হারিয়ে যাবে
যে কবিতা হারিয়ে যাবে,
যে কবি হারিয়ে যাবে,
কালের গহব্বরে, হতাশার ভিড়ে।
আমি লিখছি সে কবিতা
যে কবিতা আমার আজন্ম তৃষ্ণার হাসি হোক,
যে কবিতা আমার অন্তরের গহীনের বেদনার বাঁশি হোক,
সুর তুলে তুলে হারিয়ে যাক হৃদয় কুয়াশার নীড়ে।
যে কবিতা লিখছি হারিয়ে যাবে,
যে কবি আমি হারিয়ে যাবো,
কালের গহব্বরে, হতাশার ভিড়ে।
সময় কুরেকুরে আজন্ম কবি,
মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে সোঁদা গন্ধের কবিতা,
বহুযুগ জেগে থাকা চাঁদনীর জ্যোৎস্নার গন্ধ,
যে জল জন্ম দেয়, যে প্রকৃতি বহমান দেহ-মন-আত্মা জুড়ে।
স্নিগ্ধতায় বহমান কবিতা হারিয়ে যাবে,
সৌন্দর্যে ভাসমান কবি হারিয়ে যাবে,
কালের গহব্বরে, হতাশার ভিড়ে।
রক্তের আন্দোলনে সাহসী সৈনিক কবি,
রক্তের আন্দোলনে হৃদযন্ত্রের ভয়াবহতা কবিতা,
সময়ের ছাপচিত্র ইতিহাস করে দেয় রঙিন বসন্ত,
ক্রুর হাসি হাসে হৃদয়ের প্রভাত শ্লোগানে, বসন্ত হারিয়ে যায় ধীরে ধীরে।
বসন্ত দৃশ্যমান কবিতা হারিয়ে যাবে,
যে কবি বসন্ত সৃষ্টি করে হারিয়ে যাবে।
কালের গহব্বরে, হতাশার ভিড়ে।
ডায়নোসরের যুদ্ধে জয়ী পৃথিবী কবি,
বরফ যুগের আঘাতে লন্ডভন্ড পৃথিবী কবিতা,
মানব সভ্যতার অভিযানে সিন্ধু থেকে মিশর জাগে,
তবু মিশে গেছে মানুষের দেহ হার মাটিতে, তা আজ রপের আদরে।
প্রিয়ার চঞ্চল দেহে নিঃশ্বাসে ছন্দপতনের কবিতা হারিয়ে যাবে,
যে কবি প্রিয়ার দৃষ্টির অসীমতায় হারায় নিজেরে হারিয়ে যাবে।
হারিয়ে যবে কালের গহব্বরে, হারিয়ে যাবে হতাশার ভিড়ে।
যে যুগ বন্ধি হয় রাজার হাতে সে কবি,
যে প্রভাবে পরশ বুলায় কুয়াশার প্রেমিকা সে কবিতা,
পৃথিবী চলে আসে মানুষের হাতে, তবু মানুষ করে বিধাতা নির্মান,
যে যুগ পাথরে বসে বসে পাথর নির্মান করি পৃথিবী তা হিংস্রতার অন্তরে।
গণমানুষের শ্লোগান কবিতা হারিয়ে যাবে,
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ কবি হারিয়ে যাবে,
কালের গহব্বরে, হতাশার ভিড়ে।
কোকিলের বুকে বাসা বাঁধা স্বপ্ন বিলাশ কবি,
বসন্তের বিকালে গোধূলির সুর কোকিলের গানের কবিতা।
চৈত্রের খরতাপে মাটি ফেটে হয় চৌচির যার বেদনা কবিতা,
জলের আলিঙ্গনের পানকৌড়ির স্বাধীনতা জেগে উঠে পাপিয়ার সুরে।
প্রতিটি স্বপ্নের যাযাবরবৃত্তি কবিতা হারিয়ে যাবে,
প্রতিটি স্বপ্নের যাযাবর কবি হারিয়ে যাবে,
হারিয়ে যাবে কালের গহব্বরে, হারিয়ে যাবে হতাশার ভিড়ে।
৩১১৪, ঢাকা।