নিরন্তর
বহুযুগ বন্দী কপোতীর মনোযন্ত্রনা করে আমার মনে বাসা;
আমি অসীম সমুদ্রের তলে তলে তোমারে খুঁজেছি, মেটেনি আশা।
নিচ্ছিদ্র পৃথিবীর বুক চিড়ে উদ্ভব ঝর্ণা আমার মিটায় পিয়াসা।
বুড়িগঙ্গার জল যে ব্যাথা বয়ে বেড়ায় দূর অতীত স্মৃতির,
লালবাগ কেল্লায় যে যন্ত্রনা না পাওয়ার, সে যন্ত্রনা বাঁধে ঘর
আমার মনের মাঝে, নেশাতুর ধুঁপের ধুয়া আপনকে করে পর।
পিয়াসা মেটেনা, আশা আর স্বপ্নগুলো ঘর বাঁধে আত্মকেন্দ্রিকতায়,
যে শিশু মরে জন্মের পরেই তার জন্যে কষ্ট জমে মনে, জাগে ভয়
অভিনয় শেষে অযাচিত ডাস্টবিনের পাশে কেন জীবনের ক্ষয়!
সেই ভয়, সেই শুধু ভয়, প্রতি দিন সহস্র শিশু নিষিদ্ধ হয়ে জন্মে;
প্রতিটি মুহুর্ত কাটে ঘৃনার গন্ডিতে, সমাজের বন্ধিত্বে, অন্ধত্বে, ধর্মে।
হঠাৎ জন্ম নেয়া শিশু যেন পাপ করে বসেছিল অন্যের কর্মে।
অসীম ক্ষমতাবান ঈশ্বরও পারেনা বাঁধিতে তারে ধর্মের বাঁধনে,
সাগরের জলোচ্ছাসে ভেসে গেল পুরো গ্রাম, অগ্নিলাভা বনে বনে,
তবু অভিমান ভুলেছে ভোরের দোয়েল, পানকৌড়ি জলের অলিঙ্গনে।
আমি শুধু ব্যাথার দহনে; গঙ্গা পাড়ে দূর্গ বানালো ইংরেজ শয়তান,
খিলজির রক্ত বাঙলার মাটিতে বিষ, তবু সেই রক্তের দান অভিমান
ভুলে গেছে প্রজাপতি বনে বনে, আগে কি ছিল সে ভুলে গেছে মন!
মেটেনা পিয়াসা, কোন এক অজানা চিরন্তন রহস্যকে জানবে বলে
শুরু হয়েছিল মানব জীবন; আমার সেই মনে মন যেন সমুদ্রের জলে
নিরবধি ভেসে চলা তরী জানেনা তীর কোথায়, কবে যাবে কূলে।
অজানাকে জানা, রহস্যের হয়না কূলকিনারা যেন চীনের প্রাচীর ঘেরা।
নিরন্তর চলাকে জীবন ভেবে ব্যস্ত হয়েছে জীবনের চাহিদা মেটাতে যারা,
আমিও ভিড়ে যাই তাদের দলে, মিথ্যে ছলে জোনাকীরে ভাবি তারা।
আলেয়া সত্য হয়, দৃশ্যমান হয়ে বেঁচে থাকে মরীচিকার প্রেমিকা;
সেই ভেবে প্রেম এসে নিয়ে যায় গোধুলীর আলো, রাত আঁধারে ঢাকা।
বৃষ্টিতে স্মৃতি হয় তার রুপ যার খোঁপায় কঁচুরীফুল, চোখে কাজলরেখা।
সেই রুপের পরশেই বেঁচে থাকা যেমন অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুর আকস্মিকতা
জেনেও বাঁচে নিরন্তর মানব জীবন। নিঃস্ব পৃথিবী কথকথা
বেঁচে খায়। দিনে দিনে অতীত, বর্তমান, জীবন হয় রুপকথা।
২২.১০.১৩, জাজিরা।