Today 10 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

মায়ার সংসার ৩য় পর্বের

: | : ২৮/০১/২০১৪

মায়ার সংসার ২য় পর্বের পর..
এক দিন পরে মায়ার জ্ঞান ফিরল। শুধু শিশির শিশির করছে । নার্স জিজ্ঞেস করল শিশির কে ?
মায়া: আমার স্বামী।
নার্স : সে কোথায় ?
মায়া: বাড়িতে
নার্স : বাড়িতে কেন ? পলাশ ভাই আপনার বোনের স্বামীকে তাড়াতাড়ি খবর দিন।
মায়া: পলাশ তোর ভাইয়া এলনা এখনো , একটু খবর দে । আমি বাঁচব না।
পলাশ: আচ্ছা আপু আমি আজই খবর দিচ্ছি ।
পলাশ খুব চিন্তায় পড়ে গেল। কিভাবে শিশিরকে জানাবে। আবার গ্রামে যেতে হবে । আবার সেই বিড়ম্বনা। তার পরও বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে শিশিরের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল।
পড়ের দিন সকাল সকাল শিশিরের গ্রামের বাড়িতে পলাশ হাজির।যতারীতি শিশিরের মায়ের সাথে দেখা । সালাম দিল পলাশ । সালামের উত্তর না দিয়ে উল্টো জিজ্ঞেস-তুমি এখানে কেন ?
তোমাকে না আর আমাদের বাড়িতে আসতে না করেছি ।
পলাশ: আন্টি আমার আপু খুব অসুস্থ,ভাইয়াকে খুব দরকার।
শিশিরের মা: তোমার বোনের সুখ না অসুখ দেখার সময় শিশিরের নেই আর সে এখন আর দেশে ও নেই ।
পলাশ: আন্টি আপনি না বলেছিলেন সে তার শ্বশুর বাড়ি আর এখন বলছেন দেশে নেই ।
শিশিরের মা : ঠিকই বলছি । সে আজ সকালে বিদেশ চলে গেছে । ওর শ্বশুর ওকে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে আর একটা মটর সাইকেল ও দিয়েছে ।
পলাশ: সে বিদেশ গেছে তা হলে মটর সাইকেল কে চালাবে ?
শিশিরের মা : কেন আমার ছোট ছেলে চালাবে ।
পলাশ: বা ! বিয়ে করল একজন আর যৌতুক পেল আরেক জন।
শিশিরের মা : তুমি বাজে কথা বলনা। তুমি চলে যাও । নিজের বোনকে তো আমার ছেলের কাছে গছিয়েছ আর কি দিয়েছিল তোমার মা-বাবা ? । কিছুই দেওনি।
পলাশ: সেটা আমাকে বলছেন কেন ? আপনার ছেলেই তো দেখে শুনে বিয়ে করেছিল।আপনাদের যৌতুক দরকার ছিল তা আমাদের একবার বলতেন। আমাদের না জানিয়ে কেন বিয়ে দিলেন।
শিশিরের মা : সেটা আমাদের ব্যাপার,তুমি চলে যাও আর কোন দিন এদিকে এসোনা।
পলাশ নিরাশ হয়ে ফিরে এল।

রাতে পলাশ বোনের হাসপাতে বেডের পাশে বসে বোনকে আদর যত্ন করতে থাকে। মায়া বার বার ওর কাছ থেকে শিশিরের খরব শুনতে চায়।পলাশ বলে “ভাইয়া আর কয়েক দিনের মধ্যেই আসবে” ।

সাত দিন হাসপাতালে থাকার পর মায়া মোটামুটি সুস্থ। এবার বাড়ি ফেরার পালা। ডাক্তার আজকে ফাইনাল চেক আপ করবে এবং বেশ কিছু টেষ্ট করতে দিয়েছে সেগুলোর রিপোর্ট ও আজ দিবে। রাত ৮টার সময় ডাক্তার রুমে এল । সব কিছু ভাল ভাবে দেখলো আর একটি রিপোর্ট কয়েকবার দেখল।
ডাক্তার হাসি দিয়ে মায়ার মাকে বলে “মিষ্টি কোথায়”!!
ডাক্তার : আপনি নানী হবেন, নানী।
মায়া,পলাশ ও তাদের মা হতবাক । ডাক্তার কি বলে !
এত বড় সুখের খবরে সবাই যেন মর্মাহত. এ যেন মরার উপর খরার ঘা। মায়ার মাথায় বজ্রাঘাত।
মায়ার মা ডাক্তারকে কিছুই বুঝতে দিল না । অবশ্যই মিষ্টি হবে । পলাশ আপাকে মিষ্টি খাওয়া।
মায়ার মার মুখে খুশির ভাব অন্তরে চাপা কষ্ট। মায়া যেন কষ্ট না পায় সেজন্য হাসি খুশি থাকতে চায় মায়ার মা। পরের দিন সকালে রিলিজ করে মায়া তার মায়ের সাথে মায়ের বাসায় চলে গেল।
মায়া মনে মনে ভাবে এই সময় তার শিশির কে খুবই দরকার। মায়ার সেই মধুর রাতটির কথা মনে পড়ে । কি ঘটে ছিল সেই রাতে আর শিশির ই কিকি কথা বলেছিল। কত পরিকল্পনা ছিল দু’জনের । আজ মায়া একা।নতুন অতিথীর আসছে আর শিশির নেই সাথে। মায়া মনে মনে ভাবে এক দিন না এক দিন শিশির অবশ্যই ফিরে আসবে। তার জন্য না হলেও তার সন্তানের জন্য অবশ্যই আসবে।
বেশ কয়েক মাস কেটে গেল। মায়া তার ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে মায়ের কাছেই থাকতে শুরু করলো। কয়েক মাস পরে কোল জুড়ে এল এক পুত্র সন্তান। দেখতে নাকি ঠিক শিশির। নানী তাকে ছোট সাহেব নাম রাখলো। মাঝে মাঝে ছোট শিশির ও ডাকে। মায়া নাম রাখলো নান্টু।
নান্টু মায়ার জীবনের এক অবলম্বন। শুরু হলো মায়ার জীবনের আরেক অধ্যয়।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top