সকালের গল্প
প্রারম্ভিকতার পারলৌকিকতা দেখব বলে
ঘর ছেড়ে সেদিন সকালের রোদেলা প্রহরে
চটিতে পা গলিয়ে
রাস্তায় পা ফেলে বাঁক ধরতেই দেখি ,
আমার বাড়ির পাশ দিয়ে দৌড়ে চলে যাওয়া ট্রেনলাইনের ইস্পাতের পরে
অবোধ্য, তবে অনুমেয় দশ বছরের একটি ছেলে
পলিথিনের ঠোংগা থেকে কী যেন খাচ্ছে ।
আমি – এক দু পা করে কাছাকাছি আসতেই
নিজ উদ্যোগেই নজরের ভিটেতে ভীত গাড়ল একটি শব্দ ,
মানবতা ! এরপর তাকে দেখে ভাবতে ভাবতে হিসেব মেলাতে থাকলাম –
মানুষ মনুষ্যত্ববোধ জীবন জীবিকা মূল্যবোধ পৃথিবী ইত্যাদি ইত্যাদি —
কারন তার বয়সে অন্যেরা শোনে যাদুমনি দাদুমনি
খায় আদরে সোহাগে মাখানো হাজার বাইনার খাবার
পিন্দায় পছন্দের জামাকাপড় ,
আর এ সময়েই এরা জামাল কামাল কাইল্লা হইয়া খায়
ওদেরই বাদ দেয়া ডাষ্টবিনের কোনে মরে পঁচে লুকিয়ে থাকা
দুগর্ন্ধ পঁচা গলা আর সব ;
এসময় উচু তলাদের সন্তানেরা টাকা না দেখলেও
এরা কিন্তু চেনে ঠিক ঠিকই চরম হতভম্ব বৈরিতায় ।
বিশ্ব আজ মানুষকে বাঁচাও – বাঁচাও আন্দোলনের মুখোশে
মানুষ মারার চেয়ার দখলের চেষ্টায় ব্যস্ত ,
আরদিকে – মধ্যবিত্ত নিন্মবিত্তরা প্রাণটা বাঁচিয়ে রাখাতে ব্যতিব্যস্ত ।
দিবসে পলনে আমরা অতি উৎসাহী।
আজকের জীবন জীবিকা আজ কাগজে কলমে লিপিবদ্ধ ,
কবির কবিতায় , শিল্পীর তুলিকায় , রাজনীতিবিদরে রাজনীতির খেলায় আইনের মারপ্যাঁচে প্রবিদ্ধ ।
সুরকার গায়কের সুরে উড়ে জীবনের জয়গান ।
হতভাগা ন্ন্মিবিত্তেরা আর মধ্যবিত্তেরা এসবের কোন খোঁজ খবর না রেখে
কোন রকম বাগাড়ম্বর বাদ দিয়ে প্রাণটা বাঁচানোর চেষ্টায় এস্ত।
ওরা আবর্জনার স্তুপে শুয়ে আকাশে দৃষ্টি রেখে
অনিলে ওষ্ঠ পেতে ত্বরণে মন্দনে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়-
মানুষ কোথায় আর মানবতা কোথায় ?
জীবনের মানে কী আর তার মুক্তি কোথায় ?
আসলে চিরপ্রবহমান নিন্মভূমি নিন্মভূমিই রয় ।
কেবলি বৃথা আস্ফালন। জন্ম থেকে শুনছি – দেখছি ,
এখন আর ভাল্লাগে না । কিন্তু ও রা ও থামে না।
মুক্তি কোথায় ? মুক্তি যদিও সহজলভ্য ,
হাতের নাগালে কিন্তু আমরাই তাকে দুর্বোধ্য করে রেখেছি ,
কারন- আত্মকেন্দ্রিকতা স্বার্থপরতা শঠতা ।
তারপরেও জীবন ! অবাক বিস্ময়ে হতবাকে বেড়ে উঠে সভ্যতার মুখোশে ,
ঢাকা পড়ে যায় দূর্বলেরা সবলের পদ ধুলির স্তুপে স্তুপে ,
জীবনেরা গেয়ে যায় জীবনের জয়গান আলোকের বসবাসে
ভাগাড়ের জীবনেরা ভাগাড়ে দাঁড়িয়ে হাঁড় হাসে ।