ওরা রাস্তার মানুষ………….
ওরা রাস্তার মানুষ; রাস্তাই তাদের ঠিকানা
রাস্তায় অলিগলিতে রাত্রি যাপন করে
রাস্তায় রাস্তায় ঘুরাফেরা করে,
নোংরা জায়গায় বসে খানাপিনা সারে,
সেদিন দেখেছি ফ্লাইওভারের নিচে
মলিন ছেঁড়া পোশাক পড়া কিশোরী আর
গোটা তিন কিশোর নোংরা জায়গায় বসে নেশায় মগ্ন…
কিশোরগুলোর চুল ছিল উস্কোকুস্কো
মুখগুলোতে ছড়ানো দরিদ্রের কষাঘাত
গায়ে মাখানো এখানে সেখানে ছোপ ছোপ ময়লা..
এরা মাথা আঁচড়ায় না…
ব্রাশ করে না,
সাবানের নেই প্রয়োজনীয়তা
সুন্দরের ধার ধারে না
কে কি বললো তারা দেখে না
না বুঝারও বুঝি ভান ধরে থাকে,
সারাদিন ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে
পেটের প্রয়োজনে উচ্চিষ্ট খাবার খায়
কখনো কাগজ কুঁড়ায়; কখনো হাত পাতে…
দিনভর ঘুরাঘুরি শেষে এরা ক্লান্ত হয়;
সন্ধ্যায় কিশোর কিশোরীরা এক জায়গায় এসে মিলিত হয়;
সারাদিনের রোজগার দিয়ে এরা নেশা কিনে
হাসি ঠাট্টার পাশাপাশি নেশায় মেতে থাকে
রাত একটু গভীর হলে
রাস্তার কোন নির্জন স্থানে এরা একসাথে শোয়;
কোন একদিন কিশোরীটি হয় পোয়াতি
আগত বাচ্চার বাপ কে কিশোরী জানে না…
কিশোরী এ নিয়ে ভাবে না; বরং সে খুশি হয়..
বাচ্চা নিয়ে হাত পাতলে রোজগারটা বেশিই হবে বুঝি;
কষ্টে সৃষ্টে ফুটপাত আলো করে আসে
নামহীন বাপের শীর্ণ দেহের একটি বাবু।
এদের জীবনধারা এমনতরোই
এরা অন্যের অধীনে থাকতে নারাজ
নেশাময় রাস্তার জীবন এদের কাছে স্বর্গোদ্যান;
এরা শিক্ষা নেয় নেশা থেকে
আসক্ত হয়েও কেউ কাউকে ছাড়ে না;
আর আমরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও
স্বার্থের জন্য প্রিয়জনদের রক্তে স্নান করি;
ফাঁসিয়ে দিতেও দ্বিধাবোধ করি না..
আমরা একসাথে থেকেও কেউ কাউকে চিনি না…
আঁড়াল করে রাখি স্বার্থপর মন আনন্দ দু:খ কষ্ট, একে অন্যের হতে।
আমাদের জীবনটাই যেনো একটা ইলোশন,
যা দেখি তা দেখি না, যা বুঝি তা আবার বুঝিও না…
চোখের সামনে কখনো সমুদ্র আবার
কখনো সীমাহীন আকাশের হাতছানি..
আমরা ভেসে বেড়াই ইলোশন জগতে।