হুমায়ূন আহমেদ…স্যার, আপনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন।
একটা সময় ছিলো যখন হিমু হবার প্রবল বাসনা নিয়ে উদ্ভট উদ্ভট কিছু কাজকর্ম করে ফেলেছিলাম। শহীদ মিনারের পাশে শুয়ে বসে পুরো একটি রাত কাটিয়ে ফেলেছি। জীবনে কখনো পান খাবোনা এমন ধারণা বিসর্জন দিয়ে গালভর্তি করে পান খেয়েছি। খালি পায়ে হাঁটতে গিয়ে পায়ে লোহার টুকরো বিঁধিয়ে চারদিন বিছানায় পরে ছিলাম। শার্ট, টিশার্ট নয় শুধুই হলুদ পাঞ্জাবী পরে বাকি জীবন কাটিয়ে দেবো এমন ধারনাও ছিলো বেশ কয়েকদিন। এই অদ্ভুতুড়ে কয়েকটা দিন ছিলো আমার জীবনের সবচাইতে সুন্দর সময়।
এই সুন্দর সময়গুলো পেছনে ফেলে এসেছি। এখন আর এতো পাগলামি করতে ইচ্ছে বা সময় কোনটাই হয় না। তবে যতটা দিন পার হয়েছে, এই হিমুর স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদ নামের এক ব্যক্তি ততটাই আমার মনের গভীর থেকে গভীরে চলে গিয়েছে। এতটাই গভীরে যে ইচ্ছে করলেও সেখান থেকে তাকে আর মুছে ফেলা সম্ভব হবে না। আমার উপর তার প্রভাব অপরিসীম। অপরিসীম বললে ভুল হয়ে যাবে। এর চেয়েও অনেক বেশি। অনেক অনেক বেশি।
টুকটাক লেখালেখি করার মত দুঃসাহস মূলত হুমায়ূন আহমেদের লেখা পড়েই পেয়েছি। ফেসবুক, ব্লগের কল্যাণে অনেকেই আমাকে ছোটখাট লেখক বলে মনে করেন। তবে আসল ঘটনা এরকম না। কয়েকটা লাইন লিখলেই লেখক হওয়া যায় না। এ কথাটা আমিও জানি। আরো অনেকেই জানেন। যারা জানেন তারা আমাকে বিভিন্নভাবে আক্রমণ করেন। আমি হুমায়ূন আহমেদের স্টাইল নকল করি’ এধরণের কথা আমাকে প্রায়ই শুনতে হয়। তাদের জ্ঞাতার্থে একটা কথা না বললেই নয়, যে, হুমায়ূন আহেমেদের স্টাইল নকল করার মত ট্যালেন্ট আমি এ যাবৎ কারো মধ্যেই দেখিনি। আমার তো প্রশ্নেই আসে না। তবুও যখন শুনি… হুমায়ূন আহমেদের নকল করি তখন আনন্দই হয়। অন্তত হুমায়ূন আহমেদ নামটা তো শোনা হয়!
এই একজন এবং একমাত্র হুমায়ূন আহমেদ নাকি মারা গেছেন! কই? তিনি শুধু আমাদের মধ্যিখানে নেই। অন্য এক ভুবনে আছেন। যেখানে আমিও যাবো। আপনিও যাবেন।
হুমায়ূন আহমেদ…স্যার, আপনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন… চিরকাল বেঁচে থাকুন।