Today 11 Oct 2025
Top today
Welcome to cholontika

গৃহিণী, সবচেয়ে সৃজনশীল পেশার মর্যাদা পাওয়া উচিৎ ।

: | : ২৮/১২/২০১৩

একটি মেয়ে পড়াশোনা করে, শিশু পালন করে, বাড়ির সবার ভালোমন্দ খেয়াল রাখে, শ্বসুর শাশুরীর যত্ন করে তারপর তার নাম হয় গৃহিণী ।এ তো বললাম শহুরে আধুনিক সমাজের কথা । যদি গ্রাম্য সমাজের কথা বলা হয় তবে সংসারের সব কাজ দেখার পাশাপাশি শিশু পালন সহ সামগ্রিক কাজ করাটাও বাড়ির একজন বৌয়ের কাজ ।কিন্তু এত কাজ, এত চিন্তা এবং সবশেষে গোছানো একটা সংসার রচনার পরও গৃহিণী শব্দটি এখনও অর্থনৈতিক কাজের মধ্যে ধরা হয় না ।অথচ বাইরের সকল অর্থনৈতিক কাজের মূলে রয়েছে একটি ঘর, সেই ঘরের গৃহিণীর অবদান ।
আমাদের শিক্ষিত সমাজে একটি ব্যপার খুবই লক্ষনীয় হয়ে দাড়াচ্ছে সেটা হলো গৃহিনীকে কোন পেশাদারিত্বে সম্মান সঠিকভাবে দেওয়া হয় না । শিক্ষিত বলতেই শুধু জীবিকা অর্জনের জন্য সার্টিফিকেট অর্জন এ কথা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে । একজন উচ্চ শিক্ষিত নারী যদি গৃহিণী হিসাবে ঘরে কাজ করে তবে তার যথাযথ সম্মান এবং কাজের মূল্যায়ন পাওয়াটা খুবই জরুরী । গৃহস্থালি অর্থনীতির উপর একটি দেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভশীল । যদি একজন গৃহিণী তার সঠিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তবে সেই ঘরের সন্তান সঠিক দিক্ষা না পেয়ে সমাজের বা দেশের বোঝা হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় । তেমনি ভাবে ঘরের কাজগুলো করার জন্য বাইরের মানুষ ঘরে রেখে শিশু পালন, শিশুকে পড়াশোনার দায়িত্ব তাদের উপর ছেড়ে দেওয়া অর্থনীতির জন্য যেমন সঠিক পদক্ষেপ নয় শিশুদের মূল্যবোধ বিকাশেও বড় অন্তরায় ।
যে মায়েরা বা স্ত্রীরা কর্মে আছেন তাদের পক্ষে বা বিপক্ষে কথা বলছিনা । আমি বোঝাতে চাইছি যে বা যারা ঘরে কাজ করেন তারাও একটা পেশাদার কাজের মানুষ । তাদের শক্ত হাতের বিকশিত কাজের ফলে আমাদের সমাজের ঘরগুলো একটি একটি করে সামাজিক অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে দিচ্ছে । কিন্তু উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার পর জীবনকে প্রতিষ্ঠিত বলতে যে শুধুমাত্র চাকুরি পাওয়াকে একটি পরিচয় হিসাবে ধরা হয় আমি এর তীব্র বিরোধী । যদি পরিবার একটি সামাজিক সংগঠন হয় তবে অবশ্যই পরিবারের কাজও সামাজিক অর্থনীতির ভিত্তি । একজন গৃহিণীও একটা অর্থনৈতিক কাঠামোর অংশ । কিন্তু এই গৃহিনীকে যদি অপেশাদার বা ঘরের কাজের মানুষ হিসাবে বিবেচনায় ছোট করা হয় তবে কি আমরা দায়বদ্ধ হবো না ? সামাজিক সবচেয়ে বড় সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেও একটি উচ্চ শিক্ষিত মেয়ের যদি শিক্ষিত সমাজে অবহেলিত হতে হয় তবে তা আমাদের জন্য নিত্যান্তই অপমানের ।
আমি বলতে চাই আমার মা, শ্রদ্ধেয় মা…. আমাদের ঘরে থেকেই, গৃহিণী হয়েই আজ আমাদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন । আজ আমাদের সাফল্যে কি তাঁর মর্যাদা বাড়েনি? আমাদের দ্বারা দেশের অর্থনীতির চাকা যদি এতটুকুও ঘোরে তবে ঐ শ্রদ্ধেয় গৃহিণী আমার মা তার ভাগ পাবে না !
আমার চাওয়া একটিই তা হলো যদি চাকুরী একটি পেশা হয়, যদি ব্যবসা একটি পেশা হয়, যদি শিক্ষকতা একটি আদর্শ পেশা হয় তবে গৃহিণীকেও একটি আদর্শ পেশা হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠা করা উচিৎ । কারন এজন গৃহিণীই তার সন্তানকে প্রথম শিক্ষা তার মা হিসাবে দিয়ে থাকেন ।
সকল কর্মমূখী, গৃহিণী এবং কর্মজীবি নারীর প্রতি শ্রদ্ধা কারন তারাই আমাদের অর্থনীতির মূলে থেকে আমাদের সবচেয়ে বড় সামাজিক সংগঠনগুলোকে(পরিবার) এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ।

লেখক সম্পর্কে জানুন |
সর্বমোট পোস্ট: ০ টি
সর্বমোট মন্তব্য: ১ টি
নিবন্ধন করেছেন: মিনিটে

মন্তব্য করুন

go_top