তরুনদেরকে জাগাতেই হবে ।
কই সেই তারুন্য যে তারুন্যে আমাকে বলতে শিখিয়েছে আমার ভাষা বাঙলা, আমি স্বাধীন দেশের আর আমি বাঙালী । তবে কি তারুন্যের শক্তির অভাবে একটি সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটবে ?
চা এর স্টলে দুরন্তপনা, বন্ধুদের সাথে সারা দিন নদীতে লাফঝাপ, তীব্র শীতে দুষ্টুমি করে খেজুর গাছ থেকে রস পেরে খাওয়া তারপর কোন অঘঠনে সবার আগে এই দুরন্ত তরুণদেরই এগিয়ে আসা ।এই তারুণ্য এমন একটি শক্তি এটি যা ইচ্ছা করলেই অবদমিত করা যায় না, নষ্ট করে দেওয়া যায় না বা থামিয়েও দেওয়া যায় না । সব বাধাকে অতিক্রম করে জয় নিয়ে আসাই যেন একটি অভ্যাস । আমরা তারুণ্য বলতে অসম্ভবকে সম্ভব করাই বুঝি । কিছুদিন আগ পর্যন্তও দেখা যেত যে কোন ভালো কাজের জন্য ছাত্ররাই আগে এগিয়ে আসতো । এমনও সময় গেছে যখন দেশের দূরবস্থায় ছাত্রদের অংশগ্রহনে আশার আলো দেখেছে আমার দেশের মানুষ । কিন্ত কেউ কি লক্ষ করেছেন আজ আমাদের এই উদ্দিপ্ত তরুন সমাজ কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়ছে ! তাদের মধ্যে আর সেই ঝাপিয়ে পড়ার মত কোন আবেগ লক্ষ করা যায় না । আপনি যেয়ে বলুন যে এই চলো আমরা বন্যা দূর্গত মানুষদের সাহায্য করি বা বলেন রাস্তার ময়লা পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিতে, বেশীর ভাগের কাছ থেকেই উত্তর পাবেন – ভাই যারা এগুলো দেখার দায়িত্বে তারা দেখবে, আমাদের দেখে কি লাভ ! আমি অবাক হই আর ভাবি এই রাস্তা দিয়ে তুইও হাটিস, তুই তোর মাকে নিয়ে ঝাকি খেতে খেতে বা দূর্গন্ধের মধ্য দিয়ে যাস আর পরিষ্কার করতে বললে সরাসরি বলিস যাদের দেখার দায়িত্ব তারা দেখবে । কিন্তু কি ভুল করছে এরা । একটু সচেতন হলেই রাজনীতিকেরা এত সুযোগ নিতে পারতোনা ।আমরা ছাত্রদের রাজনীতি ছেড়ে দিতে বলি, কেন ? কারন রাজনীতি সন্ত্রাসবাদ শিক্ষা দিচ্ছে আমাদের দেশে । ছাত্রদের হাতে নিজেদের পক্ষে নিয়ে রাজনীতিকেরা ছাত্রদের শক্তি দিয়ে বোঝায় তোদের অনেক শক্তি হয়েছে এবার তোরা অধিকার আদায় কর আমার বিপক্ষ দল থেকে । সেই অধিকার কি ? পরবর্তি বছর যদি আমরা ক্ষমতায় যেতে পারি সরকারি যত চাকুরী, টেন্ডার, ব্যবসা, শেয়ার সবকিছুর ক্ষমতা তোদের দেওয়া হবে যারা সামনে থেকে আমাদের সমর্থন দিবি ।আর লাফিয়ে চলে যায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ।
পড়ে মনে করতে পারেন আমি মিছে বকছি ।যাচাই করুন আপনার সন্তানকে দিয়েই । দেখুন সে কি সুবিধা পেয়েই বড় হতে চায় না নিজেকে জাতির সামনে মেলে ধরে বড় হতে চায় ।
আজ তরুণদের এই হীণতা কেন । তারা কি প্রাণ শক্তি হারিয়ে ফেললো না কোথাও নিজেদের বন্দি করে ফেললো । ছোট বেলা থেকেই একধরনের শিশুরা বড় হয় প্রচন্ড রকম বাধ্যবাধকতার মধ্যে আর অণ্যদিকে কিছু শিশু বড় হয় একেবারে গা-ছাড়া দিয়ে । দুই পার্থক্যে চরম দূরত্ব একজন বড় হয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে তখন তার মধ্যে কাজ করবে কিভাবে ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটি চাকুরি করতে পারবো । আর যারা জীবনে গাছাড়া দিয়ে বড় হচ্ছে তার ? এদের মধ্যে স্বপ্ন বিভাজিত । কেউ কষ্ট করে অনেক সুনাম করবে, কেউ টাকার অভাবে ঝড়ে যাবে, কেউ অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী হবে আবার কেউ প্রেমে ছেকা খেয়ে জীবনকে মিথ্যে ভাবতে শুরু করবে । এর মধ্যে দেশ নিয়ে ভাবারও সংখ্যা কম থাকবেনা । তবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তখনই যখন এরা দেখতে পায় দেশ নিয়ে ভাবলে কোন সাড়া পাওয়া যায় না তখন ।এই তরণদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয় । আর যার ফলাফল আমরা দেখছি ।এর পরও আরও যেটা মারাত্বক আকার ধারন করছে সেটা হচ্ছে তরুণদের মধ্যে একা থাকার প্রবণতা । একটি মোবাইল বা ল্যাপটপ হলেই আর কথা নেই । সারা দিন ফেইসবুক চ্যাট আর আড্ডার নামে সময়ের অপব্যবহার………।
এই তরুন, তোমাদের আবার জাগতে হবে । এভাবে বললে হবে না – দেখার অনেকেই আছে আমি কেন কাজ করবো । নতুনদের নিয়েই আমাদের জগৎ । অনেক উদ্যোম নিয়ে নতুনদেরই আগাতে হবে । আমার মধ্যে কি নেই যা ঐ বারাক ওবামার মধ্যে বেশী আছে । আমি কন্ঠ উঁচু করে বলতে পারি না, হে তরুণেরা আসো তোমরা ঝাপিয়ে পড়ো এ বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত, কালো রাজনীতিবিদমুক্ত, অপসাংস্কৃতিমুক্ত, অসাম্প্রদায়িকতা মুক্ত একটি দৃঢ়তাপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে আমার নেতৃত্বে কাজ করো । কোন তরুণ আছে যার নেতা হওয়ার যোগ্যতা নেই ? কেউ হয়ত কৃষি ক্ষেত্রে ভালো তার নেতৃত্ব থাকবে কৃষিকাজে, কেউ হয়ত প্রশাসনে ভালো তার নেতৃত্ব থাকবে শাসনে, কেউ হয়ত আইনে ভালো- তার নেতৃত্ব থাকবে আদালতে এভাবে আমরা কি একটি পূর্ণ তারূন্যদীপ্ত কোন সাংগঠনিক শক্তি পেতে পারি না ? অবশ্যই পারি । কারন সেদিন আমরাই ঝাপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম আর তাই আজ মহান বিজয় দিবশ উদযাপন করতে পারি ।
এসো হে তরুনেরা, ঘরে বসে একজন, দুজনের সাথে চ্যাট করে সময় নষ্ট না করে, নেশায় নিজেদের ডুবিয়ে না রেখে, পার্টিতে উলঙ্গ নাচ না নেচে, জুয়া খেলে সময় নষ্ট না করে, পত্রিকা পড়ে হতাশ না হয়ে বের হয়ে আসো একসাথে কাজ করে দেশকে একটি তারূণ্য নির্ভর উদ্বিপ্ত নেতৃত্বের স্বাদ নিতে শেখাই । একবার যদি ডাক দিয়ে বের হও মনে রেখো তোমদের আটকিয়ে রাখে এমন কোন মিসাইল পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি হয় নাই । কারন তোমরা তরুণ, তোমরা জীবনকে অন্যের সুখের জন্য বিলিয়ে দিয়ে অভ্যস্থ ।
যে তরুণ মানুষ লেখাটি পড়বেন অনুরোধ রইলো নিজেকে তারুণ্য দীপ্ত মানুষ ভাবুন । আপনিই দেশের নায়ক । আজ পাগল বলে আপনাকে সরিয়ে দিলেও মনে রাখবেন দেশের কথা বলে পাগল হলেও তা দেশনায়কেরই প্রতিচ্ছবি । কেউ মান না দিক আপন নিজেই অনেক দামি ।
তাই………জাগ্রত করুন সকল তারুণ্যের শক্তিকে ।