Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

ভূতের গলির সেই ভূত কি ফিরে এল???

: | : ০৭/১২/২০১৩

পূর্ব প্রকাশের পরে

দিন মাস ঘন্টা পার হয়ে আরও বছর খানিক পরের ঘটনা।রাশেদ রেহনুমার বাসায় আজ উৎসবের মত।রেহনুমার মা বাবা বন্ধু বান্ধব আর রাশেদ এর আত্মীয় দিয়ে বাসায় আজ জমজমাট পরিবেশ।রাশেদের মার মনস্কামনা পূর্ন হয়েছে আজ।তিনি তার সদ্যপ্রসূত নাতি কে নিয়ে খুব ব্যাস্ত।আল্ট্রাসাউন্ডের রিপোর্ট ভূল প্রমানিত করে রাশেদ রেহনুমার ছেলে হয়েছে।রিপোর্ট ভূল হওয়াতে কেও দূঃখিত না।সবাই আরও বেশী উৎফুল্ল।শুধু রেহনুমার একটু মন খারাপ যেহেতু সে সব মেয়ে বাচ্চার পোষাক কিনেছিল।তাতে কোন অসুবিধা হচ্ছিলনা।

রাশেদ এর কয়েকজন ভাই বোন গিয়ে ব্যাগ ভর্তি করে ছেলে বাচ্চার পোষাক ও কিনে আনল।রাশেদ মনে মনে নিভৃতে তার মিষ্টি বউটার সাথে কথা বলতে চাচ্ছিল।সেটা হওয়ার কোন চান্স পাচ্ছিলনা।সারাক্ষন কেউ না কেউ তাদের ঘিরে রেখেছে।একবার শুধু রেহনুমা চোখ তুলে তাকাতে রাশেদের সঙ্গে চোখাচোখি হয়ে গেল।রাশেদের চোখে কি দেখেছে সে জানে তার সারা শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে উঠল।সেই বিয়ের রাতের কথা মনে পড়ে গেল।বাসর রাতে তারা প্রায় দুইঘন্টা পরে পরস্পরের সাথে কথা বলেছে।লজ্জায় দুইজন মুখ ঘুরিয়ে দুইদিকে বসেছিল।অথচ তার বান্ধবী দের যেই বাসর রাতের গল্প শুনেছিল সে তো ভয় পেয়ে গিয়েছিল।রাশেদকে দেখে মনে হচ্ছিল সে উল্টা ভয় পাচ্ছে তাকে টাচ করতে।রেহনুমা বেশ বুঝতে পারল রাশেদের মেয়েসঙ্গের অভিজ্ঞতা কম।এটাতে সে খুশী হয়েছিল।তার স্বামী নিরাপদ ভাল চরিত্রের মানুষ এটা বুঝে সে নিশ্চিত বোধ করল।এটা সবসময় প্রধান চাহিদা।

সব মেয়ে তার ভালবাসার মানুষকে নিয়ে নিশ্চিত হতে চায়।সে ছাড়া অন্য কোন মেয়ের সঙ্গে স্বামীর কোন গোপন সম্পর্ক নাই এই বোধটা মেয়েদের মধ্যে বেশ নিরাপত্তার আবেশ তৈরী করে।

অনেকটা একই সময়ে কয়েক ঘন্টার এদিক সেদিক হবে আশফাক নীলুফার হয়েছে যমজ বাচ্চা।আশফাকের মাথা খারাপের মত অবস্থা।তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে।একবাচ্চাকে পিঠ থাপড়ে ঘুম পাড়িয়ে শোয়াতে গেল দ্বিতীয়টা বিকট ওয়া শব্দে ঘুম ভেঙ্গে উঠে।বেচারী নীলুফার সারাদিন ঘুম হয়না দেখে রাতে আশফাক ওকে ঘুমাতে দিয়ে বাচ্চার টেক কেয়ার সে করে আর পরের দিন অফিসে ঝিমায়।কলিগরা কেও সহানুভূতিতে পিঠ চাপড়ে যায়।কেও বা হাসে।

আয়েশা মাসুম সেকেন্ড হানিমুনে এসেছে।আয়েশাকে এখন মনে হচ্ছে সে প্রতিটা মুহূর্ত মাসুমের সঙ্গ উপভোগ করছে।আর যেন কোন কমপ্লেইন তার এখন নাই।দুজন হাত ধরাধরি করে হাটছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এসে।হাটতে হাটতে এক কাপলের দিকে তাদের দৃষ্টি চলে যায়।চিনতে অসুবিধা হওয়ার ই কথা।দুঈজনের চেহারা স্বাস্থের বিপুল পরিবর্তন।আলবার্তো আর তার স্তী।দুজনে খুব সাধারন বাঙালী পোশাকে।আগের সেই অভিজাত দম্পতিকে খুজে পাওয়া দুষ্কর ।খুব সাদামাটা সাদা সুতীর শাড়ী মলিনীর পরায় আর আলবার্তোর পোশাক যেন অনেকটা উদাসীন তরুন কবির মত।কিন্তু দুজনকে বেশ উৎফুল্ল মনে হচ্ছে।কি একটা কথা নিয়ে দুজনে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে।মালিনী র স্বাস্থ বেশ বেড়ে গিয়েছে।একটা কাল শালে নিজেকে আপাদমস্তক ঢেকে রেখেছে।

সালাম আন্কল বলতে দুজনে চমকে তাকাল পরক্ষনে খুব উৎফুল্ল হয়ে পরস্পর পরস্পরকে আন্তরিকভাবে জড়িয়ে ধরল।মালিনী আয়েশাকে আলবার্তো মাসুমকে।

এতক্ষনে মালিনীর শালে নিজেকে আবৃত করার রহস্য আবিস্কৃত হল।সে প্রেগনেন্ট।সময় শেষের দিকে চলে এসেছে।

হোয়াট এ সারপ্রাইজ আলবার্তো আন্কল। খুশীর দিন কবে?

আলবার্তোর মত অত্যধিক স্মার্ট মানুষ ও লজ্জা পেয়ে গেল।

বলল এইতো পরের মাস সাত তারিখ। তবে সম্ভাবনা আছে আগে হওয়ার।

আলবার্তোকে দেখলে বুঝতে অসুবিধা হয়না তার বর্তমান সময় সে বেশ উপভোগ করছে।

মালিনী আয়েশাকে জিজ্ঞাসা করল কৌতুকে তোমার কোন নুতুন খবর আছে নাকি?তারপর দুইজনে হেসে ফেলল।

হ্যা আজকে টেষ্টের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলল আয়েশা লজ্জামাখা গলায়।

ওমা তাই নাকি খুশীতে মালিনী ও চিৎকার দিয়ে উঠে।আলবার্তোকে ধাক্কা দিয়ে বলতে থাকে

শোন শোন খুশীর খবর।

আনন্দে গল্পে হাসি ঠাট্রায় কেটে যায় সেইদিনের রাত।

পরিশিষ্ট

উপরে সাত আসমানে বসে বিধাতা ও দেখছেন তার প্রিয় বান্দাদের হাসিমূখ।একসময়ে তাদের দূঃখে তিনি সমব্যাথী হয়েছিলেন।সুখের মাধ্যমে তিনি এই মেসেজটা দিতে সক্ষম হয়েছেন দূঃখের পাশাপাশি সুখ একই সমান্তরালে অবস্থান করে।

জীবন টা হলো বহতা নদীর মত ।জীবন জীবনের নিয়মে চলতে থাকে। ভুতের গলির বাসিন্দাদের জীবন কাহিনী আপাতত কিছুক্ষণের জন্য থেমে গেলেও  পরে অন্য সময়ে অন্য প্রেক্ষাপটে নুতুন ঘটনার বুননে হয়তবা আবার দেখা হবে  ।

সমাপ্ত

 

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top