আমি কান পাতলেই শুনি
ঐ তিনটা মেয়েকেই আমি চিনতাম যারা বলি হয়েছে,
ওরা প্রকৃতির সৃষ্ট তিনটা বোকা মানব সন্তান,
ওরা গভীর রাতে যখন উদয় হবে বলে কথা দিয়েছিল পঞ্চবিংশতীর চাঁদ
হেমলক পানে শেষ করে দিয়েছে মহৎ জীবন।
যার মধ্যে দুজনই ষোড়শী মনের চাঁপা আভিমান নিয়ে চলে গেছে,
সমাজ ঠিকই সাজিয়ে রেখেছিল বলির ডালা,
আলতা মাখা পা পর্যন্ত রঙিন শাড়ি জড়িয়ে করেছিল বরণ।
আর একজন যার বহুদিনে মুছে গেছে পায়ের আলতার রঙ,
যে রঙ ধীরে ধীরে চলে গেছে দিগন্তে গোধুলী রাঙাতে,
তারপর একদিন ডাক দিয়ে নিয়ে গেল তারে পঞ্চবিংশতীর রাতে।
যে দূরন্ত ষোড়শী বালিকারা প্রথম প্রেমে পড়ার স্বাদ অনুভব করার আগেই
চলে গেল বলির ডালায়, তারপর ডোমের কানের কাছে বাজায় দীর্ঘনিঃশ্বাস,
আর দূর থেকে প্রগতি বুঝেনা হাহাকার, ওরা ধর্মের বুলি দেয়
বলে, এই ষোড়শো বালিকারা বলি দিয়েছে নিজেদের আজীবন সীমাহীন সমুদ্রে ভাসতে,
পাবে না স্বর্গ কোন দিন, ওরা আছে অন্যের স্বর্গের আশা সাজাতে।
ঐ তিনটা মেয়েকেই আমি চিনতাম যারা বলি হয়েছে,
যাদের একজনকে নাকী তুলে নিয়ে গেছে বলির জাহাজের নোঙর বালক।
তারপর প্রগতির জাহাজ ভেসে চলেছে প্রগতির পথে,
রাতভর পেঁচার ডাকে ভেবেছে ষোড়শী দেখা হবে মৃত্যুর পঞ্চবিংশতীর রাতে।
শুনা যাচ্ছে হাহাকার,
এখন আর ক্রুশ বিদ্ধ হয় না যীশুরা, এখন মেরীর তৃষ্ণা মেটায় হেমলক।
এখন প্রগতি যোয়ান দা আর্ক সাজায় ঘরে ঘরে,
এখন দূরন্ত বালিকার হৃদয় সমাজের বলির খপ্পরে।
দাড় টেনে ধর, গুড়িয়ে দাও পাঞ্জেরী, যে জাহাজ পাড়ি জমিয়েছে স্বর্গের বন্দরে,
ধ্বংস করে দাও ইঞ্জিন। পথ রুখে দাড়াও বলির যাত্রার পথে,
পথ রুখে দাঁড়াও সব যাত্রার পথে।
না না না!
আর একটা হেমলক পানের দেহ কবরে যাবে না।
না না না
আর একটা হেমলক পানের দেহ চিতায় যাবে না।
না না না
আর একটা ফাঁসির মঞ্চের দেহ কবরে যাবে না।
আমি কান পাতলেই শুনি,
আমি কান পাতলেই শুনি
হাহকার হাহাকার, চিৎকার, চিৎকার, হাহাকার।
১২.১১.১৩, ঢাকা।