এবার বেসরকারি কোম্পানিতে গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করা চাকুরী প্রত্যাশী এবং চাকুরেদের জন্য সরকার কতৃক নূন্যতম বেতন কাঠমো করা হোক ।
আমাদের দেশে দিনদিনই সরকারি চাকুরী দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে । একে কোটা পদ্ধতি অন্যদিকে ঘুষ এই দুয়ের সংমিশ্রনে সরকারি চাকুরী কিছু আলাদা শ্রেনীর মানুষের চাকুরী বলেই গন্য হচ্ছে । তাই সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে এই চাকুরী এখন অনেকটাই দুস্প্রাপ্য । বাধ্য হয়ে বেকার যুবকেরা ঝুকছে বেসরকারি চাকুরীর উপর । বেসরকারি চাকুরীগুলোর উপর এই চাহিদার ভারও আজ অনেক বেশী । পাশ করে বের হয়েই মানুষ জীবিকার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করে ।এই সুযোগটাই নেয় বেসরকারি কোম্পানিগুলো । কোন নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো না থাকায় এরা যে কোন বেতনে যে কোন লেভেলের শিক্ষিতদের তাদের ইচ্ছামত বেতনে খাটিয়ে নেয় । শুনে অবাক হবেন গ্রাজুয়েশন কমিপ্লট করা একজন মানুষ অনেক জায়গায়ই ৪০০০/= টাকা বেতনেও কাজ করছে ! আমিও মানি শুধু সার্টিফিকেটাই একজনের দক্ষতাকে সু-সপষ্টভাবে প্রকাশ করেনা কিন্তু তাই বলে একজন অশিক্ষিত মানুষ এবং একজন শিক্ষিত মানুষ একই বেতন কাঠামাতে কাজ করবে তা মানা যায় না । তার পিছনেও অনেকগুলো যুক্তিযুক্ত কারন অবশ্যই আছে ।যেমন একজন মানুষ মাষ্টার্স করতে সময় লাগে সাত- আট বছর । যদি তাই হয় তবে এসএসসি পাশ এবং মাষ্টার্স পাশ একই বেতন কাঠামোতে কাজ করে কিভাবে ?
সম্প্রতি পাশ হওয়া বেতস স্কেল অনুযায়ী কোন শ্রমিক বেতন পাবে ৫৩০০/= টাকা । আর সেখানে কি করে ৫০০০-৮০০০ এর মধ্যে মাষ্টার্স শেষ করা একজন মানুষ কাজ করবে ?
খুব তাড়াতড়িই এই বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন । নইলে শিক্ষিত মানুষেরা তাদের দক্ষতা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হবে । দেশের মেধা সহজেই অন্য দেশে চলে যাবে । ব্যর্থতা আসবে দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলোর কোয়ালিটিতে । এখুনি কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই যোগ্য লোক সঠিক জায়গায় যেতে পারছেনা ।এই বৈষম্যগুলো দূর করার জন্য কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরছি । আশা করছি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখে ব্যবস্থা নেবে ।
- গ্রাজুয়েশন শেষ করা কোন ব্যক্তির মাসিক বেতন নূন্যতম ১৭০০০ টাকা করা যেতে পারে অথবা সরকারি চাকুরীর দ্বিতীয় শ্রেনীর মর্যাদার সমান বেতন কাঠামোর সমান করা যেতে পারে ।
- প্রকি ছয়মাস পরপর মূল বেতনের ২০% হারে বাড়ানো যেতে পারে ।
- সকল বেসরকারি কোম্পানিতে ফ্রেস অবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে ।
- অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য প্রবিডেন্ট ফান্ড চালু করতে হবে ।
- প্রতিটি ব্যক্তির জন্য ৫ বছর কোন কোম্পানিতে একাধারে কাজ করলেই পেনশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসার জন্য আলাদা অর্থনতিক সুবিধা দিতে হবে ।
- এছাড়াও যেকোন সময় কোন মালিক পক্ষ বলে দিতে পারবেনা যে আপনার আর কাল থেকে অফিসে আসার প্রয়োজন নেই । এর জন্য কমপক্ষে তিনমাস আগে কাউকে অবগত করে চাকুরী থেকে অব্যহতি দিতে হবে । একটি সঠিক বেতন কাঠামো দিতে পারে বৈষম্য মুক্ত শক্তিধর সামস্টিক শক্তি ।
সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে আকুল আবেদন আপনারা শিক্ষিত মানুষের মনের কথাগুলো বুঝে আমাদের অপারগতা থেকে মুক্তি দিন । আমরা আমাদের দাবী আদায়ের জন্য রাস্তায় নামতে পারিনা । আমরা শিক্ষিত বলে যে কোন কাজ করে আন্দোলনে জেতার কৌশল অবলম্বন করতে পারি না । তাই আমরা বেশীরভাগ সময়ই বৈষম্যের শিকার হই । এই অবস্থা যেন না চলে সেটার প্রতি নজর দেওয়া রাষ্ট্র প্রধানদের একান্ত কর্তব্য ।