জ্বালাময়ী মাতা
আমার ছোট্ট বাবুটা
বয়স নয় মাস হলেও
পাকামোটা অনেক বেশী
অনেক ভয় তাকে নিয়ে আমার
খেয়াল রাখতে রাখতেই যায় সারাবেলা
তবুও ধুলোয় লুটোপটি করে
মুক্ত আকাশের নীচে
ছেড়ে দেই অতি বিশ্বস্ত ধরনীর বুকে ।
কাজের ফাকেঁও দূর থেকে তাকিয়ে
দেখে নেই বাবুটার মুখ
সে খেলছে উদ্দাম আনন্দে
হাত নাচিয়ে নাচিয়ে,
পা উচিয়ে উচিয়ে
ঝুনঝুনি সাদৃশ্য লাল, নীল, বেগুনী
বস্তু দিয়ে……
খেলা যেন আর থামেই না
তার আনন্দে আত্নহারা আমিও
অন্যমনস্কতার সময়ে হঠাৎই ধু….ম শব্দ
কাক গুলো বিকট শব্দে কা….কা করে
উড়ে যাচ্ছে ডানা ঝাপটিয়ে
আমি ভুলেই গেছি
ছোট্ট বাবুটা আমার খেলছিলো…
মুখটা ফিরিয়েই দেখি
তার ছিন্নভিন্ন দেহটা লুটিয়ে গেছে
আমার বিশ্বস্থ ধরনীর বুকে
কি করুণ….!আমি এ কি দেখছি..!
একটা হাত, গলা, মস্তক সব ছিন্নভিন্ন
রক্তমাখা সাদা গেজ্ঞিটাও আলাদা
টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে আছে মাংশ খন্ডগুলো…..!
আমি মা হয়ে, আমি মা হয়ে…..
সন্তানকে এভাবে দেখছি…..?
যেভাবে একটা একটা অঙ্গ
কল্পনা করে দশমাস পেটে ধরেছি ।
আমার কি কষ্ট হচ্ছে,
নাকি আমি অথর্ব …?
আমার ধরনী আমারই রক্তে রঙিন
আমারই কষ্টে চুপ….!
আমি আজ থেকে সন্তান হারা দুঃখিনি মা
তবুও আমার বাহুযুগল শক্ত হয়ে উঠছে
প্রতিশোধের নেশায়….
আমি একটি ককটেল বানাবো
যা বিস্ফোরিত করবো কটটেল বাজদের বিরুদ্ধে
ঘর থেকে খুঁজে খুজেঁ এনে ক্লস্টার বোমার মত
দেহ ছিন্নভিন্ন করবে নরপশুদের…….।
আমি ফুসে উঠেছি
প্রতিশোধের আগুনে জ্বলা এক মা ।
আমরা আর পারছিনা এই ককটেল জ্বালা সইতে । প্রতিটি ঘরেই আজ ভয় আমার বাচ্চা, বর বা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি না আবার ককটেল বিস্ফোরনের শিকার হয় ! আর যাদের শিকার হতে হয়েছে এই নির্মম ককটেল বিস্ফোরনের তারা, তাদের পরিবার প্রত্যেকেই একেকটি বারুদ হয়ে যাচ্ছে প্রতিশোধের নেশায় । আর এ নেশা কোনদিন দেশকে শান্তির পথে নেবে না । হানাহানি বারাতেই থাকবে । এখনি বন্ধ করুন এ নরপশু সমেত কান্ড ।
আমরা সব সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদরত একেকজন সাহসী বাঙালী ।
সাঈদ চৌধুরী
রচনাকাল ২৬/১১/২০১৩ ইং (রাত ১১.৩০ মিনিট)