স্পেস-১৪(অংশ-১৫)
আফিয়া কিছুটা ভেবে বলে-আমার তো অন্যরকম মনে হচ্ছে।
-কি রকম?
-আমরা সম্ভবত পৃথিবীর দিকে যাচ্ছে।
-মানে কি?
-আমাদের নভোযানের গতিপথ কেউ ঘুরিয়ে দিয়েছে।ঘুরিয়ে একেবারে অপোজিট করে দিয়েছে।
টিক উদ্বিগ্ন হয়ে বলে-এসব কি বলছ?
-কম্পাসের মুখ দেখে আসলাম।পৃথিবীর দিকে ঘুরানো।
-তাহলে তো উলটো দিকেই যাচ্ছে।
-রাডারটাও ডিএক্টিভেট করা।
-সেজন্যই তো ওদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে না।
-এসব উলটো পালটো হচ্ছে কেন?
-যদি অভয় দেন,তবে একটা কথা বলতে পারি।
-বল।
-এসব জনাব ফিকের কাজ বলে মনে হয়।
-কোন প্রমাণ আছে?
-এতে প্রমাণ দেখানোর প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।এমনিতেই বুঝা যায়।উনার কথার ধরণ শুনলেই বুঝা যায়।
-হতে পারে।
-হতে পারে কি,অবশ্যই হবে।
এমন সময় ফিক প্রবেশ করে।দুইজনে একেবারে চুপসে গেল।
-আপনারা একেবারে চুপসে গেলেন যে?
টিক বলল-কিছু বলবে?
-আমি মিটিংয়ে বলেছিলাম,ভিনগ্রহের প্রাণিদের উদ্দেশ্য আছে।আমি সম্ভাব্য উদ্দেশ্য খুঁজে বের করেছি।
-বলে ফেল।
-প্রথমত ঐ গ্রহে গেলে আমরা কেউ ফিরে আসতে পারব না।তারা আমাদের সবাইকে চিড়িখানার ভিতর রেখে দিবে।এমনভাবে স্টক কালচার করে রাখবে যেন আমরা জীবন মৃতের মাঝামাঝি অবস্থায় কোটি কোটি বছর থাকি।আমাদের জিনোম গঠন বের করে অতি উন্নত জাতের মানুষ তৈরি করবে।এরপর আমাদের প্রিয় পৃথিবী আক্রমণ করে সকল মানুষ মেরে ফেলবে।শুধু থাকবে তাদের সৃষ্টি মানুষ।আমরা হারিয়ে যাব তাদের কাছ হতে।
টিক গলার স্বর কঠিন করে বলল-এসব তাহলে তোমার কাজ?
ফিক কিছু বুঝতে পারল না।বলল-কি?
আফিয়া কড়া দৃষ্টিতে ফিকের দিকে তাকাল।বলল-এমন ভাব ধরছেন যেন কিছু জানেন না?
-কথাটা কি একটু ভালভাবে বলতে পারেন মিস বিউটি?
-আমরা পৃথিবীর দিকে যাচ্ছি,আর রাডারটা ডিএক্টিভেট করা।
ফিক হেসে বলল-এটাতো খুব ভাল খবর।পৃথিবীটাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।
-এ কাজটা কেন করলেন?
-যা হওয়ার তা ভালই হয়।তবে আমাকে দোষ দেওয়া অনর্থক।
-আপনে ছাড়া এ কাজ কে করতে পারে?
-তুমিও করতে পার।
মহামান্য টিক বিরক্ত হয়ে বলল-হিপ এটা পারবে না।কারণ ওকে এমন বিষয়ে ট্রেনিং দেওয়া হয় নি।শ্রাবন্তীও পারবে না।তাহলে আমরা তিনজনের কেউ একজন করেছি নিঃসন্দেহে।
ফিক মাথা নেড়ে বলল-খুব ভাল যুক্তি।তবে আমি কাজটি করিনি।
মহামান্য টিক আফিয়ার দিকে তাকায়।আফিয়া বলল-এমন কাজ করা আমার পক্ষে অসম্ভব।
-তোমাদের কথা শুনে মনে হয় আমিই কাজটি করেছি।দুইজনের কেউ যেহেতু কর নি।
ফিক মুচকি হেসে বলে-আমারও তাই মনে হয়।
টিক রেগে বললেন-কি আমি কাজটি করেছি?
-সচেতনে হয়তোবা করেননি,অচেতনে করেছন।
-দেখ,সবসময় ফাজলামি করবে না।কার পৃথিবীতে যাওয়ার এত গরজ,তা শুনেই তো বুঝা যায় কে কাজটা করেছে।
-আপনি যা ইচ্ছা ভাবতে পারেন।
-তুমি কাজটা ঠিক কর নি।
-আমিতো বলেছি,কাজটা করি নি।
-যাই হোক,সব ঠিক করে দিচ্ছি।
কয়েকদিন পর।হিপ শ্রাবন্তীর সামনে বসে আছে।ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
-আমি যেন কেমন অনুভব করছি?
শ্রাবন্তী বিস্মিত হয়ে বলল-তোমার আবার অনুভূতি আছে।
-মহামতি আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে আমার ভাল লাগে।
-হঠাৎ করে কি মানুষ হয়ে উঠলে?
-এর নাম কি ভালবাসা মহামতি?
-তোমার আর কেমন কেমন লাগে?
-আপনার হাত ধরতে ইচ্ছে করে।মনে হয়,সবসময় তোমার পাশাপাশি থাকি।
-আর কি মনে হয়?
-আপনে শুনলে রেগে যেতে পারেন।
-কি এমন কথা যে রেগে যাব?
হিপ চুপ করে থাকে।