মুক্তি যুদ্ধের গল্প- -৬ষ্ঠ পর্ব
মুক্তি যুদ্ধের গল্প –৬ষ্ঠ পর্ব
সেদিন ছিল রবিবার । তারিখ কত ছিল তা আজ আর মনে নেই । তোমাদের তো আগেই বলেছি আমাদের মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানীতে আমিই ছিলাম সবচেয়ে কনিষ্ঠ মুক্তি যোদ্ধা তখন তো আর একথা ভাবিনি যে, তোমাদের মতো কোন ভাগিনাদের একদিন মুক্তি যুদ্ধের গল্প শুনাতে হবে । হয়তো বা তখন যারা পূ্র্ণ বয়স্ক ছিল তারা তাদের ব্যক্তিগত ডায়রীতে ঘটনার তারিখ সহ ঘটনার বর্ণনার একটি শর্ট নোট নিয়ে থাকবেন । আমার কিন্তু তখন সে রকম বয়সই হয়নি । আমিতো তখন মুক্তি যুদ্ধে গিয়েছি নব যৌবনের উত্তেজনায়, বুদ্ধির পরিপক্কতায় নয় ।কাজেই জীবনের বিশেষ বিশেষ মূহূর্তের কথা গুলো যে ডায়রী ভুক্ত করে রাখতে হয় তেমন বয়সই তখন আমার হয়নি । আমার তো তখন এমন বয়স যে শুধু মাত্র রাইফেল দিয়ে গুলি ছুড়তে জানি। হেড়ে গেলে দৌড়ে পালাতে জানি আর জিতে গেলে খুশীতে উল্লাশ করতে জানি । কোন বিষয় সম্পর্কে পরিকল্পনা করে পদক্ষেপ গ্রহন করার মতো মস্তিস্কের পরিপক্কতা তখনো আমার আসেনি। তাহলে তো বুঝতেই পারছো যে, এখন এই চল্লিশ বছর পূর্বে সংঘঠিত ঘটনার গল্প শুধু মাত্র স্মৃতি সাতরে যে টুকু মনে করতে পারি সে টুকুই বলতে হবে । হয়তো আমার বলার মাঝ খান থেকে অনেক গুরুত্ব পূর্ণ কথাই বাদ পরে যাবে । যা বলতে পারলে তোমাদের কাছে মুক্তি যুদ্ধের গল্প আরো উপজিব্য হতে পরতো ।তাছাড়া কোন বিষয় গুছিয়ে বলার ক্ষমতাও তো সবার থাকে না । কাজেই সে রসবোধ থেকে বঞ্চিত হ ওয়ার জন্য আমাকে ক্ষমা করতে হবে।
বেশ কিছু দিন যাবৎ আমাদের নিকট সংবাদ আসছিল যে, আমাদের ক্যাম্প থেকে অনুমান ৫ মাইল দূরে ফুলবাড়ীয়া রাজাকার ক্যাম্পের রাজাকাররা এলাকার লোক জনদের খুব অত্যাচার করছে । বিগত দিন গুলিতে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল তাদের ধরে ধরে এনে তারা রীতিমতো চাঁদা তুলছে । অত্যাচার করছে নির্মম ভাবে । প্রতিনিয়তি এ রকম খবর আসছিল যে, রাজাকারদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ গ্রাম ছাড়া হচ্ছে। এ খবর আমাদের পর্যন্ত থেমে থাকল না। লোকজন এই খবর আমাদের সখিপুর হেড কোয়াটারেও পৌঁছে দিল। ফলে একদিন সখিপুর হেড কোয়াটার থেকে নির্দেশ এল ফুলবাড়ীয়া অপারেশন করতে হবে । আমরা খুঁজ খবর নিতে থাকলাম । আমাদের গুপ্তচর নিয়োগ করে রাজাকার ক্যাম্প রেকি করানো হল। প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেল ফুলবাড়ীয়া হাটে একটি পাঁকা ঘরে রাজাকাররা ক্যাম্প স্থাপন করেছে। ক্যাম্পটি নদীর ধারে । কাজেই আমাদের এলাকার পাশ দিয়ে যে নদীটি বয়ে গিয়েছে সেই নদীটিই একটু বড় আকার ধারন করে ফুলবাড়ীয়া হাটের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে। পাহাড়ীয়া এলাকার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী। দুই ধার বেশ উচু । মাঝ নদী দিয়ে নৌকা বেয়ে গেলেও একটু দূর থেকেই দেখা যায় না। তাছাড়া নদীর ধার দিয়ে প্রায় এলাকায়ই বন । কোন কোন জায়গায় ঘন বন আবার কোন কোন এলাকায় ঝোপ ঝাড় ঘেরা বন । তখনকার যুগে অবশ্য বনে বাঘ ছিল না । তবে শুকর, বানর, শিয়াল ভালুক ইত্যাদি ছিল। তারা নিজেরা আক্রান্ত হয়েছে মনে করলে প্রতি আক্রমন চালাতো। আমরা বড়দের কাছে শুনেছি, এই নদীতেই এক সময় কুমিড় ছিল। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা কুমিড়ের ভয়ে নদীতে নামতো না। এই নদী দিয়েই আমাদের এলাকার ফড়িয়ারা লোকাল হাট হতে পাট ক্রয় করে সেই পাট নৌকায় ভর্তি করে ফুলবাড়ীয়া হাতে নিয়ে বিক্রী করতো। ফুলবাড়ীয়া হাট সোমবারে বসে।কাজেই আমরা রবিবার রাতকেই অপারেশনের জন্য ঠিক করলাম । অপারেশনের জন্য রবিবার দিন গত রাত হওয়ার সুবিধা এই যে, ঐ রাতে আমাদের এলাকা থেকে পাট ভর্তি প্রচুর নৌকা যায় ফুলবাড়ীয়া হাটে। আমরাও সেই নৌকাতেই সহজে আত্বগোপন করে যেতে পারবো । অন্যথায় খোলা কোন নৌকায় গেলে দূর থেকেই আমাদের দেখে ফেলবে । আর সেই সুযোগে রাজাকাররা আমাদের প্রস্তুতির আগেই আমাদের নৌকার উপর আক্রমন করে বসতে পারে । ফলে আমাদের প্রাথমিক নিরাপত্তার কারণে একটি নৌকা ঠিক করা হলো । সেই নৌকার ছইয়ের উপর দিয়ে পাট ছড়িয়ে দেওয়া হল। যাতে নৌকাটিকে পাট ভর্তি নৌকা বলেই মনে হয় । আমরা নিজ নিজ অস্র নিয়ে আমাদের নৌকায় করে পাট ভর্তি নৌকার ভহরের সাথে সন্ধ্যা রাতে ফুলবাড়ীয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। তখন হয়তো আগষ্ট মাসের দিক হবে। বর্ষার শেষের দিকে। মাঠ থেকে পানি নেমে গিয়েছে। কিন্তু নদী তখনো পানিতে টইটম্বুর। আকাশে সাদা কালো মেঘ।কিন্তু আকাশে চাঁদ না থাকায় সারা প্রকৃতি যেন কালো আলখেল্লার ভিতর নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে। চারি দিকে কিছু দেখা যায় না। শুধু মাত্র আকাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পিট পিট করে জলছে।তাদের অতি তুচ্ছ আলোতে যা কিছু দেখা যায় সেটাই সম্বল। কোন টর্চ লাইট জালাতে পারবে না। কেহই বিড়ি সিগারেট ফোকাতে পারবে না। কারণ বিড়ি সিগারেটের আগুন অন্ধকার রাতে অনেক দূর থেকে দেখা যায়। আর তাতে মানুষ দেখা না গেলেও মানুষের অস্তিত্ব সহজেই বুঝা যায়। ফলে কোন অভিযানে গিয়ে সিগারেট খাওয়া একদম নিষেধ। ঘুট ঘুটে অন্ধকারের মধ্যেই ঝি ঝি পোকা তারস্বরে ডেকে যাচ্ছে, যেন তাদের মিলন উৎসব শুরু হয়েছে। অনেকের ডাকের শব্দে মনে হচ্ছে যেন বহু দিন নির্বাসনে থাকার পর তার প্রাণ প্রিয়ার সাথে দেখা হয়েছে। ব্যাঙেরাও তাদের সাথীদের ডাকতে পিছিয়ে নেই। তাদের ডাকে ফুটে উঠছে আখের গুটানোর শব্দ। তারা বর্ষার শেষে নিজেদের গুটিয়ে ফেলছে। পালাতে চাছ্ছে স্বপরিবারে পূনরায় বর্ষার আগমনে বেড়িয়ে আসার প্রস্তুতি নিয়ে। মাঝে মাঝে ভগ্ন হৃদয়ে ডেকে উঠছে নিশাচর পাখি পেঁচা, যেন কতদিন আগে হাড়িয়ে ফেলেছে তার সাথীকে তাই সে আবার খুঁজা ছেড়ে দিয়ে বসেছে প্রিয় বিছ্ছেদের বিলাপ নিয়ে। আমার হৃদয়টাও কেন যেন বার বার হো হো করে উঠছিল। বার বার ভেসে উঠছিল প্রিয় জনের মুখ।আমি নিজের মনকে উদাস প্রকৃতির হাত থেকে দূরে রাখতে বার বার আওড়াচ্ছিলাম আমাদের আক্রমন পরিকল্পনা। আমাদের রেকিতে প্রাপ্ত তথ্য মতে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, আমরা স্থল ভাগ দিয়ে আক্রমন করবো। নদীর দিক খোলা থাকবে। যদি রাজাকাররা পালিয়ে যেতে চায় তবে তাদের জন্য নদীর দিকটাই খোলা থাকবে। আমাদের আক্রমনে রাজাকাররা নদী পথে পালালে তারা কালিয়া কৈর পৌঁছানোর আগে কারো সাহায্য পাবে না। ফলে আমরা নদীর পার ধরে হেটেই তাদেরকে নদীতে ফেলে মারতে পারবো।আর যদি তারা যুদ্ধ চালিয়ে যায় তবে তাদেরকে নৌ পথ ছাড়া অন্য কোন দিক দিয়ে সাহায্য পাঠাতে পারবে না।অবস্থা যদি সে রকম হয়, তা হলে নৌ পথে আগত সাহায্যের নৌকা আমরা সহজেই ঠেকিয়ে দিতে পারবো। অতএব তাদের সাহায্য প্রাপ্তির আশা একে বারেই নেই বললেই চলে।
তারা যুদ্ধ চালিয়ে গেলে এক সময় তাদের গুলি শেষ হয়ে যাবে। ফলে তারা আত্নসমর্পন করতে বাধ্য হবে। আমরা আক্রমন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের কমান্ডারের এই অভ্যাসটা ভাল ছিল। কোন অপারেশনে যাওয়ার আগে তিনি অপারেশনের পরিকল্পনা নিয়ে চুল চেরা আলোচনা করতেন। কাজেই ঐ দিনের পরিকল্পনা আমার নিকট বেশ গ্রহন যোগ্য বলেই মনে হয়েছিল। আমরা পাটের নৌকার সাথে গিয়ে ফুলবাড়ীয়া পৌছার এক কি,মি,দূরে আমাদের নৌকা থামিয়ে দিলাম। নদীর ধারে নৌকা বেঁধে নদীর পার ধরে হেটে রওয়ানা হলাম। গা ছম ছম করা অন্ধকার। কিন্তু উত্তেজনার কারণে মন থেকে ভয় যে কোথায় চলে গেছে বুঝা মুসকিল। অপারেশনের সুবিধা এই যে, যতক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ না হয়, ততক্ষণ কোন ভাবেই মনে হয়না যে, আমরা নিজেরাও এই যুদ্ধেই মরে যেতে পারি। শুধু মনে পরে কিভাবে অপর পক্ষকে মারবো। যদি কোন ভাবেই মনে হত যে, নিজেরা এই যুদ্ধে মারা যেতে পারে তা হলে তারা কখনো বিনা বেতনের এই স্বাধীনতার যুদ্ধে যোগদান করতো না। আর এই সকল যুদ্ধে যারা অংশ নেয় তাদের মনের অনুভুতিই থাকে অন্য রকম। তাদের মনের মধ্যে সব সময় জেগে থাকে তারা মারবে মরবে না। আমরা অল্পক্ষনের মধ্যেই ফুলবাড়ীয়া বাজারে পৌঁছলাম। তখন শেষ রাত। বাজারে তখন জেগে থাকা কোন লোকজন পাওয়া গেল না। শুধু মাত্র দুইজন পাহাড়া দ্বার পেলাম। আমরা তাদেরকে আমাদের সাথে নিয়ে নিলাম, যাতে তারা কোন ভাবে রাজাকারদের নিকট আমাদের সংবাদ দিতে না পারে। আমাদের কমান্ডার খুবই দ্রুত এলাকা পরিদর্শণ করে আমাদের পজিশনের জায়গা দেখিয়ে দিলেন। প্রত্যেক জায়গায় দুই জন করে পজিশন নিলাম। ফায়ার অপেন হওয়ার আগে একজন নদীর ধারে গিয়ে সকল নৌকার মাঝিদের বলে এল যাতে তারা অতি দ্রুত এক মাইল দূরে চলে যায়।
কিছুক্ষণ পর নৌকা সব দূরে চলে গিয়েছে নিশ্চিত হয়ে আমাদের কমান্ডার ফায়ার ওপেন করার আদেশ দিলেন। তিন পাশ থেকে গুলি ছুড়া শুরু হল। রাজাকাররা প্রথম দিকে গুলি ছুড়ে আমাদের গুলির প্রতি উত্তর দিল। কিন্তু ঘন্টা খানেক পর তাড়া আর কোন গুলি ছুড়ছিল না। আমরা তখন টান টান উত্তেজনায় কাঁপছিলাম। তখন আমাদের মনে একটাই কল্পনা, রাজাকাররা আত্বসমর্পন করছে। আর অল্পক্ষণের মধ্যেই আমরা ৮/১০ টি রাইফেল পাচ্ছি। রাজাকারদের গুলি ছুড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার আধ ঘন্টা পর আমাদের কমান্ডার উচ্চস্বরে রাজাকারদের বললেন-তারা আত্বসমর্পন করলে তাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে। বার বার বলা সত্তেও রাজাকারদের কোন জবাব পাওয়া যাচ্ছিল না। কেহ কেহ মনে করলো রাজাকাররা হয়তো মারা গিয়েছে। কেহ কেহ মন্তব্য করলো, সম্ভবত তাদের গুলি শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন পূর্বাকাশ ফর্সা হয়ে গিয়েছে। আর কিছুক্ষণ পরই সূর্যের আলো ফুটে উঠবে। আমাদের কিছু সহ যোদ্ধা আর অপেক্ষা করতে চাচ্ছিল না। ফলে যা হবার তাই হলো। তারা অতি উৎসাহে দ্রুত গতিতে এগিয়ে গিয়ে রাজাকারদের ক্যাম্পের ঘরের দরজায় লাথি মারতে শুরু করলো।ভুল হলো এই যে, অধিক উত্তেজনার কারনে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভুলেই গিয়েছিল তারা। নিয়মানুসারে দরজা ভাংতে হলেও ঠিক দরজা বরাবর দাঁড়াতে নেই। কিন্তু আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সেই ভুলটা করে ফেললো।তারা দরজার সামনে দাঁড়িয়েই দরজায় লাথি চালাল। ফলে ভিতর থেকে রাজাকাররা দরজা না খুলেই দরজা বরাবর গুলি চালাল। আর তাতেই সর্বনাশটা হয়ে গেল আমাদের। রাজাকারদের গুলিতে সাথে সাথেই আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আঃ আজিজ এবং আমাদের দলের টু-আই-সি মাতিতে লুতিয়ে পড়ল। আমরা কোন রকম ক্লোরিং করে টু-আই-সি ও আঃ আজিজকে নিয়ে দরজা থেকে সরে এলাম এবং দ্রুত ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে রোয়ানা হলাম। সামান্য ভুলের কারণে আমাদের নিশ্চিত বিজিত যুদ্ধে আমরা পরাজিত হলাম। আমরা আজিজকে নিয়ে ডাক্তারের নিকট পৌঁছার আগেই সে মারা গেল । আমাদের টু-আই-সি অনেক দিন চিকিৎসার পর বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে তার বাম হাত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। আমরা সকলে একত্র হোয়ার পর দেখা গেল আমাদের একজন মুক্তিযোদ্ধা গ্র্যানেড নিয়ে এ্যাডভান্স রেকিতে ছিল সে ফিরে আসেনি। পুনরায় লোক পাঠিয়ে সংবাদ নিয়ে জানা গেল সে ধরা পড়েছে। এই যুদ্ধে আমরা খুব বড় আকারের একটি ধাক্কা খেলাম। তবে এই খন্ড যুদ্ধে আমরা হাড়ে গেলাম বটে, কিন্তু আমাদের এই শিক্ষা হল যে,যুদ্ধের সময় অপর পক্ষকে কোন ভাবেই দুর্বল ভাবতে নেই। দ্বতিয়তঃ কোন আবস্থাতেই কমান্ডারের নির্দেশের বাইরে কোন কাজ করতে নেই। কারণ এই যুদ্ধে আমাদের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধাদের দরজার নিকট যেতে মানা করেছিলেন। কিন্তু অতি উত্তেজনার কারণে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি। দ্রুত সামনে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের থামাতে গিয়েই তিনি আহত হলেন এবং আমরা আমাদের একজন সাথীকে চিরতরে হাড়ালাম, একজন ধরা পরলো। পরবর্তীতে আমরা আর সেই রাজাকারদের প্রতিশোধ নিতে পারিনি। কারণ ঐ দিন দুপুরেই তারা ফুলবাড়ীয়া ক্যম্প ছেড়ে চলে গিয়েছিল। স্বাধীনতার পর আমরা ফুলবাড়ীয়াকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজিজের নামে আজিজ নগড় নাম দিয়েছিলাম। হাড়িয়ে যাওয়া সাথীদের কথা মনে হলে আজও হৃদয় ভাড়াক্রান্ত হয়ে উঠে।তখন এদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের বলতে এচ্ছে করে তোমরা সরকসর কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া সকল সুবিধা নিয়ে নাও,শুধুমাত্র আমাদের সহ যোদ্ধা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন তাদের ফিড়িয়ে দাও। আমরা এই দেশের কাছে আর কিছুই চাই না। আমরা আমাদের ভাইদের ফেরত চাই। পারবেকি তোমরা তাদের ফেরত দিতে? জাতির কাছে এটাই আমাদের চাওয়া।