ভুতের গলির সেই ভূত কি ফিরে এলো???
পূর্ব প্রকাশের পর
আলবার্তো আবার আগের গেটআপে ফিরে এসেছে।বৌ্দ্ধদের সাজ সজ্জা ফেলে মুসলিম একেবারে খাটি বাঙালী গেটআপ ধরেছে।সাদা পান্জাবী পায়জামা এখন তার পোষাক বলা যায়।পায়জামা পান্জাবী পরা অবস্থায় দর্শনীয় মানুষের পর্যায়ে চলে যায়। সে দেখতে লম্বা চওড়া সাদাদের মত তার চুল আর চোখ কিছুটা বাদামী ধরনের।নুতুন পরিচিতরা তাকে দেখলে প্রথমে সাদা মনে করে।পরে সে যখন বাংলা কথাবলা শুরু করে তখন সবার ভূল ভাঙ্গে।আশেপাশের সব মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক টা অনেকটা শীতল ধরনের তা তার প্রচন্ড শরীরিক সৌন্দর্য আর ব্যাক্তিত্বের কারনে।নিজেকে সে সবসময় দূর্ভেদ্য ব্যক্তিত্বের আড়ালে ঢেকে রাখতে পছন্দ করে।এটা তার অহংকার নয় স্বভাব।তার পরিবারের সবার সাথে সম্পর্ক টা এখন অনেক দুরের।বারবার ধর্ম পরিবর্তন ধর্মের প্রচলিত রীতি নীতির বাহিরে ধর্মের ব্যাখ্যার কারনে মা বাবা ফ্যমিলী সবার সাথে দূরত্ব তৈরী হয়ে গিয়েছে।তার স্ত্রী মালিনীর সাথে সম্পর্ক টা ও অনেক শীতল।দীর্ঘ বার বছরের প্রেমের পর তাদের বিয়ে কিন্তু সেই সম্পর্কে যেন এখন কোন প্রান নেই।তাদের কোন সন্তানাদি হয়নি দশ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কে।কেন তাদের কোন সন্তান নাই সেটা নিয়ে তারা কার ও সাথে কথা বলা ও পছন্দ করেনা।
বারন্দায় বসে সে বই পড়ছে ধর্ম ও দর্শন সম্পর্কিত ওয়াচ টাওয়ার মাগাজিন।এটা কিংডম হল চার্চে সানডে ওয়ারশীপে পঠিত পত্রিকা।
স্ত্রী মালিনী এসে ফোন হাতে দিয়ে বলে তোমার ফোন ।পত্রিকা উল্টে দেখার চেষ্টা করে ।দেখে যথারীতি গম্ভীর হয়ে গেল।
তুমি সারাক্ষন চার্চ ম্যাগাজিন পড় কেন?আর কোন ম্যাগজিন কি নাই?
আলবার্তো হেসে তাকালো বউয়ের দিকে
কেন এই ম্যাগাজিন কি দোষ করল?
এই ম্যাগাজিন আমার থিন্কিং অ্যাটিচূড সব লিফট করেছে মালিনী।কোরআন বেদ গীতা অথবা রামায়ন যে কোন বই পরতে পার অসুবিধা নাই।আমি এই বই পড়ে যদি ভাল জীবনের অনুপ্রেরনা পাই তাহলে দোষের কি আছে তাতে?আমি যদি খ্রীষ্টনদের সাথে মদ খেয়ে পড়ে থাকতাম অন্য কোন ব্যভিচার বা উগ্র খোলামেলা জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতাম তবে তুমি বলতে পারতে আমার উপর এই খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের প্রভাব খারাপ হচ্ছে।
আল্লাহ ভগবান গড সব একই রুপে প্রভূ তোমাকে দেখা দিবেন।এই ক্ষেত্রে তোমার হৃদয়ের পরিচ্ছন্নতা মূখ্য ধর্ম মূখ্য নয়।
আলভী আমার কোন আপত্তি নাই খ্রীষ্টান ফ্রেন্ড অথবা তাদের প্রোগ্রামে যাওয়া।তোমার আব্বা আমাকে বোঝাতে বললেন।উনি পছন্দ করতে পারছেননা তুমি চার্চে যাওয়া আসা কর।আমি জানি সবকিছু ই তোমার কাছে এক্সপেরিমেন্টের মত।বাবাকে কে বোঝাবে।
এই রে ফোনে কে যেন ওয়েট করছে দেখ ।কেটে গেল না তো?
কেটে গেছে ফোন।কিছুক্ষন পরে আবার রিং।
ধরতে ওপাশ থেকে মাসুমের উৎফুল্ল গলা পাওয়া গেল।
আলবার্তো আন্কেল খবর কি?
মাসুম ব্যাপার কি? হানিমুন পর্ব কি শেষ?আলবার্তো আন্তরিকভাবে জোর গলায় বলে উঠল। এই ছেলেটাকে সে সত্যিকারের স্নেহ করে।
আঙ্কল চলে আসুন আমার বাসায়।আমাদের আসা উপলক্ষে মা এক পার্টির আয়োজন করেছে।
সন্ধায় আলবার্তো এসে দেখে মাসুমের বাসায় বিশাল আয়োজন।অনেক ব্যান্ডের শিল্পীদের দেখা যাচ্ছে।চারিদিকের হই হুল্লোড়ের পরিবেশ বিরাজ করছে।এসব পরিবেশে আলবার্তো পারতপক্ষে এখন আর যায়না।হই হুল্লোড়ের সাথে সে কখন ও একাত্ম হতে পারেনা।
এশা এসে সালাম করে মালিনীকে ভিতরের রুমে নিয়ে গেল।আজকে এশা বেশ স্বাভাবিক হাসি খুশী আনন্দে ঝলমল করছে।
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ হল।একফাকে এশা তার হাতে কফি দিয়ে গেল।যাওয়ার সময়ে একটু অন্যরকমভাবে তাকাল আলবার্তোর দিকে তারপর অপ্রাসঙ্গিক ভাবে বলল
আপনার সাথে কি আমার দেখা হতে পারে একদিন? বলে দ্রুততায় আবার ভিতরের রুমে চলে গেল।
কোথায় দেখা কি কারনে দেখা করতে চায়।এত গোপনীয়তার বা কি আছে আলবার্তো কিছুই ভেবে পেলনা।
এশা মেয়েটি ম্রিষ্ট্রিরিয়াস কারেকটার এর ।আলবার্তো ডিসিশান নিল এশা ডাকলে সে মাসুম ছাড়া কখন ও এশার সাথে দেখা করবেনা।
বিরক্তিভরে এশার গমন পথের দিকে সে তাকিয়ে রইল।
(পরবর্তীতে)