আমাদের সময় স্কুল আর এখনকার স্কুল
আমাদের সময় স্কুল ছিল দুরে… সকাল নয়টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ক্লাস ছিল….. সারাদিন না খেয়ে স্কুল করে বাড়ি ফিরতাম…. সেই সময় স্কুল ব্যাগ ছিল না, ব্যাগে নাস্তার ব্যবস্থা ছিল না, নাস্তার বক্স দিতে হবে! সেইটা তখনকার মা বাবা জানতেনই না মনে হয় না …… বগলে করে বই নিয়ে স্কুলে যেতাম …..তাও খালি পায়ে । খালি পায়ে কেন যে যেতাম মনে পড়ছে না । টিফিনের সময় সবে মিলে কত কিছু খেলতাম খিদা পেটেই । কখনো যদি আম্মা সাথে একটা টাকা দিয়ে দিতেন তা দিয়ে আইসক্রিম খেতাম চার আনা দিয়ে একটা আইসক্রিম পাওয়া যেত । চারদিন খেতাম এক টাকা দিয়ে । আট আনা দিয়ে খেতাম নারিকেলযুক্ত দুধে ভরা আইসক্রিম ।আহা সেই স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে যেন ।
ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পাকায় বসে ক্লাস করতাম । ফাইভে একটা ব্রেঞ্চ ছিল মাত্র । এখনো মনে হলে হাসি পায় । আগে কে বসেবে সে নিয়ে ছেলেরা আর মেয়েরা পিট দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করে ফেলে দিতাম । যাদের শক্তি ছিল তারা জিতত । আমরা মেয়েরা বেশী ছিলাম তাই তারা পারত না । আহারে কি মজার দিনগুলো ছিল ।
আমরা পরীক্ষা দিছি সেন্টারে । অনেক দুরে গিয়ে পরীক্ষা দিছি । পুলিশ প্রহরায় । এখন আবার সেই সিস্টেমে এসে গেছে দেশ ।
আর এখন বাড়ির ধারে স্কুল, শিফটিং এ ক্লাস হয়…. মা বাবারা অনেক সচেতন, ব্যাগে টিফিন ব্যাগ দিতে ভুলেন না, তাছাড়া আমাদের কোন গৃহশিক্ষক ছিল না, নিজের ইচ্ছেয় পড়াশুনা করতাম… এখন সাবজেক্ট ওয়াইজ শিক্ষক রাখা হয়….. আর কত আদর যত্নে বাচ্চাদের ভবিষ্যত চিন্তায় মা বাবা সচেতন থাকেন…… বাচ্চাদের চেয়ে মা বাবাদেরই বেশী টেনশন দেখতে পাই পরীক্ষার আগে ।
মা বাবারা অনেক কষ্ট করেন বাচ্চাদের জন্য বিশেষ করে মাদের কষ্ট হয় বেশী । সেই যে সকালে এসে স্কুলে দিয়ে ঘাসের উপর গরমে বসে থাকেন দেখলে মায়া লাগে । আমার ছেলে কলোনীর স্কুলে পড়ে তাই তাকে দিয়ে বসে থাকতে হয় । আল্লাহর কাছে শুকরিয়া …… ।
সব কথার বড় কথা হল…. এত্তগুলা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরও বজ্জাত পোলাপাইন পড়তে চায় না…. কত বাহানা, কত আবদার, আল্লাইদ্যা আব্দারের শেষ নাই…. বদের হাড্ডিগুলান্তে সারাদিন রাত ফেসবুকায় পড়াশুনা থইয়া..
সব গুলারে কানের গুরায় চটকনা লাগাইতে মুঞ্চায়….
বদের বদ পোলাপাইন….. পড়াশুনায় মন দেও……আর মা বাবার কথা শুন…….