পদ্মার চর (একটি গীতি কবিতা )
কাক ডাকা ভোরে ঐ কে এলোরে
ডাকছে এমন সুরে ,
দোর খোলে কাশেম মাতব্বর কয়
বল খবর তরা করে ।
মাছ ধরিতে গিয়ে দেখে এলাম
পদ্মায় জেগেছে নতুন চর
সমির মাতব্বর আজি লোকজন নিয়ে
তুলছে সথায় তারা ঘর ।
খবর শুনে জ্বলে উঠে মাতব্বর
রাগিয়া, হুংকার ছেড়ে কয়
নতুন জাগা চর আমাদের হবে
মোদের, করতে হবে তা জয় ।
ডাক্ লাঠিয়ালদের যে যেথায় আছে
ভোরে ই যাবো মোরা চরে
চর আমার চাই- ই যত টাকা যাক
তাতে যদি বা কেউ মরে ।
খবর শুনে তা ই লাঠিয়াল সরদার
তার, পুত্রকে কাছে ডাকে
চর দখলের ডাক পরেছে আজি
যেতে হবে সাথে তোকে ।
পুত্র শুনে তা ই, মন খারাপ করে
বাবাকে স্ববিনয়ে কয়
রক্ত ঝড়িয়ে চর দখল করা
এমন কাজ মোর পছন্দ নয় ।
ছেলের মুখে এমন কথা শুনি
গর্জে উঠে কয় বাবা তার
লজ্জায় মরি যে, ভীতু ছেলে মোর
আমি এক লাঠিয়াল সরদার ।
আবার সেই লাঠিবাজি আবার সেই খুন
কেঁদে উঠেরে মায়ের মন
এলো বুঝি আবার মরণের ডাক
আজ, হাড়াবে কার বুকের ধন ।
তুমি যাবে যা ও মনিবের তরে
তোমার জীবন রাখো বাজি
পুত্রকে মোর ভাসিয়োনা রক্তে
কথা টুকু রাখ আজি ।
তিরস্কার করে পিতা হেসে কয়
আজি, আমিই সেরা সরদার
আমার ঘরে এক জন্মেছে ডরগপোক
এমন কথা বড়ই লজ্জার ।
পিতার তিরস্কার সহেনা মনে
আসলে, ভীতুর ডিম সে নয়
ভয় কাকে বলে জানেনা তা সেও
শুধু খুন তার পছন্দ নয় ।
মনের দুঃখে ভগ্ন হৃদয়ে সে
যায় তার পিতার সাথে সাথে
ভ্রক্ষেপ নে ই মায়ের আহাজারিতে
মহা খুশী পিতা তাতে ।
কোয়াশার ভোরে লাঠিয়ালেরা
গিয়ে, নামলো পদ্মার চরে
মার মার রবে শুরু হল যুদ্ধ
কে বাঁচে আর কেবা মরে ।
আহতের চিৎকার আর নিহতের লাশ
চরে, রক্তের বন্যায় ভাসে
পূর্ব দিগন্তে আজ নতুন সূর্য
হেন দৃশ্য দেখে হাসে ।
ব্যাথিত পুত্র স্বকরুণ চোখে
তার, পিতার পানে সে চায়
জয়ী তারা মহা খুশী পিতা
যেই মরুক কিবা আসে যায় ।
চেয়ে দেখে পুত্র আহত এক
অগ্নি দৃষ্টি, কষ্ট করে
বর্শা এক খানা ছুড়ছে তখন ই
তার, পিতাকে লক্ষ্য করে ।
তীর বেগে পুত্র ছুটে গিয়ে দাঁড়ায়
তার, পিতাকে আড়াল করে
ছুড়ে দে ওয়া বর্শা পিতার বুকেই
তার, পুতোকে হত্যা করে ।
মরণের আগে পুত্র কেঁদে কয়
লাঠিয়াল পিতার হাত ধরে
কথা দা ও বাবাআর নিয়োনা রক্ত
কভু, আমার মৃত্যুর পরে ।
কাশেম মাতাব্বর খুশীতে বলে
তুমিই দেশের সেরা সর্দার
তোমার ন্যায় শক্তিশালী লাঠিয়াল
এ তল্লাটে কহে নেই আর ।
পুত্রের বুকের বর্শা তুলে সর্দার
বলে অতি স্নেহ ভরে
তোমায় দেয়া বচন ভাঙ্গিলাম পুত্র
প্রতিজ্ঞা রক্ষারই তরে ।
চোকের পলকে সর্দারের বর্শায়
গেথে গেল কাশেম মাতাব্বর
হায়ানাদের হাত থেকে মুক্তি পেল
পদ্মার যত মানুষ আর চর । ।