Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

ভুতের গলির সেই ভূত কি ফিরে এলো ?????

: | : ০৭/১১/২০১৩

পূর্ব প্রকাশের পর

খুব  সকালে পাখির কলকাকলি কিচির মিচির শব্দে রুবিনার ঘুম ভেঙ্গে গেলো । কিছক্ষণ সে মনে করতে পারলনা কোথায় সে। পরক্ষণে মনে পড়ে গেল গত রাতের স্মৃতি। বাবা রাজীব রহিম কোথায় সবাই। ধড় মড় করে উঠে বসলো বিছানায় সে। তার পাশে কুন্ডলী পাকিয়ে ঘুমিয়ে আছে ছোট জামাল। ওদিকে হাত পা ছাড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে রাজীব। রহিম কোথায় গেল ? তার বাবা অসুস্থ অসহায় বাবা নাজানি কেমন আছে। সবাইকে সে অনেক কষ্টের মধ্যে ফেলে দিলো। যদিও তার স্বভাব হচ্ছে সম্পূর্ণ  বিপরীত।তার পাশে সবার জীবনে সুখ শান্তি নিশ্চিত করা ছিল তার প্রধান কাজ। অনুশোচনায় তার ভিতর টা পুড়ে যেতে থাকলো। তার জন্য ভোগান্তিতে আছে সব গুলি মানুষ। রাজীব সুদুর আমেরিকা থেকে পড়াশোনা  শেষ না করে তার কারণে রাজীব পড়া শোনা বাদ দিয়ে চলে আসল বাবা অসুস্থ যেই রহিম কে ভালো জীবন দেওয়ার জন্য এরকম করলো তার ফল ও হলো উল্টা। তারা বাড়ি ছেলে চলে আসল। কি জানি জামাল ঠিক মত খেয়েছে কিনা স্কুল এ গেল কিনা। সে বড় ভুল করে ফেলেছে। এখন এই ভুল কে শুদ্ধ করবে কিভাবে তা বুঝতে পারছেনা। এখন এই বিয়ে হাসবেন্ড এসব অগ্রাহ্য করা তার পক্ষে করা সম্ভবনা। তার হাসবেন্ড এখন তার কাছে ধর্ম তার ইহকাল পরকাল ।রাজীব কে যতই ভালোবাসুক না কেন। আহ শারীরিক আর মানসিক উত্তেজনায় সে খুব অবসন্ন বোধ করলো।

দরজা খুলে বাহির হতে হোচট খেয়ে আরেকটু হলে রহিম এর গায়ের উপর পড়তে নিয়েছিল। রহিম দরজার মধ্যে মাথা হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। মুখের ভাব খুব ই বিমর্ষ আর ক্লান্ত। মনে হচ্ছে তার খাওয়া ঘুম কিছু হয়নি এই কয়দিনে।

রুবিনা কে প্রচন্ড ভাবে টানতে  লাগলো তার ধর্ম এর জন্য মায়া রহিম এর দিকে চুম্বক এর মত  ।

সে রহিম এর পাশে উবু হয়ে বসলো তার হাত টা সরিয়ে হাটুতে মুখ ডুবিয়ে খুব কোমল গলায় ডাকলো রবি একটু আমার দিকে তাকাবে ? ভালোবেসে রহিম এর নাম বদলে সে রবি।

রহিম আধো ঘুমে আধো জাগরণে ফিল করলো অপূর্ব এক জন বুকে তার মুখ লুকিয়ে আছে। সে ও এই মহিমাময়ী র চুলের অরন্যে মুখ ডুবিয়ে দিল। আহ কি সুন্দর গন্ধ।

রুবিনা নিজেকে সংবরণ করতে পারলনা। কয়েক দিনের অদর্শন দুশ্চিন্তা সব রকম বেদনার ভার থেকে মুক্তি পেতে চাইল রহিম এর শারীরিক সান্নিধ্যের মাধমে। সে উত্তেজনায় পাগলের মত রহিম এর শার্ট টা খুলে বুকে মুখ ঘষতে লাগলো

প্লিস রবি আমাকে ছুয়ে দাও একটু। এত টা প্রগল্ব্তা এত আবেগ দেখানো তার জন্য এটা নিলজ্জতা র পর্যায়ে পড়ে যায়। কিন্তু সে এখন পুরাপুরি দিশেহারা অবস্থায় আছে।

রহিম এর ঘুম ভেঙ্গে ঠিক তখন ই। প্রথম এ সে কিছুক্ষণ বুজলোনা কি হচ্ছে তার পাশে। সে দেখছিল মধুময় সপ্ন। পরক্ষণে সে দেখল আপাকে তার সাথে উন্মত্তভাবে প্রেমে রত। কিভাবে বন্ধ করি আপার এই প্রেমের তুফান। নারীর যে সব স্পর্শে পুরুষ এর বিস্মরণ হয় তার সব ই আপা করছে তার সাথে। তার ইচ্ছে করলো আপার শারীরিক সান্নিধ্যে ডুবে থাকতে। সে আজকে আর নিজেকে সংবরণ করতে পারলনা। প্রচন্ড আবেগ এ সেও আপার মাথা চেপে ধরে রাখল জোরে। তার দুই হাত মুছতে লাগলো অনেক আবেগে অনেক আদরে। মনে হচ্ছে এই আপাকে দিয়ে দিতে পারবে তার শরীরের শেষ রক্ত বিন্দু ও। এই চিন্তা মাথায় আসা মাত্র ই সে আপাকে ছেড়ে দিল নিবিড় স্পর্শ থেকে। সেইজন্য সে আপার জীবন নষ্ট ও সে করতে পারবেনা।

আল্লাহ আপা আপনার চুলের এই অবস্থা কেন? আপনি কি চুল আচড়ান না নাকি ?চুলে হাত দিয়ে জট ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। আপনারে আমাদের বস্তির মেয়েদের মত লাগতাছে। তেল নাই চুল আচড়ানো নাই কৌতুক করে বলল সে।

কয়দিন চুল আচড়ানো হয়নি। গোসল করা ও হয়নি রুবিনা লজ্জা পেয়ে বলল।

আপা আমি আপনাকে কিরকম জীবন দিছি দেখেন ? এর চেয়ে সুন্দর জীবন আমি আপনারে দিতে পারবনা আপা যত ই তুমি আর আমি চাইনা কেন এই প্রথম সে তার প্রিয় আপাকে তুমি করে সম্বোধন করলো।

আসেন আপনার চুল আচড়ে দেই আবার সেই আপনি সম্বোধন এ ফিরে এলো।

সে ঘরের ভিতরে ঢুকে গেল  কিছুক্ষণের মধ্যে আবার ফিরে আসলো ছোট একটা শিশি তে একটু তেল আর দুইটা রংজ্বলা ফিতে নিয়ে।

সরিষার তেল আপা আর এই ফিতা হালিমার ছিল। এই আমার সামর্থ্য আপা।

আপাকে খুব যত্নের সাথে একটা পিড়িতে বসিয়ে তার পিছনে হাটু গেড়ে বসলো রহিম। খুব যত্নের সাথে আপার চুল আচড়ে দিতে লাগলো। রুবিনার  চোখ বুজে এলো আরামে।

আস্তে আস্তে যত্ন করে চুলে বিনুনি পাকাতে পাকাতে বলল সে আপা ভাইজান দেখতে অনেক সুন্দর আমির খানের মত। আপনার সাথে অনেক মানাইবো আপা। সে ক্রমাগত বলতে লাগলো অনেকটা মা যেমন তার অবুঝ শিশুকে বোঝায় কোনটা করা তার জন্য ঠিক কোনটা ঠিক না। আমারে দেখেন আমি তো আপনারে ঠিক মত খাওয়াইতে পারবনা। আমি থাকতে পারি আপনার পায়ের নিচে আপনার পাশে থাকার মত আমার কি আছে? বলে সে রুবিনাকে একই স্টাইল এ বিয়ের রাতে যেভাবে তার গালে ভালবাসার স্পর্শ একে দিয়েছিল তা ফেরত দিল।

আপনি যে ভালবাসা দিছিলেন আমারে আগে তা আজকে আমি ফেরত দিলাম এটা আমার শেষ ভালবাসা আপনার জন্য। আপনারে অনুরোধ করি আপা অনেক দয়া করছেন আমার মত গরীব রে। ভাইজান রে বিয়া করি বাইরে চলি যান। সব দেখবেন  ঠিক হয়ে যাবে।

দুজনের শরীর কাপতে লাগলো শারীরিক উত্তেজনায় নয় দুজনের প্রতি প্রচন্ড মানসিক আবেগ আর শ্রধায়।

দুজনে ছিটকে সরে দাড়ালো। জামাল এসে দুজনের হাত টেনে ঘরের ভিতরে নেওয়ার চেষ্টা করলো।

বাবা ভিতরে চাচা জান মইরা গেছে। দুজনে দৌড়ে এসে ভিতরে ঢুকলো।

সত্যি রাজীব কে দেখাচ্ছে একেবারে মৃত মানুষের মত। হাত পা ছাড়িয়ে পড়ে আছে সে তাকে ঘিরে আছে এক ঝাক মশার পাল।

(পরবর্তীতে)

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top