোটি টাকা আছে বলে একটি পয়সাও তার কাছে নগণ্য নয়।
এলাকায় তার একটা নাম, ডাক আছে। সে রাজনীতি করে না কিন্তু যারা রাজনীতি করে তারাই নির্বাচনে নমিনেশন পেপার দাখিলের আগে আশীর্বাদ নিতে আসে। ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান সাহেব চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। তার মুখের ওপর কোন কথা বলার মতো আচরণ তাকে কেউ কোনদিন করেনি।
অধ্যক্ষের চেম্বারেঢোকার আগে কৃষাণ দত্ত পাশের কক্ষে তিনটা মেয়েকে বসে গল্প করতে দেখে এবং মিটিংয়ে রাজেনকে দেখে তার অনুমান হয়েছে এবার প্রশান্ত কোন বড় ধরনের অপরাধ করেছে, সেটা নারী ঘটিত অপরাধ হওয়ার আশংকাই বেশি। কলেজে মিটিং শুরু হয়েছে। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি, সদস্যগণ, অধ্যক্ষ আর পাশের গ্রামের রাজেন চন্দ্র শীল। মিটিংয়ে থমথমে ভাব, একটা পিনপতন নীরবতা।
সব নীরবতা ভেঙ্গে অধ্যক্ষ সাহেব প্রশান্তর ঘটানো অপ্রিয়, অমার্জনীয় ঘটনাটি মার্জিতভাবে বলতে শুরু করল, দাদা আপনি এলাকার একজন সম্মানী মানুষ, কথাটা আপনাকে বলতে আমার সংকোচ হচ্ছে। তবু না বলে উপায় নেই ব্যাপারটা আমার নিজের হলে আমি আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে ক্ষমা করে দিতাম কিন্তু অন্তত এতটুকু না করলে ব্যাপারটা শেষ পর্যন্ত কোর্ট-কাচারী পর্যন্ত গড়াতে পারে তাতে আমাদের কলেজের যেমন ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে তেমনি আপনারও সম্মান হানি হতে পারে।
কৃষাণ বাবু বুঝতে পারল, ব্যাপারটা অতি জটিল। সে মলিন মুখে বলল, প্রিন্সিপাল সাহেব আপনি বলুন।
ঘটনাটা তিনদিন আগে। প্রশান্ত কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার ওপর রাজেনের মেয়ের ওড়না টেনে ধরেছে। তার আগেরও কিছু ঘটনা আছে। কলেজে নবীন বরণের দিন থেকেই সে তার সঙ্গে একটু গায়ে পড়ে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু মেয়েটি তার সঙ্গে হয়ত কথা বলেনি তাই বলে রাস্তার ওপর একটা মেয়ের ওড়না টেনে ধরবে?
কৃষাণ বাবু বুকে যেন একটা প্রচণ্ড ধাক্কা খেল। তার মনে হলো মাটি ফেটে যাক সে মাটির ভিতর ঢুকে যাক। সে মাথা নত করে বসে রইল।
কারো মুখে কোন কথা নেই, সবাই কৃষাণের দিকে তাকিয়ে রইল।
ধীরে ধীরে নীরবতার অবসান হলো। কেউ কেউ ফিস্ ফিস্ করে বিভিন্ন ধরণের কথা বলতে শুরু করল। কৃষাণ বাবু শুনেও না শোনার ভান করে বসে রইল।
সভাপতি সাহেব বললেন, দাদা আপনি বলুন, আপনার মেয়ের হলে কী করতেন?
কৃষাণ বাবু মাথা নত করে বিনীত কণ্ঠে বলল, প্রশান্ত যে অপরাধ করেছে তা ক্ষমার যোগ্য নয়, এ বিষয়ে আপনারা যে সিদ্ধান্ত নিবেন আমি তাতে দ্বিমত করব না।
কমিটির একজন সদস্য বলল, দাদা শুনেছি প্রশান্ত নাকি স্কুলেও অনেক কাণ্ড ঘটিয়েছে?
কৃষাণ বাবু মাথা নত করে নীরবে বসে রইল।
না আমি বলছিলাম প্রশান্ত ভবিষ্যতে আর কোন অঘটন ঘটাবে না আপনি যদি এমন নিশ্চয়তা দিতে পারেন তবে না হয় এবারের মতো কমিটি তাকে সংশোধনের সুযোগ দিত।
কৃষাণ বাবু এ কথার কোন উত্তর খুঁজে পেল না। প্রশান্ত তার নিজের ছেলে কিন্তু তার প্রতি তার বিন্দু মাত্র বিশ্বাস নেই। সে যে কোন সময় যে কোন ধরনের কাণ্ড ঘটাতে পারে। এবারে যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তাতে তাকে অপরাধীর কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়ে মুখে জুতা মারার সমতুল্য অপমান করা হয়েছে। সে আর এমন কোন কাণ্ড ঘটাবে না এই নিশ্চয়তা দিয়ে যদি সে আবার কোন অপকর্ম করে বসে তখন এই কমিটি এবং শিক্ষকদের সামনে সে হাজির হবে কী করে?
কৃষাণ বাবু নিজের মুখ দিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের কথাটি জোরালোভাবে না বলে কৌশলঅবলম্বন করল, প্রশান্ত আপনাদের ছাত্র, আপনারা কিছুদিন থেকে তার চালচলন দেখছেন। আপনাদের দৃষ্টিতে যদি মনে হয় সে আর এমন কোন অপকর্ম করবে না তবে তাকে এবারের মতো সংশোধনের সুযোগ দেওয়াই উত্তম আর আপনারা যদি মনে করেন তার কারণে কলেজের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার আশংকা আছে তবে আপনারা সেটা ভেবে দেখবেন।
অধ্যক্ষ সাহেব বলল, দাদা আমরা সবাই আপনাকে শ্রদ্ধাকরি, প্রশান্তর মঙ্গল চাই, আপনি বরং প্রশান্তকে অন্য কোন কলেজে ভর্তি করে দিন।
সভাপতি সাহেব বললেন, হ্যাঁ আমিও তাই বলছিলাম।
কৃষাণ বাবু বুঝতে পারল প্রকারান্তরে কতৃপক্ষ প্রশান্তকে কলেজ থেকে বহিস্কার করতে চায়। সে বলল, দেখুন আমিও একজন এই কলেজের শুভাকাংখী, শ্রশান্তর উপস্থিতি যদি কলেজের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করে তবে আমিও আপনাদের সঙ্গেই থাকবো।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রশান্তকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো। কৃষাণ বাবুর মুখ যেন ক্ষণিকের মধ্যেই শুকিয়ে গেল। কণ্ঠরুদ্ধ হয়ে এলো। তার ধারণা ছিল বিচারে প্রশান্তর পাপে তার প্রায়শ্চিত্ত এ পর্যন্তই সমাপ্ত হলো কিন্তু না এখানেই শেষ নয়। শিক্ষকদের মধ্যে একজন বলল, কিন্তু মেয়েটির কী হবে? একথা তো আর লুকিয়ে থাকবে না। ক’দিন পরেই কথাটা সবার মুখে মুখে হয়ে যাবে তখন মেয়েটার বিয়ে দিতে তো আর কম সমস্যা হবে না।
এ কথার অর্থ বুঝতে কারো বাকি রইল না। কিন্তু মেয়েটির বিয়ের দায়ভার নেওয়ার ব্যাপারেও কতৃপক্ষ যে যুক্তি দেখালো তা গ্রহণযোগ্য এবং যুক্তিযুক্ত। সভাপতি সাহেব বললেন, কলেজে প্রশান্ত যে অপরাধ করেছে তার সর্বচ্চ্য শাস্তি কলেজে থেকে তার ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে এর চেয়ে বেশি করা কলেজের আওতা বহির্ভূত। এ বিষয়ে আর কলেজের কিছু করণীয় নেই।
কৃষাণ বাবু লক্ষ্য করল রাজেন এ বিচারে সন্তোষ্ট নয়। দু’য়েকজন শিক্ষক বিষয়টি জিইয়ে রাখতে ইন্ধন দিচ্ছে। কৃষাণ বাবু রাজেনকে বিনয়ের সুরে বলল, রাজেন আমি সবকিছু বুঝি, ব্যাপারটা যদি ঠিক উল্টো হতো তোমার ছেলে আমার মেয়ের সঙ্গে এমন আচরণ করতো তবে তুমি কী করতে? তুমি আমার ছোট ভাইয়ের মতো, প্রশান্তকে ছোট মানুষ মনে করে মাফ করে দাও।
কিন্তু দাদা।
কৃষাণ বাবু রাজেনকে আশ্বাস দিল, রাজেন তোমার মেয়ের বিয়েতে যদি কোন সমস্যা হয়, মানে আমি বলছিলাম যদি পণের বিষয়ে যদি তেমন আর্থিক সমস্যা হয় তবে আমাকে বলো আমি তোমাকে সহযোগিতা করব।
কৃষাণ বাবুর একথা বলার অর্থ হলো, রাজেনকে এখানেই থামাতে না পারলে সে হয়ত কোর্ট-কাচারী পর্যন্ত যেতে পারে। কৃষাণকে সবাই যেমন শ্রদ্ধা করে তেমনি তার শত্রুরও অভাব নেই। পরে ব্যাপারটা আরো জটিল হওয়ার আশংকায় সে রাজেনকে এই আশ্বাস দিল। লজ্জায় তার মাথা কাটা গেল। কারণ এটা শুধু রাজেনকে সহযোগিতাই নয় একরকম আর্থিক দণ্ড।
প্রশান্তর লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটল। কৃষাণ বাবু তার বোনকে প্রশান্তকে নিয়ে আসার জন্য খবর দিল। পরদিন পিসি আর প্রশান্ত এলো। কৃষাণ বাবু তার বোনকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলল। পিসি তো প্রশান্তর ওপর ভীষণ রাগ করল, ছিঃ প্রশান্ত তুই শেষ পর্যন্ত এমন একটা কাণ্ড ঘটালি যে লজ্জায় দাদার মাথা হেঁট হয়ে গেল।
প্রশান্ত মাথা নত করে বসে দাঁড়িয়ে রইল।
কৃষাণ বাবুর বোনের নাম মাধবী। ভাই-বোনের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো। দুজনের সংসারেই যে কোন সিদ্ধান্ত ভাই-বোন মিলে গ্রহণ করে। কৃষাণ বাবু প্রশান্তকে বাইরে যেতে বলে মাধবীকে জিজ্ঞেস করল, মাধবী প্রশান্তকে দিয়ে আর লেখাপড়া হবে না। তাকে বিয়ে দেওয়ায় উত্তম না হলে যে কোনদিন কোন নিচু জাতের, গরীব ঘরের মেয়েকে বিয়ে করে ফেলতে পারে। আমি প্রশান্তর জন্য তার স্কুল জীবনে অনেক অভিযোগ মোকাবেলা করেছি কিন্তু তখনকার অভিযোগ আর এখনকার অপরাধগুলো ভিন্ন ধরনের তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি প্রশান্তকে বিয়ে দিব।
এত অল্প বয়সে?
যে ছেলে রাস্তায় কোন মেয়ের ওড়না টেনে ধরতে পারে তার বয়স অল্প না। এখনি তাকে বিয়ে না দিলে সে যে কোন দূর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তুমি মেয়ে দেখো।
প্রশান্তর জন্য মেয়ে দেখা শুরু হলো। অনেক ভালো ভালো ঘরের সম্বন্ধএলো তবে প্রশান্তর গুণে নয়, কৃষাণ দত্তের ধন-সম্পত্তির গুণে। কৃষাণ দত্ত একে একে সুক্ষ্ণভাবে বিশ্লেষণ করে যে মেয়েটিকে নির্বাচন করল সে মেয়েটি বাবা-মা’র একমাত্র সন্তান। বাবা ধনী মানুষ, উচ্চ বিত্ত কৃষক, অনেক জমিজমা আছে। ভদ্রলোক বুদ্ধিমান, নিজের ছেলে না থাকায় নিজের পঞ্চাশ বিঘা জমি মেয়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। ব্যাংক ব্যালেন্সের টাকা মেয়ের নামে নমিনি করা আছে। মেয়ের গায়ের রং কিছুটা শ্যামলা তাতে কৃষাণ বাবুর কোন আপত্তি নেই।
কৌশলে প্রশান্ত একদিন মেয়ে দেখে এসেছে, প্রশান্তরও মেয়ে পছন্দ হয়েছে। প্রশান্তর শুধু এই মেয়েকে নয় আজকাল যে মেয়েকে দেখে তাকেই পছন্দ করে, তাকেই বিয়ে করতে ইচ্ছা করে।
বিবাহ সুসম্পন্ন হলো। নগদ হিসেবে পণ হলো একটা মোটর সাইকেল, পনেরো ভরি স্বর্ণালংকার, মেয়ের ঘর সাজানো, একটা সিনেমা কোয়ালিটি রঙীন টি.ভি, একটা ফ্রিজ আরো অনেক আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র। প্রশান্তর বিয়ে দিয়ে কৃষাণ বাবু অনেকটা তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলল।

সুশান্তর এক ক্লাস ফ্রেন্ডের মাধ্যমে কৃষাণ বাবু তার বিয়ের কথা শুনে যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল। কৃষাণ বাবু মহামায়াকে ডেকে বলল, সুশান্তর কথা শুনেছ?
কী কথা?
সুশান্ত বিয়ে করেছে।
বিয়ে করেছে মানে?
বিয়ে করেছে মানে বিয়ে করেছে।
আমাদেরকে না জানিয়ে?
হ্যাঁ আমাদেরকে না জানিয়ে কোথাকার কোন ভিখারীকে বিয়ে করেছে তার ঠিক আছে। শুনেছি মেয়ের বাবার অবস্থা ভালো কিন্তু বেঁচে নেই, মা-ভাই এই বিয়ে মেনে নেয়নি। মেয়ের জন্য চিরতরে বাড়ির দরজা বন্ধ।
তাতে কী মেয়ে আর বাবার বাড়ি যাবে না।
বাবার বাড়ি গেলেই বা লাভ কী? তিনি তো আগেই পটল তুলেছেন। বিষয়-সম্পত্তি যা আছে তা একমাত্র পুত্র সন্তানের, হিন্দু ধর্মে মেয়েদের তো পৈত্রিক সম্পত্তিতে কোন অধিকার নেই। ছেলেটা আমার সব স্বপ্নভেঙ্গে দিল। প্রশান্ত কম শিক্ষিত তারওপর সে যা পণ পেয়েছে তাতে তার সারাজীবন কাজ না করে খেলেও কেটে যাবে। আর সুশান্ত তো একটা শিক্ষিত ছেলে সে বিয়েতে কত পণ পেত তুমি হিসেব করেছ।
তুমি তো সব সময় শুধু টাকার হিসেব করো।
টাকার হিসাব করি বলেই তো আজ এতকিছু করতে পেরেছি, আমার বন্ধুরা অনেকেই এখনো আগের মতোই আছে, কেউ কেউ নিঃস্ব হয়েছে আর আমি, আমি কত উপরে উঠেছি। পৃথিবীর সবকিছুতেই হিসেবি হতে হয়। তাছাড়া উপরে উঠা যায় না, তোমাকে আমি বলে রাখলাম সুশান্ত কোনদিন উপরে উঠতে পারবে না।
বাপ হয়ে এমন কথা বলতে হয় না। সুশান্ত বিয়ে করেছে আমি একবার মোবাইল করছি বউকে নিয়ে আসুক আমি বউ দেখবো।
আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করে বউ নিয়ে আমার বাড়িতে আসবে আর তুমি বউ দেখবে, না? তোমার যদি বউ দেখতে খুব ইচ্ছা করে তবে আমাকে একেবারে ছেড়ে ছোট ছেলের কাছে চলে যাও। আর কোনদিন ফিরে আসবে না, আর না হয় বউকে দেখবে আমার মৃতুর পর।
এ তুমি কি বলছ?
হ্যাঁ আমি ঠিকই বলেছি, আমি বেঁচে থাকতে সুশান্তকে আমি কোনদিন ছেলে হিসেবে গ্রহণ করব না। তুমিও কোনদিন তার পক্ষ নিয়ে কথা বলবে না। যদি বলো তবে তুমি সুশান্তর সঙ্গে চলে যাবে স্বামীরসংসার ছেড়ে ছেলের সংসারে ঝিয়ের কাজ করে খাবে। আর আমি শীঘ্রই সুশান্তকে ত্যাজ্য করব।
মহামায়া হাউ মাউ করে কেঁদে উঠল, ওগো তুমি এমন নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নিও না। ভগবান শাস্তি দিবে।
চলবে…

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top