ভুতের গলির সেই ভূত কি ফিরে এলো ?????
পূর্ব প্রকাশের পর
আশফাক দরজা খুলে ভিতরে পা রাখতে থমকে দাড়িয়ে পড়ল। হিংস্র গলায় চিৎকার করে কে যেন বলছে হা আমি তোর্ মাকে মেরেছি,,বাবাকে মেরেছি,আজ তোর্ পালা ,তোর্ রক্ত দিয়ে গোসল করে শেষ প্রতিশোধ নিব, বলে ভিম গলায় হু হি হা হা করে ঘর কাপিয়ে হাসতে লাগলো।
কে? কাওকে তো দেখা যাচ্ছেনা, মনে হচ্ছে দেওয়ালের ভিতর থেকে ভূত কথা বলছে।
পরক্ষণে দ্বিতীয় আরেক জনের আওয়াজ শোনা গেল ” সেই সুযোগ তোকে আর দেওয়া হবে না শয়তান ইয়া হু বলে কেউ যেন লাফ মেরে নিচে পড়ল।
এতক্ষণে বক্তাদেরকে দেখা গেল। বেড রুম এ এসে দেখে এন টিভি তে সিনেমা হচ্ছে, নিলুফা গভীর মনোযোগ দিয়ে সিনেমা দেখছে।
রাজ্জাক আর এক ভিলেন চারিদিকে হালুম হুলুম তোরে যেভাবে ইচ্ছে মারুম গতিতে দুজন কুস্তি স্টাইল এ মারামারি করছে।
ভিলেন জুম্বো না আদেল তার হাতের থাবা দিয়ে রাজ্জাক er চোয়াল বাকা করার চেষ্টা করছে। রাজ্জাক ও কম যায়না আদেল এর থেকে। দেখে শুনে মনে হচ্ছে দুজনের ঘাড় বাকা করার প্রতিযোগিতা চলছে। না ঘাড় বাকা হয়নি কারো, মনে হয় দুজনের ঘাড় এ স্প্রিং লাগানো আছে প্লাস্টিক পুতুল এর মত।
এতক্ষণে নিলুফা ঘাড় ঘুরিয়ে স্বামী কে দেখতে পেল।
ওমা তুমি কখন আসছ ? দাড়িয়ে বলল নিলুফা ব্যতিব্যস্ত ভঙ্গিতে।
এইত কিছুক্ষণ মনোযোগ দিয়ে সিনেমা দেখছ দেখে ডাক দিলামনা।
দেখো তোমার মুভি শেষ কর আমি একটু ঘুমিয়ে নেই।
বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রাজ্জাক কবরী গান গাচ্ছে
রাজ্জাক কোমর বাকা করে নাচ্ছে আর গাচ্ছে
হই হই রঙ্গিলা রঙ্গিলা রে
কেন যে মন নিলা মন নিলা রে।
ইশ কবরী কি কিউট দেখো, নিলুফা বলে , নিলুফা র কথা শুনতে শুনতে আশফাক ঘুমিয়ে পড়ল।
মিজান কাজে জয়েন করেছে তিন দিন, এই তিন এ তার অবস্থা ত্রাহি ত্রাহি তার ইম্মেডিয়েট বস রুখসানা ম্যাডাম এর কারণে। ম্যাডাম প্রতি মুহুর্তে বোজানোর চেষ্টা করছে উনি তার বস, সুতরাং উনি যেভাবে বলবেন সেভাবে কাজ করতে হবে।
মাত্র অফিস এ এসে চেয়ার এ বসেছে ঠিক তখনি পিয়ন এসে বলল স্যার ম্যাডাম আপনারে ডাকছে।
শুনে পিত্তি জ্বলে গেল, এখনো চেয়ার এ ঠিক মত বসা ও হলনা, সকালে চা খাওয়া হলনা, এর মধ্যে ফাইল পত্র নিয়ে রওয়ানা হওয়া।
হে আল্লাহ মেয়েছেলে গুলারে কেন অফিস করতে পাঠাও বিশৃঙ্খলা করার জন্য।
যাকে যেখানে মানায় ,মেয়েদের স্থান অন্দর মহল, রান্না করবে, ঘর গোছাবে আর সাজগোজ করবে.
ঐযে কথা আছে না বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে , তার সঙ্গে মিজান আরেক লাইন এড করেছে নারীরা হেসেলে অর্থাৎ রান্না ঘরে।
ফোন এর আওয়াজ ,পিক করতে ম্যাডাম এর ভয়েস মিজান সাহেব ৭ ন ফাইল নিয়ে এক্ষনি আমার রুম এ আসুন। কোনো সালাম না হাই হ্যালো না কজের অর্ডার।
দাড়াও তুমি বুনো ওল হইছ আমি হব বাঘ তেতুল, তোমারে আমি মিজান শায়েস্তা করতেছি। আমি মাদ্রাসা পালানো পোলা। তোমার স্ক্রু টাইট দিব আজকে,আমারে চা খাইতে দাওনি।
খুব রিলাক্স করে বসলো, তারপর আয়েশ করে চা শেষ করলো। ফোন করলো ম্যাডাম কে
আহ মরি মরি কি কর্কশ স্বর ,জি হ্যালো কি আপনি কোথায় ?
যথাসম্ভব গোবেচারা স্বর করে মোলায়েম গলায় বলল ম্যাডাম ফাইল টা কালকে আপনার টেবিল এ রেখে এসেছি, একটু কষ্ট করে যদি খুঁজে দেখতেন। আসলে ফাইল হাতে নিয়ে বসে সে আছে।
কতক্ষণ আগে খুঁজে খুঁজে হয়রান হোক,
এইজন্য বলি মেয়েদের স্থান অন্দরমহল , মেয়েদের কে সহজে কনফিউসড করে দেওয়া যায়, সহজে ভেবে ফেলল মিজান সত্যি বলছে। এখানে তার বস ছেলে হলে তাকে এখন আদেশের সুরে নিচিন্ত ভাবে বলত ভালো ভাবে খুঁজে দেখুন আপনার কাছে ফাইল আছে, আমার কাছে না। বেচারী সম্ভবত বাসায় গিয়ে কি রান্না করবে সেই চিন্তা করতে গিয়ে ভুলে গেছে।
আবার ফোন ম্যাডাম এর। মিজান সাহেব আমার মনে আছে ফাইল আপনি নিয়ে গিয়েছে খুঁজে দেখুন ভালোভাবে।
এখন ফাইল তার কাছে পাওয়া গেলে নিজেকে অযোগ্য প্রমান করা হবে।
সে আবার ও মিথ্যে বলল না ম্যাডাম না ম্যাডাম আমার কাছে নাই, একটা কাজ করি, সব ইনফরমেশন তো আছে , আমি আরেকটা প্রিন্ট আউট নিয়ে আসছি কিছুক্ষণের মধ্যে।
ওকে যা ভালো বোঝেন করুন, তাড়াতাড়ি বিকালে স্যার কে দেখাতে হবে বললেন তিনি বিরক্তির স্বরে।
দুই দিন পরে মিজান এর মন টা ভার মুক্ত হলো, আনন্দে গান গাইতে ইচ্ছে করলো।
হাতে কিছুক্ষণ সময় আছে কেয়াকে ফোন করা যাক।
(পরবর্তীতে)