আমরা করব জয় একদিন
অষ্টম পর্ব
বিপদের সময় বা বাহিরের কোন আক্রমনের সময় নোয়ার বাড়ী স্বয়ংক্রিয় ভাবে ছোট একটা চাকতির শেপে চলে আসে।এটম বুলেট দাহ্য পদার্থ যেটা দিয়ে আঘাত করা হোক না কেন চারিপাশের পারদের প্রলেপ থাকায় ভেঙ্কে ভেঙ্গে কয়েকটা অংশে পরিনত হয় ।পরক্ষনে সব অংশ আবার সংযোজিত হয়ে যেতে পারে।সকল বুলেট বোমের আঘাত রিভার্স ওয়েতে আক্রমনকারীর দিকে ফিরে যায়।কাজেই সহজে পেরে উঠছিলনা নোয়া আর আরিয়ানের সাথে যুদ্ধ করে মঙ্গলগ্রহের দুষ্ট সাইবর্গের কিলারবাহিনী ।তাদের বোম তাদেরকে আঘাত করছে।ইতিমধ্যে তাদের দুইটি যান সম্পূ্নরুপে বিদ্ধস্ত হয়েছে।কমপক্ষে বিশটি যান নোয়ার বাড়ীর চারপাশে ঘুরছে আর ক্রমাগত আক্রমন করে যাচ্ছে আরিয়ানকে বন্দী করার জন্য।
আরিয়ান তার স্পেস মেশিনে বসতে চাইল বাহিরে গিয়ে এদের সাথে মোকাবিলা করার জন্য।নোয়া জোর করে তাকে নিরস্ত করল।
যতক্ষন এই বাড়ীর ভিতরে আছ তুমি নিরাপদ ।বাড়ীর বাহিরে তোমার জীবনহানির আশন্কা দেখতে পাচ্ছি।তবে আমি সেই ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাচ্ছি মঙ্গলগ্রহের মানুষ।
ওরা তোমাকে এভাবে তাড়া করছে কেন ? নোয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে।
আমি মঙ্গলগ্রহের কিছু সিকিউরড ইনফরমেশন লীক করেছি।আরিয়ান বলল।যেটা তাদের সংবিধানে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
যদি জান এটা অপরাধ তবে করলে কেন? কি ইনরমেশনের জন্য এটা করেছ। নোয়া জিজ্ঞাসা করে।আইমা ব্যগ্র হয়ে তাকিয়ে আছে আরিয়ানের দিকে তার উত্তর শোনার জন্য।
আমি আসলে আমার জন্মরহস্য জানতে সচে্ট ছিলাম।কার ও কাছ থেকে আমি তথ্য পাচ্ছিলামনা আামার মত যন্ত্র মানুবদের সম্পর্কে।কোথা থেকে এসেছি কিভাবে আমার মত ক্লোনগুলিকে তারা বানাল।তাদের সাইটে এই শেষ তথ্য পেলাম ধ্বংসের আগে আমি পূথিবীর সর্বশেষ মানব ছিলাম।সেই শেষ মানবের মস্তিষ্কে আমার মত ক্লোনকে নাকি তৈয়ারী করা হয়েছে।
তুমি মানব?নোয়া আর আইমা একইসঙ্গে খুশীতে দেখতে থাকে আরিয়ানকে।
না এখন আমি টুইন মঙ্গলগ্রহের দোআশলা মিশ্রিত প্রানী।কিন্তু আমার মনে হয় তোমাদের সাথে আমার একটা যোগসূত্র আছে।আমি তোমাদের মত ভাবছি তোমাদেরকে বুঝতে পারছি।
ঠিক সেইসময় বিশালাকৃতির কামানের গোলা আঘাত করল নোয়ার বাড়ীটিকে ।বাড়ীটি ছোট ছোট কয়টি খন্ডে পরিনত হল।একখন্ডে নোয়া আটকা পড়ে গেল আরেক খন্ডে আরিয়ান ও আইমা।পারদের স্বচ্ছ আবরন ভেদ করে তারা পরস্পরকে দেখতে পাচ্ছিল ঠিকই।নোয়া হাতের ইশারায় দুইজনকে আশ্বস্ত করতে চাচ্ছিল।
প্রচন্ড শক্তিতে ধাক্কা দিতে দিতে তাদের বিচ্ছিন্ন অংশগুলো একত্রিত হল।নোয়া আরিয়ানের অংশের ভিতরে হাত ঢুকাতে চে্ষ্টা করল।পারদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী আবার নুতুন বন্ধন গঠন করে ফেলল অল্পময়ের মধ্যে ।সংযোজিত হয়ে গেল দুইজনের ছিন্ন অংশ।আর কিছু বিচ্ছিন্ন অংশ এখনও আলাদা হয়ে আছে সংযোজনের অপেক্ষায়।
সেই সময় প্রচন্ড জোরে বিষ্ফোনের মত হল পুরো বাড়ী তাতে কেপে উঠল যেন।এই প্রথমবারের মত নোয়ার বাড়ীর ছাদের কিছু অংশ উড়ে গেল।
আরিয়ান অ্স্থির হয়ে পড়ল মা ছেলের নিরাপত্তার কথা মনে করে।
নোয়া আমাকে ওদের হাতে তুলে দাও বন্ধু।আমার জন্য তোমাদের জীবন আমি বিপন্ন করতে পারিনা।
ঠিক সেই সময় আরেকটি যান সরাসরি আঘাত করল নোয়ার বাড়ীতে।মেশিনটি থেকে নেমে আসল তাদের দিকে বিকট দর্শন সাইবর্গ গেরিলা।
আইমা চিৎকার করে উঠল।
গেরিলা রোবটগুলি তাদের দিকে আসতে লাগল।
আরিয়ান একহাতে টান দিয়ে উঠাল আইমাকে।নোয়া লাফ দিয়ে বসে পড়ল আরেক পাশে স্পেস মেশিনটাতে।তাদেরকে তাড়া করছে মঙ্গলগ্রহের বিশালকায় গরিলা রোবটগুলি।
আরিয়ান মেশিনে লিখল অনেক আগর সভ্যতার সেই সন প্রথমে ২০১৪। দেখল
দেখল পৃথিবী জুড়ে শুধু সন্ত্রাস হানাহানি।তার পছন্দ হলনা ।সে পরিবর্তন করল আবার গতিপথ।এবার চলে আসল সেই পথ যখন শেষবারের মত পৃথিবী ধ্বস হয়েছিল।এই সেই স্মৃতিবিজড়িত জায়গা যেখানে জেলান এবং আইমার প্রেম হয়েছিল।তাদের শেষ দেখা হয়েছিল।
আরিয়ানের সব মনে পড়তে লাগল।সে মূহূর্তে চিনতে পারল আইমাকে।
নোয়ার মূখ দৃঢপ্রতিজ্ঞের মত।এখানে কিছুতেই পৃথিবী ধ্বংস হবেনা।আমরা কিছুতেই তা হতে দিবনা।
পৃথিবীকে ধ্বসের হাত থেকে বাচাতে হবে।
তিনজন দৃঢপ্রতিজ্ঞ হয়ে এই শপথ নিল।
(চলবে)