Today 10 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

অতিথী পাখির আতিথেয়তা !

: | : ৩০/১০/২০১৩

 

মাদের গনতান্ত্রিক অবস্থা এমন হয়ে দাড়িয়েঁছে যে গনতন্ত্রের কথা, নিজেদের অধিকারের কথা ভাবতে ভাবতে আমরা নিজেরাই খেই হারিয়ে ফেলি । প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত বাংলাদেশের প্রাযুর্য, ঐতিয্য, আর আতিথেয়তার মেল বন্ধনের কোথায় একটি ঘাটতি চলে আসছে দিনদিনই । যেখানে বিশ্ব তাদের নিজেদের পরিবেশ বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রতিনিয়ত তাদের প্রশাসনিক অবস্থানকে দৃঢ় করে সেখানে আমাদের দেশ গাঁছাড়া দিয়ে বাঁচতে পারলেই যেন স্বার্থকতা ।

শীতের শুরুতে বাঙালী জাতির পিঠা পায়েশ আর নতুন ধান ঘরে নেওয়ার উসব শহুরে জনগনের কাছে অপরিচিত হয়ে গেলেও গ্রামীণ জীবন এখনও এখানে আবদ্ধ । শীতের বার্তা বারবারই আমাদের দেশকে নানা দিক দিয়ে সুসংবাদ পৌছানোর মাধ্যম হয়ে আসে ।চারিদিকের কুয়াশা ভেজা সকাল যেমনি চাদর মুরো দিয়ে রাখতে বাধ্য করে মানুষকে তেমনি প্রকৃতি এই সময় নিজের সৌন্দর্যকে অবলিলায় মেলে ধরে । চারিদিকের ফুলের সমারহে পাখিদের গান না থাকলে বড়ই সাদা মাটা সৌন্দর্যে তৃপ্ত হতে হয় আমাদের । সেই অভাব পূরন করার জন্যই হয়ত বিধাতা বহুদূরের দেশ সাইপ্রাসের পাখিদের পাঠিয়ে দেয় আমাদের দেশে । আমরা এদের এজন্য অতিথী পাখি হিসাবেই বেশী চিনে থাকি । যদিও মূলত পানি বেষ্টিত এলাকায় এদের সমাগম হয় তবুও আমার মনে হয় এদের আগমনে আমাদের সারাদেশ নতুন আঙিগকে সেজে ওঠে । আমাদের বোঝার, জানার এবং অনুভুতির দুয়ার খুলে যায় এদের আগমনে । মুক্ত আকাশে এই পাখিগুলোকে দেখলে মনে হয় আমিই বুঝি ঐ অধরা আকাশকে ছুয়ে ফিরছি বার বার । এই মুক্ত ডানা মুক্তভাবে ওড়ানোর দায়িত্ব আমাদেরই । কিন্তু এখানেও আঘাত ।মানুষের হিংশ্র থাবা থেকে এই সৌন্দর্য রক্ষা করতেও আমাদের হিমশিম খেতে হয় । নিজেরা শিকারের নামে তাজা প্রানগুলো এনে ভাজা কড়াইয়ে ফ্রাই করে খেয়ে নিজেদের বলবান মনে করার যে রাজশিক আগ্রাসন তা এখনও কিছু কিছু ছোট মনা মানুষের কাজে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ।

এখনও ফার্মগেটের মত জনাকৃর্ন এলাকায় অতিথী পাখি হাতে ফেরিওয়ালাদের ঘুরতে দেখা যায় অথবা কাটাবনের পাখির দোকান গুলোতে শীতের দিনের সবচেয়ে রমরমা ব্যবসা এই অতিথী পাখির বেচাকিনী ।

বর্তমানে অতিথী পাখি আসা অনেক কমে গেছে ।ঢাকার অদূরে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাভূমি এবং চিড়িয়াখানার জলাভূমিও এদের অভয়ারন্য করে রাখা আমাদের সম্ভব হয় না । হাওর অঞ্চলগুলোতে পানি কমে যাওয়া, পরিবেশ দুষন এবং মানুষের আগাসী আচরনের কারনে আগের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ কমে গেছে অতিথী পাখির ভ্রমন ।এভাবে বিলুপ্ত হতে থাকলে একসময় আর এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের দেশে এভাবে প্রতিয়মান হবে না । শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয় জৈবিক ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্যও অতিথী পাখির ভ্রমন আমাদের কাছে আকাঙ্খিত। এদের ভ্রমণের ফলে কিছু কিছু গাছের পরাগায়নে বড় ভূমিকা থাকে ।এসব নানা কারনে অতিথী পাখির আতিথেয়তায় আমাদের মনোনিবেশ করা অত্যন্ত জরুরী । কিন্তু সচেতনতা ও আইনের ব্যবহার সঠিক না থাকায় লোকচক্ষুর আড়ালে এদের ধ্বংশ করে আমাদের জীববৈচিত্র নষ্ট করায় আমরাই এই  পথ করে দিচ্ছি ।

পরিবেশ বাঁচাতে হলে পরিবেশের উপাদান বাঁচাতে হবে । এগুলো আমাদের ঐতিহ্যের একটি অংশ । এখন আর শিকারি সেজে নিজেকে বড় বানানোর কৌশল খাটেনা । এখন বড় হতে হলে মুক্ত মনা হয়ে জীবের সেবা করে একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ার জন্য নিজেকে উদার ভাবে প্রকৃতির মাঝে ঢেলে দিতে হবে । একটি সুন্দর স্বচ্ছ, সবুজ পৃথিবীই পারে কুসিত মনগুলোকে সাদার আভায় নিয়ে আসতে । আসুন আমরা সবাই এই পাখি গুলোকে তাদের মত বাঁচতে সহায়তা করি । নিজেদের পরিবেশকে নিজেদেরই রক্ষা করতে হবে । পরবর্তি প্রজন্মকে একটি সুন্দর পৃথিবী উপহার দেওয়া আমাদেরই কর্তব্য ।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top