ভুতের গলির সেই ভূত কি ফিরে এলো ?????
পূর্ব প্রকাশিতের পর
আয়েশা পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর রিকশা র খোজে এদিক ওদিক তাকাতে মাসুম কে দেখতে পেল রিকশা য়. হাত ইশারায় ডাকলো ওকে
একবার ভাবলো পাত্তা না দিয়ে অন্য রিকশা য় উঠে যায়,কিন্তু মানুম এর হাসিমুখ কে অগ্রাহ্জ্য করতে পারলনা, উঠে এসে বসলো পাশে.
পরীক্ষা কেমন হলো? বলে খুব হাসি মুখে নিবিড় চোখে আয়েশাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলো. আয়েশা অস্বস্তি বোধ করতে থাকে এ দৃষ্টির সামনে. কিন্তু এখনো তার মন থেকে সকালের রাগ পুরো চলে যায়নি
যদি হিমালয় আল্প্স এর সমগ্র জমাট বরফ
একদিন গলে ও যায়
তবু ও তুমি আমার
যদি নায়েগ্রা জলপ্রপাত চলতে চলতে থেমে যায়
তবু ও এশা আমার , গুনগুন করে গাচ্ছে আর হাসিমুখে আয়েশাকে লক্ষ্য করছে ।
আয়েশা, এশা কি হয়েছে ? এখনো মাথা নিচু কেন? আচ্ছা একবার আমার দিকে তাকাও, আমার চোখের দিকে.
চার চোখ এর মিলন হলো. কি দেখেছ? মিরর এ তোমাকে দেখা যাচ্ছে?.এই যেমন তোমাকে দেখা যাচ্ছে তেমনি তুমি আমার ভিতর একইভাবে ঠাই করে নিয়েছ
যদি আমাকে ভালো করে খেয়াল করতে আমার চোখের দিকে তাকাতে তবে মন খারাপ করতেনা
মাঝে মাঝে কানে শোনা জিনিস থেকে গুরুত্ব দিবে তোমার সল স্পিরিট কি বলছে, পর্যবেক্ষণ করবে, তারপর ডিসিশন এ আসবে, সব শোনা কে সত্যি বলে গ্রহণ করবেনা বা চোখে দেখার বাহিরে আরেক দেখার জগত আছে তাকে ও একটিভ রাখবে, I মিন তোমার বোধ ফীলিংস কে ফলো করবে বেশি, তখন মানুষকে আরো প্রপেরলী বুজতে পারবে, বুজেছ মাই আয়েশা, এশা
বাবাঃ আমি এখন অনেক ছোট এত জটিল কথা বুজতে পারিনা, তাছাড়া আমার বুদ্দি সবসময় একটু কম, আমি সহজ সরল ভাবে সব কিছু দেখি.চোখ দিয়ে দেখি, কান দিয়ে শুনি, হার্ট দিয়ে শুনা বা দেখা এগুলি এখনো ও আয়ত্ত করতে পারিনি.ওয়েট করুন..আপনার সমান বয়স হতে হতে হৃদয় দিয়ে দেখতে শুনতে শিখে যাব.
এইত এশা আমার যোগ্য সহধর্মিনীর মত কথা বলছে, I like it বলে একহাত দিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে নিল মাসুম এশাকে
এশা চমকে গিয়ে আরষ্ট হয়ে গেল.
কি সরি আমি কি আবার রং করে ফেললাম প্রিয়া
um .রং আজকে প্রথম দিন, মাত্র দেখা হলো.
তাহলে তুমি আমাকে ভবিষ্যতে টাচ করার পারমিশন দিচ্ছ, সুধু আজকে অনুমতি দিচ্ছনা এইত.
উহ সারাক্ষণ আপনার কথা পেছানো.বয়স কত আপনার ? চল্লিশ, অনেক বয়স মনে হচ্ছে ।
হা হা করে হেসে ফেলল জোরে আবার পিছন থেকে আকড়ে ধরল আয়েশাকে
আয়েশা চোখে তিরস্কার দেখে ওহ সরি ভুল হয়ে গেছে, কালকে থেকে টাচ করব এইত?
পড়ালিখা করেন কখন ?শয়তানি বুদ্দি আর ফাজলামি দিয়ে মাথা গিস গিস করে.
আমার পড়ালিখা বেশি করতে হয়না, শের এ বাংলা ফজলুল হক এর মত, একবার যা পড়ি তা আর ভুলিনা. বন্ধুরা সবাই বলে বিদ্যার জাহাজ, সব পরীক্ষায় নম্বর ভালো l
শের -এ বাংলা কে? চিনলামনা তো? ওমা কি বল তোমার স্কুল এ শের-এ-বাংলা কে নিয়ে কোনো চ্যাপ্টার পড় নাই বাংলায়
ওহ আচ্ছা আচ্ছা সেই শের-এ-বাংলা , আমি তো ভাবতেছিলাম এমন ভাবে বলছিলেন আপনার কোনো বন্ধুর কথা বলছেন
দুষ্টু মেয়ে মজা হচ্ছে আমার সাথে
আমার ব্রেন আপনার মত না, একজিনিস অনেক বার পড়ার পর ও মনে থাকেনা. আজকে একটা প্রশ্নের উত্তর করতে পারিনি ,পুরা ভুলে গেছি
ইটস ওকে, এটাই স্বাভাবিক, মেমরি খুব ভালো হলে সমস্যা, সুদর জীবনের জন্য নুতুন প্রয়োজনীয় জিনিস ষ্টোর করার জন্য মাজে মাজে ভুলে যাওয়া তা দরকারী
আপনাকে বলছে পাগল? এইযে আমি ভুলে গিয়ে পরীক্ষা তা খারাপ দিলাম এটা কোন কাজে লাগবে? বলেন শুনি.
না এই ক্ষেত্রে তোমার ভুলে যাওয়া উচিত ছিল মাসুম কে ই মিন অপ্রয়োজনীয় প্রেম চিন্তা না করে নিউটন আর গালিলির সুত্র দিয়ে ব্রেন ফুল করে যাওয়া উচিত, যখন যে কাজে যাবে সেটাকে সুধু সামনে রাখবে,বাকি সব থিঙ্কিং বাদ
তুমি বিনে আকুল পরান থাকতে চায়না ঘরে রে সোনা বন্দু ভুলোনা আমারে ..এ মিনতি করি রে গুনগুন করে গান গাচ্ছে মাসুম,
তাদের রিকশা একটা সুন্দর মন্দির এর পাশে দিয়ে যাচ্ছিল,
চল মন্দির এর ফুল চোখে ছুয়ে আসি আর প্রসাদ খেয়ে আসি.
আয়েশা চমকে উঠলো. “তুমি কি হিন্দু ” মন্দিরে যাবে মানে
আমি মুসলিম, হিন্দু, খ্রীষ্টান বুদ্ধিস্ট সব, আমি রিলিজিওন ফলো করা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাই না, আমি নাস্তিক সেটা বলবনা আবার আমি আস্তিক ও না. আমি আমার পরিচয় এভাবে দিতে পছন্দ করি আমি আশরাফুল মখলুকাত, সৃষ্টির সেরা জীব. যেহেতু আমাকে সৃষ্টির সেরা হিসাবে বানানো হয়েছে সুতরাং আমি মনে করি মানুষ হিসাবে সমাজের কাছে অর সৃষ্টিকর্তার কাছে একটা দায়বদ্ধতা আছে নিজেকে শ্রেষ্ঠ হিসাবে উপস্থাপন করা .আমার কাছে ইম্পর্টান্ট চরিত্র মোর than রিলিজিওন., দেখেছি যে যত রিলিজিওন নিয়ে মাথা ঘামায়, তার মন তত করাপ্টেড হয়ে যায় ।
দাড়াও আমার এক চমত্কার ফাদার আঙ্কেল আছে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিব., you will amazed to talk with him বলতে গেলে আমার জীবনে, চরিত্রে, মনমানসিকতায় এই ফাদার এর প্রভাব অনেক বেশি. ফাদার আমার জীবনটাই বদলে দিয়েছে ।
তোমার মা বাবা এসব আলাও করে ?
আমার বাবা স্কটিশ খ্রীষ্টান, তাছাড়া উনি আমাদের সঙ্গে থাকে না, আমার মার সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে আছে .মার একজন পুজারী বয়ফ্রেন্ড আছেন l
ওহ মাই গড আয়েশার মাথা খারাপ করে দিবে দেখা যাচ্ছে এই ছেলে ।
এ ছেলের দেখা যাচ্ছে আচরণের ঠিক নাই, ধর্মের ঠিক নাই, মা বাবা শুনলে যে কি কষ্ট পাবে ।
এখন এ পাগল এর হাত থেকে পরিত্রান পাবে কিভাবে ?
এই একঘন্টা সময় আমাকে দিবে আজকে তোমাকে নিয়ে ঘুরব..
ঘুরা দুরে থাকুক এর হাত থেকে কিভাবে পরিত্রান পাওয়া যায় সেটাই চিন্তা করছে ।
না আমি আজকে টায়ার্ড, তাছাড়া পরীক্ষা টা ভালো হয়নি দেখে মেজাজ খারাপ., আরেকদিন যাব. মনে মনে বলল আর কোনদিন এ মুখ ও হচ্ছিনা ।
একটা শপিং কমপ্লেক্স এর সামনে এসে মাসুম নেমে পড়ল রিকশা থেকে , জোর করে আয়েশা কে নামালো রিকশা থেকে. আজকে সারাদিন আমার কারণে তোমার মন খারাপ হয়েছে, চেষ্টা করব বাসায় যাওয়ার আগে তোমাকে রিলিফ দিয়ে, জয় দিয়ে, মন টা ভালো করা ।
মাসুম তাকে নিয়ে একটা জুয়েলারী এর দোকানে ঢুকলো ।
এখানে কি কিনবে? আজকে মায়ের জন্মদিন ব্রেসলেট কিনব. বেশ ভারী একটা ব্রেসলেট আর একটা বেশ ভারী গোল্ড এর চেন কিনলো. আয়েশা দেখে শুনে অবাক হয়ে গেল. জিনিস এর দাম কম করে হলে ২ লক্ষ এর কাছা কাছি হবে সে কি এত টাকা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় ।
রিকশা য় উঠে ব্রেসলেট টা পরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলো. আয়েশার হাতে
ও মাই গড এটা নেওয়া সম্ভব না আমার পক্ষ্যে. আমার মাকে কি বলব? এটা কি দিছে আমাকে? তাছাড়া আমি অরনামেন্টস লাইক করিনা..আর এত দামী জিনিস তো জীবনে পরবনা ।
অসুবিধা থাকলে মাকে দেখিওনা .সুধু আমার সঙ্গে যখন থাকবে তখন পড়বে ,ওকে জোর করে পরিয়ে দিল. আয়েশা বিরক্ত মনে মেনে নিল।
কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি তোমার হাতে এত টাকা কিভাবে?
বললাম না তোমাকে আমার বাবা স্কটিশ, তিনি ওখানে অনেকটা বিলীয়নার এর মত. প্রতিমাস এ বড় একটা টাকা আমার একাউন্ট এ জমা হয়. মা কোনদিন এ টাকা টাচ করেন না, তো অনেক টাকা হয়ে গেছে আমার একাউন্ট এ . এতদিন বয়স কম এর কারণে মা অনুমতি দেন নি তারপর ও স্টেটমেন্ট আসলে মা চেক করেন কোথায় কি খরচ করেছি
তাহলে এই যে ব্রেসলেট
বলব আমার এক ফ্রেন্ড কে গিফট করেছি জন্মদিনে
রিকশা য় যেতে যেতে অনেক কথা হলো. তার বাবার কথা, মায়ের কথা. আয়েশা ও তার মা বাবার অনেক মজার গল্প বলল. তাদের প্রেমের বিয়ের গল্প বলল, যেটা বাবার মুখে শোনাদুজনের পার্সোনাল কথা শেয়ার করতে করতে দুজন আবার অনেক অন্তরঙ্গ হয়ে গেল. আয়েশার মনের মেঘ আস্তে আস্তে সরে যেতে থাকলো ।
দুজনে এসে পৌছল এজায়্গার সবচেয়ে বড় চার্চ এ..একটা লোক তাদের কাছাকাছি আসতে মাসুম আনন্দে চিত্কার করে উঠলো ফাদার আলবার্তো কেমন আছেন বলে আন্তরিক ভাবে করমর্দন করলো ।
আয়েশা চোখের পলকে মুগ্ধ হয়ে গেল. ফাদার আলবার্তো অতীব সুদর্শন এক পুরুষ..তাকে ফাদার এর চেয়ে ফিল্ম এর নায়ক হিসাবে বেশি মানাবে ।
তাকে ঠিক ফাদার এর মত মনে হয়না. আয়েশার ধারণা ছিল ফাদার মানে হচ্ছে কালো আলখেল্লা পরা এক মধ্য বয়সী পুরুষ. যার কাজ হলো ক্রুস হাতে সারাদিন বুকে ক্রস চিহ্ন আকা. এ ফাদার খুব ফ্যাশনেবল t -শার্ট আর জিন্স পরা তাকে ইজিলি হলিউড এর নায়ক মনে হবে. সুধু তার চাহনি আর বাক্তিত্যে আভিজাত্যের ছোয়া ।
আয়েশার ক্ষেত্রে love at first sight এর মত হয়ে গেল ব্যপারটা..এই ফাদার এর সবকিছু অন্যদের চেয়ে আলাদা. অন্য ফাদার দের হাসি খুশি মনে হচ্ছেনা, মাত্রাতিক্ত গম্ভীর মনে হচ্ছে, একই সঙ্গে তার চেহারাতে একটা বিষন্নতার ছাপ. চেহারাতে মনে হচ্ছে তার জীবনে অনেক কিছু ঘটে গেছে ।
আয়েশাকে দেখে একবার হ্যালো বা হাই কোনো সম্বোধন করলনা, এমনকি মাসুম পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর ও সুধু বলল ও
খুব ই অপমান বোধ করার মত ব্যবহার. কিন্তু আয়েশা তার মেয়েলি ইনটুইসন দিয়ে বুজতে পারল.এই ব্যবহার তার ইচ্ছাকৃত নয়, সে কোনকারনে অন্যমনস্ক হয়ে আছে, মানুষের সঙ্গে নরমাল কথা চালানো ও তার জন্য কঠিন মনে হচ্ছে. হয়তবা তিনি আয়েশা কে বাচ্চা মেয়ে মনে করছেন বলে তেমন খেয়াল করছেননা. এই জুলাই তে আয়েশা আঠার বছরে পা দিবে. সে তত ছোট না, তার পর ও সবাই ব্যবহার করছে এমনি যেন তার বয়স নয় দশ ।
মাসুম যত কথা বলছে, বা জিজ্ঞাসা করছে কোনো কিছু দায়সারা ভাবে ফাদার হু হা করে জবাব দিচ্ছেন, তিনি অন্যমনস্কতার অতলে অবস্থান করছেন বুঝা যাচ্ছে ।
বাসায় ফিরে আসার পথে আয়েশা ও খুব অন্যমনস্ক হয়ে থাকলো.
কি ব্যপার ফাদার আলবার্তো র ভূত কি তোমার ঘাড়ে ভর করলো এবার , কি এত ভাবতেছ বল তো ?
যা ভাবতেছে তা কি আর বলা যায়? আয়েশা সুধু আচ্ছন্নের মত ভেবে যাচ্ছে ফাদার আলবার্তো কে? আবার কিভাবে তার সাথে দেখা করা যায়, তাকে কিভাবে বার বার দেখা যায় ।
কি ব্যপার ফাদার আলবার্তো র ভূত কি তোমার ঘাড়ে ভর করলো এবার , কি এত ভাবতেছ বল তো ?
=====================================
চার্চ এর প্রাত্যহিক কাজ সেরে প্রতিদিন চার্চ এর সামনে যে ছোট গাছ টা আছে তার পাশে ছোট্ট বসার জায়গায় বসা ও আলবার্তো র প্রাত্যহিক কাজ lএই সময় সম্পূর্ণ আপনাতে বুদ হয়ে যায়. মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় তার অতীত বর্তমান, ভবিষ্যত । সে চলে যায় তার অতীতে, বুদ হয়ে থাকে বাবা মা, ভাই বোন্. সেচ্ছায় সে তার অতীত বিসর্জন দিয়েছে পুরানো রাস্তায় সে ভুলে ও পা মাড়ায় না, পরিচিত কারো সাথে দেখা হওয়ার আগে সে মুখ ফিরিয়ে নেয়. সে জন্য তার চেহারা আচরণ গেট আপ এ করেছে কিছু পরিবর্তন সাধন তবু ও সব কিছু হয়নি এখনো বিলীন মনের কুঠুরিতে সযত্নে রক্ষিত আছে সব মূল্যবান স্মৃতি রা ।
নাহিদ বাবা এদিকে আয় তো এখন বেশ স্পষ্ট করে শুনতে পায় মায়ের গলার আওয়াজ.
শীগ্রই নামাজ পড়ে পড়তে বস, শোনা যায় রাশভারী বাবার গম্ভীর কন্ঠের আওয়াজ .
আদরের বোন্ আনা এর ডাক ভাইয়া কোথায় তুমি
আহ ওরা আজ কত দুরে ?
ফাদার আলবার্তো কাছে এসে ডাকলেন সিস্টার রোসালীন
আপনি আজকে ইভনিং এ ফ্রি আছেন?
হা কেন বলুনতো?
আজকে আমাদের সঙ্গে ডিনার করতেন খুব খুশি হতাম. আমার মেয়ে আসছে বেড়াতে অনেকদিন পরে
আলবার্ট কিছুটা ইতস্তত আর বিব্রত ফিল করে কি জবাব দেওয়া যায় সেটা মনে করে. সে আসলে ভিড়, হৈ চৈ, পার্টি এগুলি থেকে অনেক দুরে সরে এসেছে. এসব পার্টি হৈ চৈ ড্রিংক করা তার লাইফ এর পার্ট ছিল. এখন সে আর তার ডার্ক অতীত নিয়ে ভাবতে চায়না. আজকে তার জীবন টা অনেক পবিত্র, ডিসিপ্লিনড, এখনো তার জীবনে আছে অপূর্ণতা, বিষন্নতা, তবু সে এ জীবন টাকে সে আকড়ে থাকতে চায় l
কিছুটা বিব্রত হয়ে জবাব দেয়. আসলে সন্ধার পরে আমি ঘরে থাকতে লাইক করি.আমি পার্টি নাচ গান এর সঙ্গে এডজাস্ট করতে পারিনা, কিছুটা ওল্ড ফ্যাশনড l
আপনার বিব্রত হওয়ার মত বড় পার্টি হবেনা. সুধু আমার মেয়ের কিছু বন্ধু বান্ধব আর চার্চ এর কিছু ব্রাদার সিস্টার খুব ই ঘরোয়া পার্টি।
সিস্টার রোসালীন এর দৃষ্টির সামনে আলবার্তো সবসময় বিব্রত বোধ করে. সিস্টার রোসালীন এর কাছে ফাদার আলবার্তো এক বিস্ময়।
তার মায়া ভরা চোখ সবসময় আলবার্তো কে অনুসরণ করে
অবাক হয়ে ভাবে এত অল্প বয়সে কিভাবে ফাদার হলো. তার কোনো রিলেটিভ কে কোনদিন দেখা যায়নি. তার কে কে আছে, কোথা থেকে এসেছে এসব জিজ্ঞাসা করে কোনো সদুত্তর কোনদিন পায়নি.
ঠিক আছে আমি ট্রাই করব,
সিস্টার রোসালীন বাসায় অনেক জমজমাট আড্ডা চলছে . রোসালীন এর মেয়ে এভেলিন আর তার বন্ধুরা হৈ হুল্লোর এ মেতে আছে. এভেলিন এর বয়স চব্বিশ, সে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি তে M B A পরছে.২ন্দ সেমেস্টার শেষ করে ছুটিতে মাকে দেখতে এসেছে, এভেলিন এর বন্ধু ফ্রাঙ্ক ফুর্তিবাজ এবং মজার পুরা পার্টি হৈ হুল্লোর করে সে একাই জমিয়ে রেখেছে ।
আচ্ছা অন্টি র বয়স কত রে ? সে জিজ্ঞাসা করে
আমার এজ এর সাথে এড ২০
u মিন ৪৪. ওহ মাই লর্ড বলিস কি অন্টি কে ইজিলি আমার গার্ল ফ্রেন্ড বানানো যায়
she still লুকিং so young & attractive
এই মা খুব গম্ভীর, উল্টা পাল্টা কথা বলিসনা মায়ের সামনে।
রাত প্রায় ৯ টা এভেলিন কেক কাটতে চাচ্ছে , রোসালীন বার বার অনুরোধ করছে একটু অপেক্ষা করার জন্য, ফাদার আলবার্তো আসবে.
কই মা তোমার ফাদার কোথায়? আমার বন্ধুরা তো বাসায় ফিরবে, ওদের দেরী হয়ে যাচ্ছে ।
রোসালীন একবার বারান্দায় এসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে খেয়াল করার চেষ্টা করে, কখনো বা দরজা খুলে সিড়ি দেখার চেষ্টা করে, একবার সে ভাবছে হয়তবা ফাদার বাসা খুঁজে পাচ্ছেনা .
অস্থিরতা দমন করতে না পেরে ফাদার এর বাসায় ফোন দিল. না বাসায় তো নাই, ভয়েস মেইল এ চলে গেছে.
ফাদার আলবার্তো অনেকক্ষণ ধরে রোসালীন এর বাসা খুজ্চ্ছে, পাচ্ছেনা, সম্ভবত বাসার নম্বর টা ভুল লিখেছে , এটা কি ৩০১ না ৩১১ , ওকে ৩১১ এ নক করা যাক ..
দরজা খোলা ই আছে হৈ হুল্লোড় এর শব্দ ভেসে আসছে ,দরজায় নক করে ঠেলা দিতে সিস্টার রোসালীন এর সাথে চোখা চোখি হয়ে গেল।
আনন্দে রোসালীন এর হৃদপিন্ড লাফ দিয়ে উঠলো. অনেক কষ্টে ভাবাবেগ দমন করে স্বাভাবিক স্বরে বলল.আসুন আসুন ফাদার বাসা চিনতে কোনো অসুবিধা হয়নি তো?
ঘরে সব কোলাহল মুহুর্তের মধ্যে থেমে গেল. ফাদার এর সৌন্দর্য্য আর বক্তিত্ব এ সবাই বশীভূত হয়ে গেল ।
রোসালীন এভেলিন এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন ।
ফাদার এর ঠান্ডা স্বভাব এর কাছে এভেলিন থতমত খেয়ে গেল. সে খুব উচ্ছল স্বভাব এর মেয়ে.
তার বন্ধু সান্ড্রা জিজ্ঞাসা করে হাত টিপে কে রে এই হিরক সৌম্মকান্তি ?
আমাদের এখানের চার্চ এর ফাদার
পিছন থেকে পিঠে চাপড় দিয়ে বলল একজন কেমন আছিস নাহিদ”
চমকে গেল ফাদার আলবার্তো “কে তাঁকে এই নাম ধরে ডাকছে?
রোসালীন সামনে এসে বলল এই ছেলে কাকে কি বলছ, ইনি আমাদের এখানে চার্চ এর ফাদার .
সারা টা সময় আবার ফাদার আলবার্তো অন্যমনস্ক থাকলেন
মনে মনে বিড় বিড় করে বললেন “ফাহাদ আমাকে তুই মাফ করে দিস
(পরবর্তিতে )