Today 12 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

বংশাই নদীর তীরে

: | : ১৮/০১/২০১৪

বংশাই নদীর তীরে
হাড়িয়েছি মোর শৈশব কৈশোর,
বংশাই নদীর তীরে,
ঘাটে বাঁধা নাও, একহাজাড়ি, দু হাজাড়ি, পাঁচ হাজাড়ি,
ছেলেরা সব দৌড়ে এসে উঁচু গলুই থেকে,
ঝাপিয়ে পড়ে পানিতে,
আষাঢে ভরা নদী টই টম্বুর।
পাশেই ঝোকে আছে হিজল গাছ, নদীর জলে,
যেন ঘুমটা পরা নতুন বধু, লজ্জায় অবনত।
পাল তোলা নাও বেয়ে যায়, উত্তরে, দক্ষিণে,
ভাটিয়ালী গায় নায়ের মাঝি,
দেশ বিভাগী হয়েছে সে সখিরে হাড়িয়ে,
বঞ্চনার সুর বেজে উঠে দিক দিগন্তে,
পাখা ঝাপটায় সঙ্গিহীন বালি হাস।
বৃষ্টি ভেজা কাক ডানা ঝাড়ে
নিজেকে শুকিয়ে নিতে,
যেন ঝেড়ে ফেলতে চায়,
পৃথিবীর সকল জন্জাল।
বট বৃক্ষে শকুনির কান্না অদুরে,
যেন মাতৃহাড়া দুগ্ধ পোষ্য শিশু
কাঁদছে ক্ষুধার জালায় অঝোরে।
ঢেউয়ের তালে দোলে নৌকা,
হাল ধরে বসে মাঝি দৃঢ় চিত্ত।
পৌঁছতে হবে অবিষ্ট লক্ষ্যে,
মাঝ পথে ধমকা হাওয়া,
ঝড়, মস্তান, অস্রের ঝনঝনানি,
লক্ষ্য যার স্থির, চিত্ত যার অবদমনীয়,
হাল যার বজ্র মুষ্ঠিতে ধৃত,
তীর তার নাগালেই, অদুরে।
জীবন যুদ্ধে পরাজিত কৃষক,
ঘরে টুং টাং হাড়িপাতিলের শব্দ
নদী ভাঙ্গনে গ্রাস হয়েছে যার সব,
অনিয়ন্ত্রিত জন্ম সর্ব গ্রাসী পরিবার,
বংসাইর মত চলে যেতে হবে দূরে
দিবাবসানের পূর্বেই, শব্দ সেই প্রস্তুতির।
দুগ্ধ পোষ্য শিশু বুকে, কাঁখে একটি,
ডানহাতে অপরটি, দিশে হাড়া মা,
বিমূর্ষ বদনে তাকিয়ে নদীর পানে,
শুধুই দীর্ঘ শ্বাস প্রতিকার নেই,
সবলের রাজত্ব, আইন অকেজো,
প্রতিবাদে মৃত্যু নির্ঘাৎ।
তবু আশায় বুক বাঁধে মা,
বড় হবে তার সন্তান একদিন,
বেঁধে দিবে নদীর পার,
ভেঙ্গে দিবে সন্ত্রাসীর হাত,
ফিরে আসবে আবার,
বংশাই নদীর তীরে, পিতৃ পুরুষের ভিটিতে।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top