Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

চার অকর্মন্য একসাথে(হাস্য রসাত্নক গল্প)

: | : ০৬/০১/২০১৪

১আজাদ আরমান আসাদ আকাশ তারা চার বন্ধু।সবসময় একসাথে থাকে।সবকাজ একসাথে করে।তাদের সর্বশেষ পরীক্ষা মাধ্যমিক ফেল ও তারা একই ইয়ারে একসাথে করেছে।চারজন একসঙ্গে ও বিতাড়িত হয়েছে ঘর থেকে।

চারবন্ধুর আজকে একসঙ্গে ভীষন ক্ষিধা লেগেছে।চারজনের পকেট ছেড়া একই সঙ্গে।চারজনের পকেটে একটা সিকি ও নাই।চার সিকি মিলে একটাকা হলে ও দেখা যেত কি কেনা যায়।তার উপায় নাই দেখে চারজন চারজনকে গালিগালাজ শুরু করল।

ফকিরের গোষ্ঠিগুলার সাথে বন্ধুত্ব হইছে পরস্পর পরস্পরকে এই বলে গালিগালাজ শুরু করল।

আজকে বৈশাখ মাসের দশতারিখ।মাথার উপর কড়া রৌদ।সবার মাথা তেতে আছে উত্তাপে।পাকস্থলী তেতে শুকিয়ে গিয়েছে খাদ্যের অভাবে।

চারজন উপবাসী।সিরিয়াস মুখ করে ভাবছে কি করা যায়।

সায়দাবাদ বাসষ্ট্যান্ড এ বসা চারজন।

এইসময় আরমানের প্রস্তাব দোস্তরা চল ছিনতাই করি বীরের ভঙ্গিতে তার উদাত্ত আহবান।

উঁহ ছিছকা ছুরির সাহস নাই উনি করব ডাকাতি।ফোড়ন কেটে বলে উঠে আসাদ আরেক অকর্মন্য।

ব্যাপারী বাপের পকেট টা যদি কাটতে পারতিস তাহলে বুঝতাম তুই বাপের বেটা ।যা যা এই মুখ আর দেখাসনা।ডোবাতে ডুবা মর তুই।

তুই মর বেটা।দুইজনের হাতাহাতি লেগে গেল।

শেষে চারজনের বৈঠকে এই সিদ্বান্ত হল তাদের সামনে এক গোবেচারা পরিবার দেখা যাচ্ছে মা বাবা তাদের দুই মেয়ে।চারজনের হাতে বিশাল চার বোচকা আর বাবা আর মায়ের অন্য হাতে খাচা যাতে আছে গোটা কয়েক মুরগী না মোরগ ঠিক বুঝতে পারলনা আর দুইটা পিঠার পাতিল হবে সম্ভবত।

এমন সময় একটা বাস তাদের দিকে আসতে লাগল।চারজন ঈশারায় বলল এখনই বোচকাগুলি নিব লাফ দিয়ে বাসে উঠে পড়ব।

যেই ভাবা সেই কাজ।চারজনে দৌড়ে এসে চার অসহায়ের ঝোলা ধরে টান দিল।

হায় হায় হায় হায় রে বলে বৃদ্ধ লোকটি তাদের পিছনে দৌড়ানোর চেষ্টা করল।ততক্ষনে চার ফাজিল বাসে চড়ে বসল।

এর মধ্যে আজাদের হাতের মাটির পাতিল মাটিতে পড়ে ভেঙ্গে গেল যেটাকে পিঠার পাতিল মনে করে খাওয়ার জন্য ছিনতাই করেছিল।

পাতিল ভেঙ্গে বের হয়ে আসল ইয়া বড় বড় শিং মাছ।অসময়ে এই উৎপাতের জন্য তারা বেশ বিরক্ত।এক দশাশই শিং গড়িয়ে এসে আজাদের পায়ে কাটা দিয়ে গুতা মেরে দিল।

মাগো বাবাগো বলে আজাদ লাফিয়ে চিৎকার করতে লাগল।এই অকর্মন্য কে বাচাতে কেও ই ছুটে আসলনা। সবাই চাচা আপন প্রান বাচা গতিতে কেও সিটের উপর পা তুলে বসে রইল কেও বা বাসের ষ্ট্যান্ড ধরে ঝুলে পড়ল।কেননা শিং মাছ গুলি সারা বাসের ভিতরে পানি বিনে সাতার কাটতে শুরু করল।

সারা বাস যাত্রীরা বাচার আর কোন রাস্তা খুজে পেলনা।সবাই একযোগে আল্লাহ র নাম জপতে লাগল।

২মূহূর্তের মধ্যে দজ্ঞযজ্ঞ বাধিয়া গেল সারা বাসে।মুরগী গুলি কক করিয়া সারা বাসে উড়িয়া বেড়াইতেছে।কোন কোন মুরগী আত্মহত্যার ভঙ্গিতে জানালা দিয়ে লাফ মারার চেষ্টা করছিল।তাতে সফলকাম হতে পারেনি বেচারী মুরগীগুলি।দুইটি মুরগী জানালার গ্লাসে বাড়ি খেয়ে একটি কন্ডাকটারের কাধে চড়ে বসল আর অন্যটি উড়ে এসে হুইলের উপর এসে বসল।

আরে বাপরে বলে ড্রাইভার এক্সিলেটারে চাপ দিয়ে জোরে ব্রেক কষে গাড়ী থামিয়ে দিল।এবার মুরগী লাফ দিয়ে পড়ল ড্রাইভরের কোলে।

এটারে সরা সরা যা যা বলে হাত দিয়ে মারার ভঙ্গি করে বাস ড্রাইভার মুরগী তাড়ানোর চেষ্টা করছে।

মুরগী কি আর বাংলা কথা বোঝে।সে তার কক স্বরে তার প্রতিবাদ জাননোর চেষ্টা করছে।মুরগী টা একবার বাড়ী খাচ্ছে মিররে।বাড়ী খাওয়ার পর পড়ছে ড্রাইভারের কোলে।ড্রাইভার বেচারা চেষ্টা করছে ঘাঢ় ধাক্কা দিয়ে মুরগী টারে ফেলতে ।ফাজিল মুরগী শক্ত করে শার্ট কামড়ে ধরে আছে।মনে হচ্ছে দুইজনে কুংফু কারাতে প্র্যাকটিস করছে।কেও কাওরে ধরতে পারতেছেনা।

রাগে ড্রাইভারের তোতলানী শুরু হয়ে গেল ।গালিগালাজের বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল কন্ডাকটার আর যাত্রী লক্ষ করে।

ওওওওওইইই তোোগো রার মুরগা সেই বেটা আর মুরগা সহ লাথি মাইরা বাস থাইকা ফালা।কন্ডাকটারের উদ্দেশ্যে দাত খিচিয়ে বলল।

এদিকে কন্ডাকটার বেচারা ঘুরতেছে লাটিমের মত মুরগী খপ করে ধরার জন্য।

তাকায়ে দেখে ড্রাইভার নিশ্চুপ সন্মোহিত হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।ড্রাইভার রহমত এমনভাবে শিংগীর চোখে র দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে শিংগী এখন সাপ হয়ে ছোবল দিবে।

রহমত মিঞা আস্তে আস্তে তার টাওয়েল বিছানো গদি ছেড়ে উঠে দাড়াল।আস্তে আস্তে যত নিঃশব্দে সম্ভব বের হওয়ার চেষ্টা করল।কিন্তু শেষ রক্ষা হলনা টের পেয়ে শিংগীটা আস্তে শিংটা পায়ের পাতায় ঢুকিয়ে দিল।

আধাঘন্টা পরে চার অকর্মর্ন্য বন্ধু তাদের বোচকা মুরগী শিংগী সহ গারবেজের পুটলীর মত রাস্তায় নিক্ষিপ্ত হল।

রাস্তায় আছড়ে পড়ার পরে চারজন ই ভ্যাবলা হয়ে গেল।কিছুক্ষন তদের ব্রেইন কাজ করছিলনা। কিভাবে এই রাস্তায় এসেছে কেন পড়েছে মনে করতে পারছিলনা।

চারজন ওইভাবে মাটিতে দম ধরে পড়ে রইল।

উঠতে গিয়ে আসাদের চোখাচোখি হয়ে গেল সামনের একমেয়ের সাথে তার বাবাসহ যাদের জিনিস নিয়ে তারা চম্পট দিয়েছিল।

বাবা মেয়েটা চিৎকার দিয়ে বলল সকালের চোরা গুলা।

এই ধর ধর চোর বলে প্রায় শখানেক মানুষ তাদের দিকে ছুটে আসতে লাগল।
চারজন দিকবিদিকশূন্য হয়ে রুদ্ধশ্বাসে দৌড়াতে লাগল।তাদের পিছনে মারমুখী জনতা।

৩ তিনজন দৌড়ে রাস্তার ওইপাড়ে চলে যেতে সক্ষম হল।আসাদ বেচারা শিংয়ের কাটার আঘাত খাওয়া পা নিয়ে বেশী দৌড়াতে পারলনা।সে বসে পড়ল মাটিতে।জনতা গোল করে তাকে ঘুরে ফেলল।যে যায হাতে যেই জিনিস ছিল সেটাকে অস্র বানিয়ে গুড়ুম গুড়ুম করে দিতে লাগল।কেও আখ খাচ্ছিল আখের ডান্ডা দিয়ে পিঠে দিল বাড়ি।কেও হাতের ছাতা রে বাকিয়ে দিল বাড়ী।

কার ও চিৎকার শোনা গেল।

সর সর তোরা ইবলিশের দল তোরা আমার পোলারে এরকম করি মারতাছস কেন ? আসল শয়তানগুলা তো চম্পট দিছে।এতো আমার পোলা।

জনতার মধ্যে একজন বলে উঠল এ আপনার পোলা হইলে দৌড় দিল কেন এইভাবে।

আসাদ এখন বাচার জন্য মরিয়া হয়ে বলল বাজান লোকগুলারে দেইখা ভয়ে দৌড় দিছি।

বয়স্ক লোকটির ভীড় ঠেলে বলল তোমরা সবাই যার যার কাজে যাও।বলে আসাদকে তুলে ধরল।

জনতার থেকে একটু দুরে এনে বলল ইস রে তুমি তো ভাল মার খাইছ দেখি কি করা যায় দরদ মাখা গলায় বলল বয়স্ক লোকটি।

পাশের মেয়েটি বলল চোরা চুরি করছে মাইর দিছে পাবলিক উচিত করছে।আমার ও ইচ্ছা করতাছে দুই ঘা বসাই।বাবা এসব চোর বাটপারগুলারে কেন তুমি বাচাও বাবা।

মারে সব অন্যায় দেখতে হয়না।এরা অন্যায় করছে অসহায় অবস্থায় পইড়া।

আসাদের চোখে পানি চলে আসল লোকটির কথা শুনে।সে লোকটির পা ধরে কাদতে লাগল। হ চাচাজান সত্যি তাই এই প্রথম বাজে কাজ করছি আমার জীবনে।ক্ষিধার চোটে আপনার জিনিস নিয়া পলায়ছিলাম।

তোমার আর বন্ধুরা কই? লোকটি জিজ্ঞাসা করল।

চাচা আমরা আসলে আপনরে খুজতেছিলাম জিনিস গুলা ফেরত দেওয়ার লাগি লজ্জায় সে ডাহা মিথ্যা কথা বলল যদি এই মূহূর্তে অনেক অনুশোচনা হচ্ছে এই ভাল মানুষটার জিনিস নেওয়ার জন্য।

বাকী তিনজনের মধ্যে একজনের কুকুরের সামনে পড়ল।কুকুর ঘেউ ঘেউ করে তারে তাড়া শুরু করল।

সে ও মাগো বাবাগো তারসাথে ঘেউ ঘেউ করতে সামনা সামনি ছুটতে লাগল ।কুকুরের তাড়া খেয়ে সে ভয়ে ভূলে গেল সে মানুষ না কুকুর।

দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে এক ছোট খাল পেল তাতে ঝাপ দিয়ে পড়ল।
কুকুরটা তখন ও খালের কিনারে দাড়িয়ে ঘেউ ঘেউ করে চলেছে।ভাবখানা এরকম যে আমি তোরে পাহারা দিচ্ছি ।কতক্ষন তুই খালে থাকবি।খাল থেকে উঠলে তোরে খাইছি।

বাকী দুইজনের মধ্যে একজনে বাসে উঠে গেল ।

আজাদ একা একা রাস্তায় দাড়িয়ে রইল।নিজেকে একা আর অসহায় মনে হচ্ছে ।এটা কোন জায়গা তাও সে চেনেনা। প্রথম বারের চার বন্ধু চারজায়গায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।তিনবন্ধুর জন্য তার চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছা করল।

৪ আজাদ অনেকক্ষন একা একা বসে রইল রেল লাইনের পাশে।সে এখন আছে বনানী রেল লাইনের পাশে।কিছুক্ষন ক্ষিধার যন্ত্রনায় পেট মোচড়ে ধরে বসে রইল।তারপর চোখের পানি মুছল পেঠে একটা থাপড় দিল বলল

কিছু একটা করতে হবে।কাজ করতে হবে।মেহনত করতে হবে।পেটের জন্য খাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হবে।সব ধান্ধা বাদ দিতে হবে।যদি অসহায় ওই পরিবারের জিনিস ছিনতাই না করত তবে কপালে এই দূর্ভোগ হতনা।তার বাকী বন্ধুরা কে কোথায় আছে কে জানে।লাফ দিয়ে উঠে দাড়াল।নিজেকে বেশ আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান মনে হল।তার পাশে দিয়ে ট্রেন চলে গেল।ট্রেন থেকে কেও কোন ঝোলা ছুড়ে মারল সেটা এসে সরাসরি তার মুখে আঘাত করল।চমকে সে বিকট লাফ দিল।তারপর দৌড়ে গিয়ে দেখার চেষ্টা করল কিছু আছে নাকি।প্যাকেটে যা ছিল তা দেখে মুখে হাসি ফুটল।প্রায় দুইদিন না খাওয়া মানুষের জন্য রাজভোগ ই বটে।দুইটা পুরানো কলা রুটি একটুকরা মাংস সম্ভবত সব বাসী সেজন্য ই ফেলে দেওয়া।কিন্তু তার এখন এসব দেখার সময় নাই।ক্ষুধার যন্ত্রনায় মরার চেয়ে খেয়ে মরি তার ভাবটা এরকম।

খেতে খেতে বিকট ঢেকুর ।সঙ্গে পানি নাই ।পানির খোজে এদিক ওদিক করতে করতে ছোট একটা ডোবার মত পেল ।বাধ্য হয়ে ডোবার ময়লা পানি একটু গিলে ফেলল এবং হড়হড় করে বমি করে সব ফেলে দিল ।তারপর শব্দ করে রাস্তার পাশে বসে কাদতে লাগল।পাশ দিয়ে যাচ্ছিল অফিস ফেরত এক চাকুরীজীবি।

এই কে?কে তুমি কাদতাছ কেন?লোকটি কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে।সে আরও জোরে ফুফিয়ে কেদে উঠল ।লোকটি ধরে তাকে উঠাল আহারে কি হইছে তোমার?চল চল আমার সাথে।পাশের এক ছোট তেহারী চায়ের দোকানে ঢুকল।

তুমি কি আমার সাথে খাবা বাবা?আমার ঘরের রান্নার ব্যবস্থা করিনা।এখান থেকে খাইয়া চইলা যাই।একা মানুষ।

দুইজনে একসাথে খেল ।লোকটির বাড়ীতে আপাতত আজাদের ঠাই হল আজদের।

আরেক অকর্মন্য আরমান সন্ধা মিলানোর পর একটু মাথা উপরে তুলে দেখল কুকুরটি আছে নাকি।যাক বদ কুকুরটা মনে হয় গেছে। তবু সাবধানের মার নাই। পা টিপে টিপে উঠল ।

আহ নাই।শীতে ঠক ঠক করে কাপতে লাগল।প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে পানিতে ডুবে ছিল।

হাটতে হাটতে অবসন্ন হয়ে যায়।এক পর্যায়ে এক বড় বাড়ীর সামনে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।

এখন খোজ করা যাক বাকী দুই অকর্মন্যের।আসাদ বেশ ভাল ই আছে।ওই ফ্যমিলির সাথে তাদের এক বড়লোক আত্মীয়ের বাসায় উঠল।বিয়ের বাড়ীর প্রচুর খাওয়া দাওয়া সবই হল থাকার জন্য ছোট একটা আশ্রয় হল।শুধু লোকের মেয়েটা যখন পাশ দিয়ে যায় হূহ চোরা বলে গাল দেয়।সেটা সে মুখ বুঝে সহ্য করে।আসলে সে তো চোরাই।

আকাশ একটা লোকাল বাসে লাফ দিয়ে উঠে পড়ছিল টাকা ছাড়া টিকেট ছাড়া।প্রথমে ড্রাইভার ভাড়া না পেয়ে থাপড় মারল।ড্রাইভারের মেজাজ সপ্তমের উপর চৌদ্দগুন হয়ে আছে তার চোরা কন্ডাকটার কোন ফাকে তার লুঙ্গীর কোচড় থেকে আজকের সব কামাই সতেরশটাকা নিয়ে পালাইছে।

রাগে ড্রাইভার দাতে কিড়মিড় করতে লাগল।সে আইডিয়া পেল। এটারে হেল্পার বানাই দেই।
অবশেষে আকাশের একধরনের আশ্রয় হল।এই বাসের হেল্পার।মন্দ না।কিছু একটা তো হল।

৫ চার বছর পরের কথা।আসাদ ট্রেনে করে যাচ্ছে।এই দীর্ঘ চার বছরে তারা চার বন্ধু একে অপরকে দেখেনি।কিন্তু বাইরে গেলে তাদের চোখ খুজতে থাকত।আল্লাহ একদিন অবশ্যই তার বন্ধুদের সাথে তাকে মিলিয়ে দিবেন এই বিশ্বাস তাদের দৃঢ়।আজ সে চারবছর বাদে তার গ্রামে বেড়াতে যাচ্ছে।তার সামনে এক উলোঝুলো মার্কা লোক বসে তার কাধে হনুমান না বাদর কে জানে।লোকটার খবর নাই।সে নাক ডাকিয়ে একমনে ঘুমিয়ে যাচ্ছে।এই হনুমান এক একবার একজনকে পছন্দ করছে আর আও আও করে জিহবা বের করে ভেংচি কেটে যাচ্ছে।

আসাদের পাশে বসেছে এক দম্পতি।তাদের পাচ ছয় বছরের ছেলে চিৎকার করে কান্না শুরু করল

বাবা আমারে ভেঙায়।বাচ্চাটা বানরটারে জবাবে একটা ভেংচি কেটে দিল।বানরটা এতে মহা খুশী ।উত্তেজিত হয়ে সারা সিটে শব্দ করে মাথা দুলিয়ে সার্কাসের ভঙ্গিতে সিটের উপর থেকে নিচে গড়িয়ে নামছে।মাঝে মাঝে দুই হাতে তালি দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছে।

ছোট বাচ্চা ছেলেটিকে শিম্পান্জী বানর টার অনেক মনে ধরেছে।বাচ্চাকে তার নিজের গোত্রের মনে হচ্ছে।নাচতে নাচতে ছেলেটকে ধরতে আসার চেষ্টা করতে ছেলের বাবা ভয় পেয়ে ব্যাগের বেল্ট দিয়ে বাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিল।বানরটি উল্টে গিয়ে পড়ল এক লোকের কোলে।রেগে কাই হয়ে বানরের মালিকের কাছে ছুটে আসল।

এই শি্পান্জীরে কিন্তু জানালা দিয়ে ছুইড়া ফালামু।এটারে বাইন্ধা রাখেনা কেন?

কেন ভাই আমার পোলা কি করছে আপনার সঙ্গে?এতক্ষনে শিম্পান্জীর মালিক ঘুম থেকে উঠে কথা বলল।

বানরটা মাথা নাড়িয়ে ক্রমাগত ভেংচি দিয়ে যাচ্ছে।
চুপ থাক বানরের বাচ্চা ভূড়ি গালায় দিব।বানরের দিকে ভেংচি কেটে বলল।

বানরটা সিটের উপর জোরে জোরে লাফিয়ে লাফিয়ে এখন ভেংচি কাটছে।

লোকটা বানরটাকে থাপড় দিতে গিয়ে আসাদের সঙ্গে চোখাচোখি।

চার বৎসর পরে দুই বন্ধুতে দেখা।আজাদ আসাদ দুইজন দুইজনকে পাগলের মত জড়িয়ে ধরল।
নির্দিষ্ট ষ্টেশনে দুইজনে নেমে পড়ল ।সি এন জি র অপেক্ষা করতে লাগলেন।হঠাৎ দুইজনের চোখ চলে গেল সামনে সানগ্লাস পরিহিত দুইজন ব্যাক্তির দিকে।দুইজন সানগ্লাস খুলে অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। আরমান আকাশ।

চার অকর্মন্য বন্ধুর মিলন হল।তবে এবার তারা আগের মতন অকর্মন্য না সবাই এখন বেশ কর্মঠ।সবাই কাজ করছে মোটামুটি।মাবাবা ভাই বোন আত্মীয়স্বজনের জন্য অনেক গিফট সহ ফিরেছে।মাবাবা সবাই অনেক খুশী।কোলে বসিয়ে সব ছেলেকে চুমু খাচ্ছে।

চার বন্ধু এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে আরেকটা ডিসিশান নিল এবার তারা আবার এস এস সি পরীক্ষা দিবে।এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ পাস তারা করবেই এবং একসাথে ই করবে।

সমাপ্ত।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top