মহাবিজ্ঞানী তিতি ও তার প্রতি ভালবাসা
মহাবিজ্ঞানী তিতি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন।
পূর্ণিমার চাঁদ দেখছেন।একটি অসাধারণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
হঠাৎ তার মনে দুই একটা কবিতার লাইন সৃষ্টি হচ্ছে,এমন সময় পিএস আসল।
মুখে এক ঝলক হাসি।বলল-স্যার,কেমন আছেন?
মহাবিজ্ঞানী তিতি যে মহাবিরক্ত তা তার মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝা যাচ্ছে।তিতি বললেন-বলে ফেল
-স্যার বাংলাদেশ বিজ্ঞান সমিতির দুইজন বিজ্ঞানী আপনার সাথে দেখা করতে আসছেন।
-বল যে বাড়ি নেই।
-স্যার,উনারা বলল খুব দরকার
-আমি বলছি,বল যে বাড়ি নেই
-আচ্ছা স্যার,ধন্যবাদ
তিতি কিছু বলল না।পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে লাগল।
আজ বিশেষ মিটিং।সব সদস্যকে চিঠি পাঠানো হয়েছে,উপরে লেখা অতি জরুরী।সভাপতি মাহির মুখ গম্ভীর।মুখের দিকে তাকালেই বুঝা যায় যে সে কতটা চিন্তিত।ভাবছে পৃথিবীকে কি রক্ষা করা যাবে।
মিটিংয়ের সময় হয়ে গেছে।মহাবিজ্ঞানী তিতি ছাড়া সবাই উপস্থিত।বিশ্বের সেরা অনুজীব বিজ্ঞানী ফাবিও চিন্তিত।।সভাপতি শুরু করলেন-সম্মানিত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মেধাবীগণ,আপনারা জানেন যে আমরা এক গুরুতর সমস্যা নিয়ে আজ এক সাথে মিলিত হয়েছি।পৃথিবীর মানুষকে এ তথ্য এখনো জানানো হয়নি।এ সভার পর মিডিয়ার কাছে তথ্য প্রকাশ করা হবে।যদিও আশার বাণী কিছু পাচ্ছি না।তবুও আশাতো দিতেই হবে।আপনারা জানেন যে,সূর্য ক্রমান্বয়ে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে।আর কয়েক ডিগ্রী এগিয়ে আসলেই পৃথিবীর তাপমাএা হবে প্রায় একহাজার ডিগ্রী সেলসিয়াস।এত গরমে মরার হাত থেকে আপনাদের কিছু করতেই হবে।ইতিমধ্যে তিতি এসে গেছে।
এমন সময় সভাপতি মাহির করুন দৃষ্টিতে মহাবিজ্ঞানী তিতির দিকে তাকিয়েছেন।মহাবিজ্ঞানী তিতি মাথা নিচু করে আছেন।সভাপতি মাহির তিতিকে বললেন-মহাবিজ্ঞানী তিতি,আপনে যদি একটি উপায় বলে দিতেন।
তিতি সভাপতির দিকে তাকিয়ে বললেন-আমি কিভাবে উপায় দেব?আপনে কি মনে করেন,এ পৃথিবীর সব সমস্যা আমার দ্বারা সমাধান সম্ভব?
-আমি বিশ্বাস করি,আপনে চেস্টা করলে পারবেন
-আমি যাচ্ছি,এখন আমার অনেক কাজ আছে।আমার আত্নীয় আসবে।
এই বলে মহাবিজ্ঞানী তিতি চলে গেলেন।তার কোন আত্নীয় আসবে না।মিটিংয় থেকে আসার জন্য এ ধরনের মিথ্যা কথা বলতে তিনি অভ্যস্ত।সভার বাকিরাতো তার বিরুদ্ধে রেগে গরগর করছেন।একজন বিজ্ঞানী বললেন,তাকে গণ ধোলাই দেয়াই উচিৎ।এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কিনা……আরেক জন্য বলল-ফাঁসি দেয়া উচিৎ।সরাসরি ফাসি।
মহাবিজ্ঞানী তিতি আত্নগোপন করেছেন।বিজ্ঞান সমিতি তাকে হন্য হয়ে খুজছেন।কিন্তু কিছুতেই তার দেখা নেই।মহাবিজ্ঞানী তিতি ট্রেনে যাচ্ছেন।তার পাশে আছে বিশ বছরের মেয়ে।চেহারা যে খুব সুন্দর,তা বলা যাবে না।তবে দারুন লাগছে।মনে হয়,বয়সের ইফেক্ট।মহাবিজ্ঞানী তিতি কি যেন আনমনে ভাবছেন।মেয়েটা তিতিকে বললনে-এই যে শুনুন
মহাবিজ্ঞানী তিতি হেসে বললেন-বলুন
-আপনার সাথে কথা বলতে পারি
-বলুন
-আপনাকে কোথায় যেন মনে হয় দেখেছি
-দেখতে পারেন,অসম্বব কিছু না
-মনে হচ্ছে অনেক বার দেখেছি,
তা ধারণা করতে পারছি না।
-আমারতো মনে হয় আমার মত অন্য
কাউকে দেখেছেন
-আচ্ছা,পৃথিবী নাকি ধ্বংস হয়ে যাবে
-তাইতো মিডিয়া বলছে
-আপনার কি মনে হয়?
-যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে
-তার মানে আমরা সবাই মারা যাচ্ছি
-ধরেন দুই দিন আগে মরবেন,মরতে তো হতোই
-শুনেছেন এসময় মহাবিজ্ঞানী তিতি আত্নগোপন করেছেন।বিজ্ঞান সভার ধারনা,তিনিই একমাএ পৃথিবীকে বাচাতে পারেন।তার বিখ্যাত অক্ষবিচ্যুতি রোধ সূএ দিয়ে নাকি পৃথিবীর ধ্বংস রোধ করা যেতে পারে।কিন্তু এ নিয়ে তিনি পূর্ণ ধারণা দেননি।
এখন মহাবিজ্ঞানী তিতি রুমে বসে আছেন।আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ।পূর্ণিমার চাঁদ দেখছেন।কী সুন্দরই না লাগছে আলোক ছটা?মহাবিজ্ঞানী তিনি মনে মনে ভাবছেন –এত সুন্দর দৃশ্য কোনদিন দেখেন নি?
নিজেই মনে মনে অবাক হচ্ছেন।
মহাবিজ্ঞানী তিতি ফিরে এসেছেন।তিনি তার অক্ষবিচ্যুতি রোধ সমীকরণ বের করেছেন।তিনি এটা বিজ্ঞান সমিতির কাছে পেশ করেছেন।সবাই তো খুব খুশি।পৃথিবী আবারও বেচে গেল ধ্বংসের হাত থেকে।সভাপতি এটা সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছেন।
মহাবিজ্ঞানী তিতিকে সংবর্ধনা জানানো হচ্ছে।অজস্র লোক এসেছে।মহাবিজ্ঞানী তিতি ভাবতেও পারেন নি মানুষ তাকে এত ভালবাসে।তার চোখ দিয়ে জল পড়ছে।চোখের জলের মধ্যে আছে অবারিত আনন্দ।