আকাশ মেঘে ঢাকা
বেশ কয়েকদিন হল শেভ করা হয় না।করব করব করেই করা হচ্ছে না।দুই একজন বন্ধু মাঝে মাঝে মৃদু হেসে বলে-কী রে দেবদাস হয়ে গেলি নাকি?
আমি শুধু মুচকি হাসি।কিছু বলি না।ভাবি,শেভ না করলে বুঝি দেবদাস হয়ে যায়?আমার প্রিয় বন্ধুর ধারণা-যে মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল-সেটা ব্রেক আপ হয়ে গেছে।তার এটি ঘোরতর বিশবাস।কারণ তার সাথে আমার যখনি দেখা হয়েছে(চার পাঁচ দিন ধরে),তখনি একটি গান শুনতে পেয়েছে-
তবু বারবার তোকে ডাক দেই,একি উপহার নাকি শাস্তি?আমি ভুলে যাই,কাকে চাইতাম,আর তুই কাকে ভালবাসতি?
বারবার ও বলেছে-সব ঠিকঠাক আছেতো?আমি কিছু বলিনি।এড়িয়ে চলে এসেছি।কয়েকদিন হল বউদিকে কল দেই না।আগে প্রায় প্রতিদিনই কল দেওয়া হত।বউদি হয়তো তাই আজ সকালেই কল দিয়েছেন।
-কি রে,তোর কোন খোজখবর নেই?
-হু।
-কোনও সমস্যা?
আমি মৃদুস্বরে বললাম-নো প্রভলেম।কারন আমিই সকল সমস্যার সমাধান।
বউদি শুনে হাসল।আমি কি হাসির কিছু বলেছি?হয়তো বা তাই।নইলে এমনি এমনি হাসতে যাবে কেন?
মাঝে মাঝেই একটি মেয়ে আমাকে মিস কল দেয়।কখনো কখনো কল দেই,আবার দেই না।যদিও কোনদিন দেখিনি,চিনি না,জানি না।একদিন বলল-দাদা,আপনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে হয়।
আমি বলি-কয়েকমাস পর ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা।আর ভর্তি হলেতো দেখা হবেই।
কথাবার্তা বেশিক্ষণ এগোয় না।৪-৫ মিনিট।হঠাৎ হঠাৎ ও ম্যাসেজ দিত।একটি ম্যাসেজ আমার খুব ভাল লেগেছিল।
-তুমি আসবে বলে অবিন্যস্ত কচুপাতায় হীরার টুকরা বৃষ্টি হয়।
ওকে জিজ্ঞেস করতে চেয়েছি,লাইনটির স্রষ্টা কে?কিন্তু কথা বলার সময় এটি যেন মাথাতেই থাকে না।তাই এটির স্রষ্টা অজানাই রয়ে গেল।
ও মাঝে মাঝে বলে-ধর্মের কারণে বারবার আপনি আমায় রিফিউস করছেন।ধর্মই কী মানুষের জীবনে শেষ কথা?
আমি কিছু বলি না।চুপ করে থাকি।
ও বলতে শুরু করে-ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য।এর জন্য যদি জীবন ধ্বংসের দিকে যায়,তাহলে সে ধর্ম আমি মানি নে।সে হিন্দু হোক,খ্রিস্টান হোক,ইসলাম হোক…যা হোক না কেন?
আমি শুধু শুনি।এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু বলি না।এখানে পড়তে আসার আগে মা বলে দিয়েছেন-বাবা,প্রেম করলে কোনও স্বজাতির মেয়ের সাথে করো।নইলে সব শেষ হয়ে যাবে।
তাই আমি ওকে বাধ্য হয়েই বলি-না,সম্ভব না।ফোন রাখি।
এই বলে কল কেটে দেয়।উদভ্রান্তের মত রাস্তা দিয়ে ঘুরি একা একা।কিছু পাখি উড়ার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হই-আনমনে বলে উঠি-বাহ,চমৎকারতো!