মুক্তি যুদ্ধের গল্প ( দ্বাদশ পর্ব )
মাঝে বেশ কিছুদিন পার হয়ে গিয়েছে জরুরী কাজে জড়িয়ে পরায় বেশ কিছু দিন হয় শুভদের বাসায় যাওয়া হয় না । অবশ্য ফোনের মাধ্যমে নিয়মিত কথা হয় । ছেলে দুটোর জন্য মায়া হয় । কিন্তু তার পর ও নিয়মিত যোগাযোগ রাখা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে । নিজের অফিস ও সংসারের চাহিদা মিটিয়ে তার ফাঁকে ফাঁকে ওদের খোঁজ খবর রাখতে হয় । তাই আজ অনেক দিন পর আমাকে দেখে শুভ ও অনিরুদ্ধ খুশীতে টগ বগ করতে লাগল । সেই সাথে অভিমানে কিছুক্ষণ কথা ও বললো না আমার সাথে । আমি বললাম—
বাবাজিরা, তোমরাতো জাননা, আমিতো অফিস করি । তাছারা আমার বাসায় তোমাদের মতো দুটি বাবু আছে । তাদেরকেও সময় দিতে হয় ।
শুভ বললো— মামা আজ কিন্তু থাকবেন ।
আমি বললাম—ঠিক আছে কথা দিলাম , আজ থাকবো ।
শুভ বললো—মামা তাছাড়া আজ কিন্তু —।
আমি বলি আজ কিন্তু কি ভাগ্নে ? অবশ্য আমি জানি ওদের আজ কিন্তুটি কি? আজ কিন্তুটি হচ্ছে মুক্তি যুদ্ধের গল্প শুনা ।
শুভ বললো—ভুলে গেলেন মামা ? সেই যে রাতে —-।আসলে আমি ভুলিনি । ওরা বসে থাকে মুক্তি যুদ্ধের গল্প শুনার জন্য ।ওদের নিকট মুক্তি যুদ্ধের গল্প যেন আমাদের সেই ছোট সময়কার রাক্ষস খোক্ষসদের গল্পের মত । মুক্তি যুদ্ধের গল্প খুবই উ ৎসাহ নিয়ে শুনে । আমি শুভর নানুর সাথে দেখা করলাম । শুভর নানু ভাল আছে । কিন্তু তার বয়স হয়েছে, তা ছাড়া আমরা যতই বলিনা কেন আমাদের বাঙ্গালী সমাজ ব্যবস্থায় কোন মেয়ের যদি বিবাহিতা জীবনে শুখ না হয় তা হলে সে যত স্বাধীন মনোভাবের মেয়েই হোকনা কেন জীবন নিয়ে সেও চিন্তিত থাকে এবং তার মা বাবার তো চিন্তার কোন সীমা পরিসীমাই থাকে না । শুভর মা একজন উচ্চ শিক্ষিতা মহিলা এবং একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বটে তবে তার মা কিন্তু এ যুগের মেয়েও নন এমনকি ইউরোপীয়ান মেয়েও নন । বাঙ্গালী মেয়েদের বিবাহিত জীবন সুখের না হলে তার বাবা মা মরেও শান্তি পান না । কাজেই শুভর নানীর দিকে তাকালেই বুঝা যায় যে দশ্চিন্তা তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে । তিনি অতি কষ্ট করে এবং অতি যত্ন করে মেয়েটিকে বড় করেছেন অথচ একটি সুখের ঘর দিতে পারেননি । এক জন বাঙ্গালী মায়ের জন্য এটিই সব চেয়ে বেশী কষ্টের বিষয়। কাজেই শুভর নানী এ কষ্টের হাত থেকে কবে রক্ষা পাবেন নাকী আদৌ কোন দিন মুক্তি পাবেন কিনা তা একমাত্র উপরওয়ালাই জানেন ।আমরা রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজেদের রুমে এসে অবস্থান নিলাম ।
আমি কোদালা ব্রীজের অপারেশন সম্পর্কে তোমাদের বলেছি । সেই অভিযানে সফলতা পেয়ে আমরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে পাথর ঘাটা ক্যাম্পে অবস্থান করছিলাম । তখন সময়টি ছিল সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর মাসের প্রথম দিক । আমাদের পাথর ঘাটা ক্যাম্পের পূর্ব দিকে উচু মাল ভূমি আর পশ্চিম দিকে নিচু ভূমি । পশ্চিম দিকে পাথর ঘাটা থেকে করটিয়া পর্যন্ত বর্ষাকালে বন্যার পানিতে তলিয়ে যেত । যাতায়াত করতে হতো নৌকায় । তখন লগি বৈঠা নির্ভর নৌকা ছিল । বর্তমান যুগেতো লগি বৈঠা বা পাল তোলা কোন নৌকা দেখাই যায় না । সব নৌকাতেই ইন্জিন লাগানো । তোমরা তো দেখনি ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে আমাদের দেশে তখনও ইরি ধান চাষের প্রচলন আসেনি । বর্ষাকালে থাকতো মাঠ ভর্তি সবুজ আমন ধানের গাছ দল বেঁধে ভেসে আছে । তখন আমন ধানের যে জাত ছিল সে গুলো পানির সাথে সাথে বাড়তে পারতো । পানি যত বাড়তো ধানও তত বাড়তো । আবার পানি যখন কমতে থাকতো তখন ধান গাছ আস্তে অস্তেনিচের দিকে নেমে আসতো এবং শেষটায মাটিতে বিছিয়ে পরতো । এতে প্রচুর ধান হতো । কিন্তু সমস্যাও ছিল । প্রায় প্রতি বছরই পাথর ঘাটার পশ্চিমের এলাকার যেখান দিয়ে ১০/১৫ ফুট পানি হতো সেই সকল এলাকার ধান গুলি কার্তিক মাসে একবার কমে যাওয়ার পরে পূনরায় পানি বেড়ে গেলে সেই সময় উত্তর দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হতো, সেই বাতাসের ধাক্কায় পানির স্রোতের সাথে সমস্ত ধান দক্ষিণ দিকে ভেসে ভেসে চলে যেত । কোন ক্রমেই সেই সকল ধান আটকিয়ে রাখা যেত না । যার ফলে মানুষ কোন ফসলই পেত না । শুধু মাত্র শীত কালীন রবি শষ্য পেত । কিন্তু বর্তমানে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে । এখন আর মানুষ আমন ধানের চাষ করে না । রবি শষ্যও বুনে না। বন্যার পানি নেমে গেলে ঐ সকল জমিতে ইরি ধানের চাষ করে । আর সারা শীত কাল ধরে ইরি ধানের চাষ হয় এবং পূনরায় বর্ষা কাল আসার আগেই ধান কেটে গোলায় তুলে ফেলে । ফলে মাঠ থাকে ফাঁকা । বর্ষার পানিতে মাঠ ডুবে গেলে সারা মাঠ পানিতে একদম থৈ থৈ করে ।সারা এলাকা দরিয়ার মত দেখা যায় । যে কোন দিকে তাকালে সাগরের মাঝে মাঝে দীপের উপর যেন সবুজ গ্রামের মত দেখা যায় । তোমাদের মা দেশে ফিরলে যে কোন এক বর্ষায় তোমাদের সেই সব এলাকা দেখাতে নিয়ে যাব ।
আমরা যে কথা বলছিলাম, পাথর ঘাটা ক্যাম্পে আমরা ভালই দিন কাটাচ্ছিলাম । কাঁচা রাস্তার উপরের পানি নেমে গেছে । মাঠের নিচু জায়গায় পানি আছে, উচু জায়গায় নেই । হানাদাররা যখন এই ক্যাম্পে অবস্থান করছিল তখন যে সব লোক স্বউৎ সাহে তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে এবং হানাদারদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার লোকদের অত্যাচার করেছে মুক্তি যোদ্ধারা খুঁজে খুঁজে তাদের ধরে এনে যারা বেশী অত্যাচারী ছিল তাদের মেরে ফেললো । পরে শুনেছি কম অপরাধী যাদের ছেড়ে দিত তাদের নিকট থেকে কোন কোন কোম্পানীর অফিসাররা মোটা অংকের টাকা আদায় করতো । অবশ্য কথাটা আংশিক সত্য হতেও পারে । কারণ প্রতিটি কোম্পানিতে এত গুলো মুক্তিযোদ্ধা , এদের খাওয়া পরার জন্য তো কোন সরকারী বরাদ্ধ ছিল না । তাহলে খাওয়া পরা চলতো কিভাবে ? আমি যেহেতু কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা এবং অফিসার পর্যায়ের কেহ ছিলাম না তাই এই বিষয়ে আমার পরিস্কার কোন ধারনা নেই । এখন আমি যে সময়ের কথা বলছি , ঐ সময় প্রধান শহর এবং মহা সড়কের বাইরে হানাদারদের ক্যাম্প ছিল না বললেই চলে । কিন্তু আমাদের পাথর ঘাটার পশ্চিম দিকে বাশাইল থানা সদরে তখনও হানাদাররা অবস্থান করছিল ।প্রায়ই খবর আসছিল বাশাইল থানা ক্যাম্প থেকে পাক সেনারা রাজাকারদের সহায়তায় থানার বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে জনগনের সম্পদ লুণ্ঠন করছে । কোন প্রকার প্রতিরোধ না পেয়ে তাদের লোভ এমন বেড়ে গেল যে তারা দিনে দিনে থানা থেকে পূর্ব দিকে বেশ দূরে চলে আসতে লাগলো । তখন বাশাইল পাথরঘাটা রাস্তা থেকে পানি নেমে গিয়েছে । মাঠের যে সকল স্থান নিচু সেখানে পানি আছে আর যে সকল স্থান তুলনা মূলক ভাবে উচু সে সকল স্থান শুকিয়ে গিয়েছে এমন অবস্থা । এই সুযোগে পাক হানাদাররা জেগে উঠা সড়ক দিয়ে হেটে এসে গ্রামে ডুকে পরে লুটপাঠ করতো । একদিন হঠা করে খবর এল পাক সেনারা লুঠতরাজ করার জন্য রাশরা গ্রামে ঢুকেছে । আমরা কাল বিলম্ব না করে ছুটে চললাম রাশরা গ্রামের দিকে । রাশরা গ্রাম বাশাইল থানা সদর থেকে বেশ দূরে । প্রায় ৪ কি, মি, পূর্বে । কোন পাক সেনা ক্যাম্প ছেড়ে এত দূরে আসার কথা নয় । আসলে লোভে পড়লে মানুষের যা হয় । লুঠতরাজ করতে করতে তাদের লোভ এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, রাশরা গ্রাম থানা সদর হতে এত দূরের তা তারা উপলব্দিই করতে পারেনি । আমরা রাশরা গ্রামের দক্ষিণ পাশের রাস্তায় পৌঁছলাম । পাক সেনাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আমরা পশ্চিম দিকে এক কি, মি, দূরে আমাদের একটি গ্রুপ প্রেরণ করলাম, যাতে আমরা পাক সেনাদের আক্রমন করলে তারা বাশাইলের দিকে পালিয়ে যেতে না পারে । আর তারা আক্রান্ত হলে থানা সদর থেকে কেহ যেন তাদের সাহায্য করতে না পারে আমরা ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখলাম পাক সেনারা মূল রাস্তা থেকে উত্তর দিকে যে সব রাস্তা চলে গিয়েছে সেই রাস্তা ধরে গ্রামে ঢুকে গিয়েছে । আমরা মূল রাস্তাকে আর হিসেবে ব্যবহার করে রাস্তার দক্ষিণ পাশ দিয়ে পজিশন নিলাম যাতে গ্রাম থেকে লুঠপাট করে ফেরার পথে তারা এই রাস্তায় আসলেই আমরা আক্রমন করতে পারি । পজিশন নিয়ে অবস্থান চলতে লাগল । গ্রাম থেকে কান্না কাটির শব্দ শুনা যাচ্ছিল । আমরা এত দূরে বসে থেকেই যেন তা সহ্য করতে পারছিলাম না । আমাদের হাতে অস্র গুলি থাকা সত্ব্যেও আমাদের লোকদের তারা অত্যাচার করছে আমরা কিছুই করতে পারছিনা । কারণ এই রাস্তা থেকে উত্তর দিকে নামলে হানাদাররা যে সকল বাড়িতে চড়াও হয়েছে সেসকল বাড়িতে পৌঁছানোর আগে আমরা কোন আর পাবো না । কাজেই বাড়িতে পৌঁছানোর আগেই পাক সেনারা আমাদের দেখে ফেললে আমরা মাঠের মাঝেই মারা যাবো। সে কারণেই আমরা মানুষের কান্নায় এগিয়ে যেতে পারছিলাম না । আমাদের নিদির্ষ্ট জায়গা দেখানো হয়েছিল পাক- সেনারা সেই পর্যন্ত আসলে আমরা গুলি ছুড়তে শুরু করবো । আমরা এখানে আসার সমও রাস্তার দক্ষিণ পাশ ঘেসে রাস্তার পেট বেয়ে হেটে এসেছি । কাজেই পাক সেনারা আমাদের দেখতে পায়নি । তাছারা পাক সেনা ও রাজাকারদের দ্বারা ঐ এলাকার মানুষ এতই অতিষ্ট হয়েছিল যে, আমাদের দেখেও তারা আমাদের উপস্থিতির কথা রাজাকারদের জানায়নি । আমরা অপেক্ষা করতে করতে ১২.৩০ টার দিকে পাক সেনারা রাস্তায় নেমে এল ।তারা হাটতে থাকলো বড় রাস্তার দিকে । কিন্তু তাদের আগে পিছে রাজাকাররা হাটতে থাকলো । আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম যে, রাজাকাররা কখনও পিছনে যায় কিনা । কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর যখন আমাদের নির্ধারিত স্থান পার হয়ে যেতে লাগলো তখন আমরা গুলি চালাতে লাগলাম । প্রথম গুলি বর্ষণেই সামনের রাজাকার দুইজন পড়ে গেল । আর পিছনের সবাই দ্রুত শুয়ে পড়লো । তার পর তারা মাঝে মাঝে আমাদের প্রতি গুলি ছুড়তে লাগলো । প্রথম গুলি আমরা রাস্তার উপর শোয়ে শোয়ে করেছিলাম বলে আমাদের গুলি দুইজন রাজাকারকে আঘা করেছিল । কিন্তু পাক সেনা ও অন্য রাজাকারেরা যখন আমাদের দিকে গুলি ছুড়তে লাগলো তখন বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তার দক্ষিণ পাশে নেমে গেলাম । এতে আমরা নিরাপদ স্থানে গেলাম বটে কন্তিু রাস্তার দক্ষিণ পাশ থেকে পাক সেনাদের দেখা যাচ্ছিল না । ফলে দুইজন আহত রাজাকার ফেলে রেখে বাকীরা পূনরায় পিছনের বাড়িতে উঠে গেল । তার পর থেকে গুলি বিনীময় চলতে থাকলো । প্রায় দুই ঘন্টা পর থানা সদর থেকে অপর একটি টীম এলো আক্রান্তদের উদ্ধার করতে । কিন্তু গ্রামের পশ্চিম পার্শে পৌঁছা মাত্রই আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আক্রমন করলো । ফলে তারা ঘন্টা খানেক সময় ধরে গুলি বিনীময়ের পর থানা সদরের দিকে ফিরে গেল । পশ্চিম গগনে ঢলে পড়া সূর্য় আস্তে আস্তে অস্তমিত হলো । এদিকে পাক সেনারা আর কোন গুলি করতে ছিল না । আমরা রাস্তা পার হয়ে ধান ক্ষেতের মাঝ দিয়ে বুকে হেটে যে বাড়ি থেকে এতক্ষণ গুলি হলো সেই বাড়ির পশ্চিম পার্শের নিকটতম বাড়িতে গিয়ে পৌঁছলাম । আমাদের কমান্ডার উর্দ্দু ভাষায় কথা বলতে পারতেন । তিনি উচ্চ স্বরে ডেকে ডেকে পাক সেনাদের আত্ম সমর্পন করতে বলতে থাকলেন ।ঘন্টা খানেক পরে দেখা গেল তিন জন পাক সেনা অস্র উপরে তুলে বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে এল । আমাদের ৫ জন তাদের দিকে রাইফেল টার্গেট করে ধরে রইল ।বাকীরা দুই দিক থেকে পাক সেনাদের নিকট চলে গেল ।তিন জন পাক সেনা সত্যিই আত্ম সমর্পন করলো । ঐ বাড়িতে তল্লাশী করলাম । সাতটি রাইফেল পাওয়া গেল । কিন্তু কোন গুলি পাওয়া গেল না ।বুঝা গেল শেষ গুলি থাকা পর্যন্ত তারা লড়ে গিয়েছে । জানা গেল বেলা ডুবার সাথে সাথে রাজাকাররা রাইফেল ফেলে পিছন দিক দিয়ে নেমে মাঠের দিকে চলে গিয়েছে । তারা এই তিন জন পাক সেনাদের তাদের সাথে নেয়নি । যার ফলে তারা আত্ম সর্মপন করতে বাধ্য হয়েছে । আমরা উদ্ধারকৃত অস্র শস্র ও গ্রেফতারকৃত তিনজন পাক সেনা নিয়ে বাড়ির দক্ষিনের রাস্তায় এসে দেখি দুইজন রাজা কারের মৃত দেহ পরে আছে । বুঝলাম প্রথম আক্রমনে যে দুইজন মারা গিয়েছিল এরা তারাই ।পাক সেনাদের দেহ তল্লাশী করে দেখা গেল তাদের তিন জনেরই পায়ের রানে গুলি লেগেছে, কিন্তু পা ভাঙ্গেনী । তাই হাটতে তাদের তেমন কোন অসুবিধা হচ্ছিল না ।তবে সত্য কথা এই যে আমাদের বাঙ্গালী কোন যোদ্ধার পায়ে গুলি লেগে এমন গর্ত হলে সে বাঁচতো কিনা সন্দেহ আছে । আমরা আটককৃত পাক সেনাদের নিয়ে পাথর ঘাটা ক্যাম্পে চলে এলাম এই যুদ্ধে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ক্ষতি হল না । বরং সবার মনোবলের বেশ উন্নতি হলো। মনে হতে লাগলো সত্যিই আমাদের দেশ স্বাধীন হতে আর বেশী দেরী নেই । শত রাগ থাকলেও আমরা ধৃত পাক সেনাদের হত্যা করিনি । যুদ্ধ শেষে আমরা তাদের জমা দিয়েছিলাম ।কারণ তোমরাতো জাননা । জেনেভা কনভেনশন অনুসারে যুদ্ধের সময় বিপক্ষের কোন যোদ্ধা আত্ম সমর্পন করলে তাকে হত্যা করা নিষেধ ।আমাদের কমান্ডার সে কথা জানতো বলেই ধৃতদের হত্যা করতে দেন নি ।