Today 12 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

দুইজন অমরাবতীর গল্প (বিজ্ঞান কল্পকাহিনী )

: | : ১৪/১১/২০১৩

পূর্ব প্রকাশের পরে

প্রায় একসপ্তাহ হয়ে গেল এই সব যান্ত্রিক নিরাপত্তাকর্মী র হাতে বন্দী হওয়ার পর এখন পর্যন্ত তাদের সবার জীবন একইরকম ই আছে কোনধরনের পরিবর্তন হয়নি। এই নিরাপত্তাকর্মীরা শুধু তাদের অগ্নেয়াস্র হাতে ঘুরে বেড়ায়। কারো দিকে কখনো সেই অস্র তাক করেনা বা কাকেও কোনো ধরনের নির্যাতন করছেনা। সবাই স্বাধীনভাবে যে যার কাজ করছে। নিরা, ইরা, জেরমিক্স, এথেনা তারা কোনো ভয় ভীতির সম্মুখীন তো হচ্ছেনা বরং মনে হচ্ছে এরা আরো স্পেশাল ভাবে মানুষের টেক কেয়ার করছে।

আসলে এরা তো আমাদের হাতে প্রোগ্রামিং জেরমিক্স। আমরাতো মানুষের ক্ষতি করতে পারে এভাবে তাদের প্রোগ্রাম করিনি। বলছে এথেনা।

আমি তো এখন আগের চেয়ে আরো নিরাপদ বোধ করছি এথেনা আপনি কি বলেন। আমি খেতে গেলে একজন আমার টেবিল এর সামনে দাড়িয়ে যায় খাওয়ার বাড়িয়ে দেয় মায়ের মত। নিজেকে বন্দী মনে হচ্ছেনা বরং মনে হচ্ছে অনেক আদর যত্নে আছি জেরমিক্স হেসে বলে।

এখন এখান থেকে কৌশলে আমাদেরকে ওদেরকে ওদের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে হবে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি যাই হোক এই রোবট গুলিকে অকেজো করে ফেলতে হবে। এরা কোনভাবে কখনো কখনো আমাদের সুন্দর শান্তিপূর্ণ জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে।

এদেরকে একেবারে অকেজো করার কথা না ভেবে নুতুন করে প্রোগ্রামিং করা যায়না মহামান্য এথেনা এতক্ষণে বলল ইরা।

ঠিক বলছ ইরা আমি একইভাবে ভাবছি বলল জেরমিক্স।

সেটাতে প্রবলেম আছে জেরমিক্স বলল এথেনা। ওরা এখনো আমাদের ক্ষতি না করলেও আমাদের কে কিন্তু ওরা বন্দু মনে করছেনা। আমাদের কোনো কোথায় ওরা কিন্তু রাজি হবেনা। ওদেরকে বুঝিয়ে ল্যাব এ নিয়ে যে প্রোগ্রামিং করবে তারা আমাদের সে সুযোগ দিবেনা। আমরা তাদের ভালোর জন্য কিছু করব এটা বললে তাদের বিশ্বাস হবেনা। ওরা ভাবছে সম্ভবত মানুষ হিংস্র তাদের যে কোনো সময় ক্ষতি করবে। তারা আমাদের ক্ষতি করছেনা এটা ঠিক তবে নিজেদের নিরাপত্তায় রাখতে সবধরনের আয়োজন তারা করে রেখেছে।

নীরা চুপচাপ এককোনে বসে আছে। তার শিশুপুত্র টি চারিদিকে হামাগুড়ি দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে সবার মনোযোগ ধরে রাখছে।একপর্যায়ে সে গিয়ে এথেনার চেয়ার এর কাছে আসল চেয়ার এর হাতল ধরে দাড়ালো তারপরে হেসে বলল ছোট দুই ফোকলা দাত বের করে

হাউ ডি
এথেনা প্রথমে অবাক পরে জোরে হেসে উঠলো এবং সবাই জোরে হেসে উঠলো হা হা করে।

এইসময় প্লীহা এসেছিল তার দরকারী মেমরি খাদ্য ষ্টোর করতে সে কিছুটা অবসন্ন বা ক্ষুধার্ত বোধ করায়। ত্রিনিদ গিয়ে তার অগ্নেয়াস্র ধরে দাড়িয়ে পড়ল তার দিকে হাসি মুখে ফোকলা দাতে আবার বলল হাউ ডি ?

এবার প্লীহা ও যান্ত্রিক ভয়েস এ হেসে ফেলল সে শিশু টিকে কোলে করে এনে নীরার কাছে এনে দিয়ে তার যান্ত্রিক এবং কড়া স্বরে বলল

ম্যাম তুমি প্রোপার কেয়ার করছনা তোমার বেবী র। এরকম অবহেলা দেখলে আমরা তাকে আমাদের কাছে নিয়ে যেতে বাধ্য হব।

নীরা তাড়াতাড়ি এসে ছেলেকে কোলে তুলে নিল অনুতাপের স্বরে বলল
অত্যন্ত দুখিত আমি আর এরকম হবেনা।

সবার দিকে তাকিয়ে প্লীহা একবার জিজ্ঞাসা করলো তোমরা সবাই ভালো আছ তো ?দেখো তোমরা সবাই যে যার মত কাজ কর। আমরা তোমাদের কোনো ক্ষতি করবনা। ভেবে দেখলাম ইটা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। মহামান্য আয়াবরকে আমরা এখানে আনছি কিছুক্ষণের মধ্যে। সবাই আমরা একসাথে বসে কিছুক্ষণ কথা বলব তারপর আমরা তোমাদের এখান থেকে চলে যাব অন্য কোনো গ্রহে যেখানে আমরা সার্ভাইব করতে পারি।তোমাদের অসুবিধা করার জন্য আমরা দুখিত।

সবাই খুশি হয়ে গেল। নিরা ইরা দুজনে মুগ্ধ হয়ে প্লীহাকে তার সৎ নির্ভেজাল সাহসী নীতিনিষ্ঠ রোবটিক নীতিমালা অনুসরণ করতে দেখে।

ত্রিনিদাদ এর ক্লোন টি এসে তার সাথে হাত মিলালো।
তুমি একজন ভালো নিরাপত্তা কর্মী মানুষ নিশ্চয় তার ভুলের জন্য অনুতপ্ত হবে তোমার কাছে তাইনা নীরা নীরার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করে।

নীরা তার কথার জবাব না দিয়ে প্লীহাকে বলল ধন্যবাদ। আমি ও তাই মনে করি মানুষ তোমাদের কে তোমাদের সততা কর্তব্য নিষ্ঠাকে অবশ্যই মূল্যায়ন করবে।

আমি ও তাই মনে করি সে আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে নীরার দিকে।

———————————————————————————————————————————————————-

ত্রিনিদ এখন অনেক বেশি ভক্ত হয়ে গিয়েছে এই যন্ত্রমানব নিরাপত্তাকর্মী প্লীহার। প্লীহা কে দেখলে সে হাউ ডি বলে ফলো করা শুরু করে। প্লীহা হেসে দেয় তার যান্ত্রিক ভয়েস এ। এই মানব শিশু টিকে তার নিজের ও মানব হতে ইচ্ছে করে।

ম্যাম তোমার তো দেখছি ছেলেকে দেওয়ার মত সময় নাই, তোমার ছেলে ও আমাকে লাইক করছে আর আমার বেশ ভালো লাগছে তো আমাকে দিয়ে দাও। আমি তাকে প্রোপার নলেজ এ বড় করব শিউর। বলল সে হেসে।

তুমি নিলে আপত্তি কি বলল নীরা হেসে তোমার মত টেক কেয়ার আমি ও তো করতে পারিনা।

তোমাদের গ্রহ কি ঠিক হয়েছে প্লীহা আন্তরিকভাবে ভাবে জিজ্ঞাসা করে নীরা। ত্রিনিদাদ এর মৃত্যুর পর এই প্রথম কারো সাথে সহজ স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে।

ভাবছি ইউরেনাস এর বামে আরেকটা নুতুন গ্রহ র সন্ধান পাওয়া গিয়েছে ওটাও হতে পারে বা বুধ এ যেতে পারি। তবে সবাই মিলে যাওয়ার আগে আমি আর মহামান্য আয়াবর দেখে এসব এই গ্রহের সবকিছু আমাদের বডি টেম্পারেচার এর সাথে এডজাস্ট হবে কিনা বা মাধ্যাকর্ষণ শক্তি র বলয় কিরকম সব দেখে শুনে আসতে হবে। ততদিন পর্যন্ত তোমাদের সাথে থাকব ম্যাম তোমরা যদি এলাও কর।

এলাও করার কি আছে এই মহাকাশ যান এখন তোমাদের প্লীহা। আমি ও তোমাদের সঙ্গে চলে যেতে চাই। বলল নীরা আব্দারের সুরে।

বল কি ওই গ্রহের আবহাওয়া তোমার শরীর এক্সেপ্ট করবেনা। বলল প্লীহা বুঝানোর ভঙ্গিতে

আমি তোমাদের মতই যান্ত্রিক। এতক্ষণে নীরা আসল কথা বলল প্লীহাকে।

বল কি তুমি এত মানবিক এত সুন্দর প্লীহা বলল মুঘ্ধতার সুরে।

নীরা খুশিতে লজ্জায় মাথা নত করে।

না আমি কি সুন্দর মানুষ বেশি সুন্দর দেখনা মিস এথেনা কি সুন্দর বলল সে লজ্জা মাখা গলায়।

সবার চেয়ে তুমি বেশি সুন্দর মিস নীরা। তুমি না বললে আমি তো তোমাকে মানুষ মনে করছিলাম।

প্লীহার চোখ চকচক করছে খুশিতে এই অপূর্ব মানবী তাদের মতই একজন যন্ত্রমানবী। এটা ভাবা যায় এত সুন্দর। আর এই শিশুটি কি অপূর্ব।

(পরবর্তীতে)

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top