ভুতের গলির সেই ভূত কি ফিরে এলো ?????
পূর্ব প্রকাশের পর
রাশেদ কে এভাবে বাসা থেকে চলে যেতে দেখে রেহনুমা আপসেট হয়ে গেল। সে ভেবেছিল যা সে বুঝাতে চাচ্ছে রাশেদ সেটা বুঝতে পারবে, এইভাবে সবার সামনে তাকে বিব্রত করে খালাম্মার খাওয়ার না নিয়ে চলে যাবে সে একেবারে ই ভাবেনি। তার ফেস এর এত ড্রামাটিক চেঞ্জ হয়েছে কিছুক্ষণের মধ্যে বন্ধুরা ও তারা ও সঙ্গে সঙ্গে অফ হয়ে গেল।
একজন জিজ্ঞাসা করলো “কিরে কি ব্যাপার ভদ্রলোক এভাবে চলে গেলেন কেন?
রেহনুমা তার জবাব দিতে পারলনা ,তার চোখে পানি চলে চলে এসেছে। কেউ যাতে চোখের পানি না দেখে ফেলে সেজন্য মুখ ঘুরিয়ে রাখল।
আরেক ফ্রেন্ড কিছু টা দেখেছে বলে সে আইডিয়া করতে পারছে কেন রেহনুমা র মন খারাপ।
সে সান্তনার ভঙ্গিতে বলল “ভদ্রলোক এর মাইন্ড করা তো স্বাভাবিক তুই জিনিস ফেরত দিলি কেন? এটা তো তোকে বার্থডে তে তার মা গিফট করেছেন।
আসলে আমি এত দামী একটা জিনিস এইভাবে নিতে চাইনি। বলল সে আস্তে আস্তে।
তার মধ্যে হটাৎ চঞ্চলতা কাজ করতে শুরু করলো। সে তার এক ফ্রেন্ড কে নিয়ে খালাম্মার জন্য রাখা খাওয়ার নিয়ে রওয়ানা হলো।
একজন বলছে এত রাতে না গিয়ে কালকে যা ,হয়তবা ওরা ঘুমিয়ে পড়েছে।
আরেক জন চোখের ইশারায় নিষেধ করে বলল
চল আমিও তোর্ সঙ্গে যাব , বলে অন্ধকার রাতে বেরিয়ে পড়ল। বাকিরা মুখ চাওয়া চাওয়ি করে মুড অফ করে বসে রইলো। প্রোগ্রাম ছিল সবাই একসঙ্গে ছাদে যাবে ,সারা রাত ছাদে গান বাজনা করবে।
রেহনুমা আর তার ফ্রেন্ড পারভীন দুজনে অনেকক্ষণ রাশেদ দের দরজা নক করলো, কেউ দরজা খুলতে আসলোনা।
ওরা মনে হয় ঘুমিয়ে গেছেন রেহনুমা ,চল কালকে সকালে আমরা বাসায় আসব বলে তার হাত টেনে সিড়ি দিয়ে নামানোর চেষ্টা করে।
রেহনুমার পা মনে হচ্ছে কেউ দরজার সাথে আটকে রেখেছে , তার ভাবখানা এমন সে রাশেদ এর সঙ্গে দেখা না করে যাবেনা।
দুজনে ইতস্তত হয়ে ভাবছে কি করবে তখনি দরজা খুলে গেল, দরজার গোড়ায় রাশেদ কে দেখা গেল।
ঘুম ঘুম চোখে অবাক হয়ে সে তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে।
অবাক হওয়ার কথা ,বাজে তখন রাত ১ টা।
ব্যাপার কি আপনারা কি কোথায় পালিয়ে যাচ্ছেন এই রাতে? রাশেদ যদিও ভিতরে ভিতরে অনেক বিরক্ত বোধ করছে কিন্তু কথা বলল তার স্বভাব সুলভ কৌতুকের ভঙ্গিতে।
রেহনুমা যদিও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল রাশেদ কে দেখতে পেয়ে একই সঙ্গে সে বিব্রত বোধ করছে। কেননা রাশেদ এর ব্যবহার কিছুটা অভদ্র আর দুর্বিনীতের মত মনে হচ্ছে। সে দরজার দুই চৌ কাঠ এ দুই হাত দিয়ে দাড়িয়ে যেন কিছুতে তাদের ঘরে ঢুকতে দিবেনা।
রেহনুমা খুব বিব্রত বোধ করছে রাশেদ এর ব্যবহার এ। কোনরকমে সুধু বলতে পারল খালাম্মার খাবার নিয়ে এসেছি,আপনি ফেলে চলে এসেছেন।
রাশেদ এর বিরক্তিতে ধৈয্য চু্তি ঘটল। এবং জবাব দিল কড়া ভাবে।
সেইজন্য রাত একটায় ছুটতে ছুটতে একজনের বাসায় চলে আসলেন খাবার সহ তাচ্ছিল্যে র ভঙ্গিতে বলল।
রেহনুমা সত্যি অসহায় বোধ করলো,কিভাবে তার রাগ কমাবে বুঝতে পারছেনা ,সে অসহায় এর মত কেদে ফেলল অপমান আর বিরক্তিতে।
এবার রাশেদ এর বিব্রত হওয়ার পালা। এই মেয়ে যে হটাৎ করে কেদে ফেলবে সেটা তার ভাবনায় ছিলনা।
রাশেদ হাত বাড়িয়ে খাওয়ার প্যাকেট নিয়ে নিল আরেক হাত দিয়ে রেহনুমার হাত ধরে ফেলল ঝোকের মাথায় আস ভিতরে আস , কি যে কর তুমি এত রাতে এই অন্ধকার রাস্তায় কেও বের হয়।
রেহনুমা র কান্না কিছু টা ফোফানীর পর্যায়ে চলে গেছে , আমি ভাবছি তুমি আমার উপর রেগে আছ বলল সে ফুফিয়ে।
তোদের মান অভিমান সিনেমা শেষ হলে এখন ঘরে চল বাবা, আমার ঘুমে চোখ ফেটে যাচ্ছে ,কালকে ইম্পর্টান্ট ক্লাস মনে আছে ?
সম্ভব হলে আজকে কাজী ডেকে তোদের বিয়ে পরিয়ে দিতাম। একটু সবুর কর সোনামনিরা আমি খালাম্মাকে বলে কালকে ডেট ফাইনাল করব বলল বান্ধবী পারভীন হেসে।
দুজনে লজ্জা পেয়ে হাত ছেড়ে দিল।
চল তোমাদের কে বাসায় পৌছে দিয়ে আসি রাশেদ বলল হেসে।
সারা রাস্তা দুজনে নীরবে পার হলো, পারভীন একাই বকবক করতে থাকলো। দুজনের মনের কথা দুজনের স্পষ্ট হয়ে গেছে এখন ,নিরবতা কে এখন মধুর মনে হচ্ছে। সামান্য সময়ের ব্যবধানে অদৃশ্য পালনকারীর মহিমাময় ভালবাসার বিনি সুতার অচ্ছেদ্য বাধনে দুজনে বাধা পড়ল।
(পরবর্তীতে)