আয়না দর্শন ।
ষোল কোটি আদমের বত্রিশ কোটি চক্ষুকে তৃপ্তি দিতে অঘোরে বেশ কিছু চ্যানেলের পয়দা করা হয়েছে । এদিকে অভিনেতা অভিনেত্রীর হিড়িক পড়ে গেছে । তারা এ চ্যানেল ও চ্যানেলে ঢু মারতে মারতে তাদের অনন্য অভিনয় প্রতিভা দিয়ে আমাদের মুগ্ধ করে চলছেন । আমরাও চক্ষুর পলক না পেলে তাদের অভিনয় গুনের স্বাক্ষী থেকে নিজেকে ধন্য করছি । পাশাপাশি ইন্ডিয়ান নাটকের বাংলা চরিত্রায়নে মুগ্ধ বিমুগ্ধ হয়ে আন্ডা বাচ্চাদের সিকেয় তুলেছি । বছর বছর আন্ডা বাচ্চা পয়দা দেয়া সম্ভব কিন্তু মেগা নাটকের খন্ডাংশও যদি ছুটে যায় তবে ভাবীর কাছে মান সম্মান টেকানো কিছুতেই সম্ভব নয় । তাই লালসালু উপন্যাসের তাবিজ যেমন টিকিয়া থাকে তেমনি এদেশের রমনীদের কাছে বন্দী হয়ে থাকে টিভির রিমোট । আন্ডা বাচ্চা হারিয়ে গেলেও এদের কাছে রিমোর্ট থাকে অতি যত্নে । রিমোর্ট দখলে নারীর অগ্রযাত্রা যে ঈর্ষনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে বেগম রোকেয়ার আও্বায় কোন তৃপ্তি পৌঁছিয়াছে কিনা তা এক বিধাতা ব্যতীত অন্য কেউ ভালো বলিতে পারিবেন না ।
আমাদের চ্যানেলগুলো আমাদের বেশ লাইভ করে তুলেছে । জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আপনাকে লাইভ প্রচার করে যাবে এরা । হয়তো মৃত্যুর অনুভূতি নিয়েও আপনাকে সাক্ষাতকারের মুখোমুখি হতে হবে অতি শীঘ্র । জিজ্ঞাসা করবে –আপনার ড্রেসটা লাল কেন ? এসময়তো আপনার সাদা ড্রেস পড়া উচিত ছিল । চুন্নী সাহার প্রচারিত লাইভ আপডেট আমাদেরকে উপভোগ্য মৃত্যুর একটা আমেজ দিবে । সত্যি ভাবতে ভালোই লাগছে ।
মেজাজটা তালগোল খারাপ । তাই আজেবাজে লিখছি । যদিও আমার দুঃখ প্রকাশ করা উচিত । তবু আমি সে পথে না গিয়ে আর একটু আজেবাজে লিখে সটকে পড়বো ।
ইদানীং প্রায় সবকটা চ্যানেলে নানান অপরাধ নিয়ে নানান অনুষ্ঠান প্রচার করছে । যদিও বিষয়টা ধার ( এমনকি উপস্হাপনাও) করা তবু সে বিষয়ে গেলাম না । আমি বরং এসবকে কিছু প্রশ্রয় দিয়ে আজকের লিখার মূল প্রসঙ্গে যাই । এসব চ্যানেল অন্যের দোষ ত্রূুটির যেমন কেচ্ছা কাহিনী প্রচার করে তেমনি করে কেন নিজ চ্যানেলের মালিকের কেচ্ছা কাহিনী প্রচার করে না । তাহলে আমরা জানতে পারতাম দরবেশ বাবার কেরামতি । আমরা জানতে পারতাম নানা চ্যানেলের নানান মালিকের ফুলে ফেঁপে উঠার তথ্য ।
আমাদের আফসোস আমরা কখনো সরকারের তাবেদার । কখনো মালিকের ।
এই আমরাই সত্যের বয়ান দেই । ইতিহাসের পাঠ শেখাই ।
হে হে আমরাই ন্যায়নিষ্ঠ সাং……………….
নিঃশব্দ নাগরিক ।