প্রজন্ম `৭১ গাঁথা (**)
‘প্রজন্ম যতো একাত্তুরের’ তোমরা শোন
হাজার রাতে লেখা সেই কাহিনী,
`সোনামতি` গ্রামটির বুকে এসে একদিন-
বুটপায়ে নেমেছিল ‘পাকবাহিনী’ ।
তখনো ভাঙ্গেনি গ্রামবাসীদের ঘুম –
লালাভায় ভরেছিল লক্ষ বুলেট,
শত গ্রামবাসীর বুক ঝাঁঝরা করে
রঞ্জিত হয় আরো শত `বেয়নেট` ।
আগুনের উৎসবে ছিলনা কিছু
`অবোধ পশু` আর `বৃদ্ধ-শিশু` ;
ঝলশানো জীবনের সেই- পোড়া বাতাস,
সোনামতি থেকে আজো মুছে যায়নি ।।
পুতুল বিয়ের সেই মেহেদী হলুদ-
স্বপ্নে বিভোর ছিল একটি বোন,
লেলিহান শিখা ভাঙ্গে স্বপ্নেরই ঘোর,
বেছে নিল শেষ পথ ‘আত্মহণন’ ।
কতো মা-বোন সেদিন হলো লাঞ্চিত
ভাগ্যের দ্বার ভেঙ্গে হলো বঞ্চিত;
এ মাটির তরে তাঁরা বীরাঙ্গনা,
রক্তের দায় শোধে বীর-সেনানী ।।
হাজার ভোরের ন্যায় সেদিনের ভোরে
লাখো মসজিদে হলো ভোরের আজান,
ফজরের নামাযে মুসল্লিদের-
কাতারে দাঁড়িয়েছিল আমার বাজান ।
সেই কথা আজো মোরা কেমনে ভুলি
নামাযের কাতারেও চললো গুলি ,
মনের গহীণে ভাসে বাজানের স্মৃতি,
‘গণকবর’ আছে কালের স্বাক্ষ্যখানি ।।
কালজয়ী সেই সিন্দবাদের মতো-
টগবগে রক্তের ছিল এক ভাই ,
যুদ্ধের শিবিরে ট্রেনিং শেষে-
শত্রুর মোকাবেলায় করলো লড়াই ।
সেই ভাইয়ের তরতাজা রক্তের ঋণ
শোধে হলো দেশ আজ মুক্ত স্বাধীন ;
লাখো বীর-শহীদের আত্মত্যাগে
হায়েনামুক্ত এই স্বদেশখানি ।।
সেই সোনামতি গাঁয়ে সূরয্য-রঙ্গিণ
স্বপ্নের জাল বুণে আজো মানূষ,
সেই গাঁয়ের আকাশের নীল সীমানায়
উড়ে চলে `হায়েনাদের` নষ্ট ফানুস ।
সেই কথা আজ তোদের কেমনে বলি
বিকৃত মূখে মোদের শুধুই ‘বুলি’ ,
আত্মত্যাগী সেই ‘স্বজনকুলে’
শোধরানো জীবনের দেয় হাতছানি ।।
======
( ** মহান বিজয়ের মাসে চলন্তিকা .কম এর সম্মানীত পাঠকদের জন্য নিবেদিত )