কোটিপতি আমি ও নানান পর্দ ।
আমার ধারনা আমি অতি দ্রূতই শ’কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবো । তাই ইতিমধ্যেই আমি কাগজ কলম নিয়ে বসে পড়েছি । এতটাকা দিয়ে আমি কি করব তার একটা তালিকা থাকা উচিত । না হয় দেখা যাবে আ খরচ কু খরচ করে বসে আছি ।
প্রথমেই ঢাকায় দশ কাঠার একটা জমি কিনব । প্রতি কাঠা এক কোটি করে হলে আমার এখানে খরচ হবে দশকোটি টাকা । তারপর সেখানে আধুনিক একখান ডুপ্লেক্ক্য বাড়ি বানাব । অত্যাধুনিক সব ফিটিংস । খরচ করবো আরো পাঁচ কোটি । একখানা দামি গাড়ী না হলে আমার ইজ্জত টেকানো যাবে না । ইজ্জতের মূল্য দিতে গিয়ে কোটি খানেক টাকা এখানেও বের হয়ে যাবে । টাকা থাকলেই হয় না । সমাজে সম্মানজনক ভাবে বাঁচতে গেলে একটা পেশা লাগে । এই বয়সে পেশা পাবো কোথায় ? পেশা’তো আর ধার করা যায় না । করা গেলে না হয় চেষ্টা করা যেতো । তাই চিন্তা করেছি পঞ্চাশ কোটি টাকা খরচ করে কোন ব্যাংকের একখানা ডিরেক্টর পদ জবরদখল করে নিজেকে একটু জাতে তুলবো । বাকি টাকা ব্যাংকে এফডিয়ার করে মাসে মাসে ইন্টারেস্ট ( বাঙ্গালী সুদ শব্দটাকে নেক নজরে দেখে না তাই শব্দখানা এড়িয়ে গেলাম , তাছাড়া শব্দটায় কেমন যেন কাবুলীওয়ালা কাবুলীওয়ালা ভাব আছে ) নেব ।
আমি আমার জীবন সম্বন্ধে এত নিশ্চিন্ত আগে কখনো হইনি । অবশ্য এত টাকার স্বপ্নও আগে কখনো দেখিনি । এবার টাকার কথায় আসি । দশম জাতীয় নির্বাচনের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ছয়শত কোটি টাকা । ইতিমধ্যে উক্ত নির্বাচনের তিনশত আসনের একশত চুয়ান্ন আসন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছে । বাকী আসনগুলোতেও যদি অনুরূপ ভাগ ভাটোয়ারা বজায় রাখা যায় তবে নির্বাচনের আর কোন প্রয়োজন হবে না । ফলে তখন বেঁচে যাবে ছয়শত কোটি টাকা । এই ছয়শত কোটি টাকার একশত কোটি টাকা পরামর্শক হিসেবে আমাকে দিয়ে বাকী পাঁচশত কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করে রাষ্ট্র এবং আমার কিঞ্চিৎ উপকার করলে কারো কোন দাবী থাকার কথা নয় ।
আমার কোটিপতি হওয়ার বেশী দেরী নেই । প্লিজ হিংসা করবেন না ।
………………………………নিঃশব্দ নাগরিক ।