Today 10 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

নিউটন নিয়ে অদ্ভূত সব কাণ্ড!

: | : ০২/১১/২০১৩

সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানী হিসেবে আইজ্যাক নিউটনকে সন্মান করা হয়। তিনি ক্লাসিকাল মেকানিকসের উদ্ভাবক ও ক্যালকুলাসের সহ-স্রষ্টা। কিন্তু তার সময়ে নিউটন আরো অনেক কারণে পরিচিত ছিলেন। তার ব্যক্তিত্ব ও কিছু ব্যবহার ছিল বেশ অদ্ভূত এবং পাগলাটে। নিউটনের এমন ১০ কাণ্ড তুলে দেওয়া হলো;

 

১. অনেক বড় পাপী

কমপক্ষে নিউটন নিজে এটা মনে করতেন। এই ভবিষ্যতের গণিতবিদ খুব অল্প বয়সেই (১৯ বছর বয়সেই) ৪৮টা পাপের তালিকা করেন। এর প্রত্যেকটা পাপে নিজেকে দোষী মনে করতেন। এ রকম কয়েকটা দোষের একটা হচ্ছে- ‘মায়ের প্রতি খিটখিটে মেজাজ দেখানো’। মনের মধ্যে কু-চিন্তা, কু-কর্মের স্বপ্ন, বাসনা পোষণ করা। নিউটন আরো স্বীকার করেন, কারো বাড়িতে অনুমতি না নিয়েই আপেল খেয়েছিলেন তিনি।

 

২. পরীক্ষা করতে নিজের চোখে সুঁচ

নিউটনের সময়ে আলো নিয়ে বেশি জানাশুনা ছিল না। চোখ কি নিজে আলো তৈরি করে অথবা সংগ্রহ করে এ বিষয়টা স্পষ্ট ছিল না মানুষের কাছে। এজন্য তিনি নিজের ওপরই একটা পরীক্ষা করে দেখেন। অপটিক্স নিয়ে নিজেই নিজের গিনিপিগ হন। তার নোটবুক থেকে একটা পরীক্ষার কথা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি তার দুই চোখের মাঝখানের হাঁড়টিতে একটা ভোঁতা সুঁচ দিয়ে খোঁচা মেরে দেখেছিলেন রংয়ের অনুভূতিটা কেমন।

 

৩. দুই-দুবার ভেঙে পড়া

১৬৭৮ সালে তার আলোকবিদ্যার (থিউরি অব অপটিক্স) বিভিন্ন দিক নিয়ে এক বিতর্কে জড়ানোর পর তিনি মানসিকভাবে খুব ভেঙে পরেছিলেন বলে মনে করা হয়। ১৬৯৩ সালে দ্বিতীয়বার এমন হয়েছিল; তিনি মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলেন। তারপর তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে অবসর নিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বারের মানসিক ভেঙে পড়ার পেছনে কম ঘুমকে দায়ী করেছেন নিউটন। কিন্তু ঐতিহাসিকরা অন্যান্য সম্ভাব্য কারণের কথা বলেছেন। গবেষণার সময় রাসায়নিক দ্রব্যাদির প্বার্শপ্রতিক্রিয়া এবং দীর্ঘকালীন মানসিক দুর্বলতা ও বিষন্নতার সম্মিলিত কারণে এটা ঘটতে পারে বলে মনে করেন তারা।

 

৪. অশিক্ষিত মা-বাবা

ইংল্যান্ডের লিংকনশায়ার প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন নিউটন। তিনি তার কৃষক বাবার একমাত্র সন্তান। ওই কৃষক বাবার নামও ছিল আইজ্যাক নিউটন। তার মায়ের নাম ছিল হান্নাহ আইসকফ। নির্দিষ্ট সময়ের তিন মাস আগেই জন্মগ্রহণ করেন এবং জন্মের সময় এতই ছোট ছিলেন যে, তার মা বলতেন তাকে একটা ছোট মগের ভেতরে ঢুকিয়ে রাখা সম্ভব ছিল! তারা বাবা ছিল নিরক্ষর ও মা কোনো মতে পড়তে পারতেন। তার মায়ের আরেকটি বিয়ে হওয়াতে হাতে কিছু অর্থের সমাগম ঘটে এবং ওই অর্থের মাধ্যমেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পেরেছিলেন।

 

৫. অন্যের টেবিল পরিষ্কার করতেন

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে নিউটন ওয়েটারের কাজ করতেন। তিনি ছিলেন একজন ‘সাইঝার’। এর অর্থ হচ্ছে- তিনি এমন একজন আন্ডারগ্রাজুয়েট ছাত্র যে শারীরিক পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্থনৈতিক সাহায্য পেয়ে থাকে। নিউটনের ক্ষেত্রে তাকে ওয়েটারের কাজ ও অন্যান্য ছাত্রদের রুম পরিষ্কারের মত কাজ করতে হতো।

 

৬. খুবই নিঃসঙ্গ

কেউ কেউ ধারণা করেন, নিউটনের মানসিক সমস্যা ছিল। তিনি সম্ভবত বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা অটিজমে আক্রান্ত ছিলেন। এটা নিশ্চিতভাবে জানা খুবই কঠিন। তবে এটা সুস্পষ্ট যে, তিনি দীর্ঘকাল নিঃসঙ্গ ছিলেন। এটা যেমন সত্য ছিল তার ছোটবেলায়, তেমনি বুড়ো বয়সেও।

 

৭. প্লেগের মধ্যে ক্যালকুলাস

১৬৬৫ সালে কেমব্রিজে ভয়ানক প্লেগ দেখা দেয়। এ মহামারি থেকে বাঁচাতে নিউটন ও তার সহপাঠীদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু ওই উঠতি গণিতবিদ তার সময়ের সঠিক ব্যবহার করেছিলেন। আবিষ্কার করে ফেলেন ক্যালকুলাস!

 

৮. অপরসায়ন চর্চা

যদিও বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে সর্বোচ্চ আসনে বসানো হয় কিন্তু তিনি তুকতাক আলকেমি বা অপরসায়নও চর্চা করতেন। এই আধা-বিজ্ঞান আধা-যাদুবিদ্যায় অন্যান্য ধাতব পদার্থকে স্বর্ণে রূপান্তর করার চেষ্টা করা হয়।

 

৯. আপেল পড়া দেখে তত্ত্ব পাননি

অধিকাংশ লোকই মনে করেন, নিউটনের মাথায় আপেল পড়েছিল। হাফপোস্ট সায়েন্সে গ্লিক বলেন, ‘কিন্তু এটা সম্ভবত সত্য নয়’। তার মতে, যেটা সম্ভাব্য কারণ হতে পারে তা হলো নিউটন বুঝতে পেরেছিলেন, অদৃশ্য শক্তির কারণে আপেল মাটিতে পড়ে যায়, ওটার কারণেই হয়তো চাঁদের গতিবিধি প্রভাবিত হয়।

 

১০. চিরকুমার হিসেবেই জীবনাসান

নিউটন কখনো বিয়ে করেনি এবং অধিকাংশ লোকের বিশ্বাস তার কোনো শারীরিক সম্পর্কের অভিজ্ঞতা হয়নি। যদিও এটা যাচাই করা অসম্ভব।

 

হাফিংটন পোস্টে ডেভিড ফ্রিম্যানের লেখা থেকে অনূদিত

 

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top