মনে পড়ে
মনে পড়ে
ফ্যাকাসে বিবর্ণ আকাশ,
তেজ কমে গেছে সূর্যের,যেন শেষ ফাগুনের বনরাজি।
সেই যে কখন হয়েছিল ভোর,
কোটি কোটি বছর আগের সে যাত্রা,
মাতৃ ক্রোড় থেকে এক বিস্ফোরণে বিচ্ছিন্নতা ।
ভেসে ভেসে কোন এক গ্যালাক্সিতে,
তার পর শুধু ঘর্ণায়ন,আবর্তিত কেন্দ্রের চারদিকে।
ভোর হয়েছিল কোয়াশাচ্ছন্ন আলো আধারিতে,
যেন গ্যাসের বলয় থেকে ।
সময় গড়িয়েছে, উদ্ভাসিত করেছে নিজেকে,
নিজের মহিমা বিকাশে অভ্যন্তরীণ শক্তিতে।
বিস্ফোরিত আভায় আলোকিত চারদিক।
চলতে চলতে নূহ্যমান দেহে অপেক্ষা,
ব্ল্যাক হোলে বিলীন হয়ে যাওয়া,
সমাপ্তি টানা এ যাত্রার।
পড়ন্ত বেলায় তেজ হীন রোদে বসে–
ভেসে উঠছে ছোট্ট বেলার উদোম গায়ে,
নদীতে ঝাপিয়ে পরা,বৃষ্টিতে ঢালু বাঁধে পিছলে খেলা,
পুটি মাছ ধরা খালের স্বল্প পানিতে,
স্কুল ছুটির ঘন্টা বেজে উঠা,
বই শ্লেট নিয়ে দৌড়ানো,
মাঝ পথে শ্লেট ছুড়ে বড়ই পেড়ে খাওয়া,
শ্লেট আটকে পরায় না পারতে পারার কান্না,
যেমন কৌতুহল বসে আটকে পরে বক
মাছের খুঁজে ফাঁদে ।
একের পর এক ঢিল ছুড়া,
শেষে ভাঙ্গা শ্লেট নিয়ে বাড়ি ফেরা,
মনে পরে আজ তাও ।
আজো মনে পড়ে-
প্রথম যৌবনে ভাল লাগা মনিরাকেও,
দুরূ দুরূ বুকে চলে আসা বাঁশ বাগানের নিচে
অবনত মুখ লজ্জায় রাঙা,যেন রক্ত জমেছে মুখে,
যেমনি সমস্ত আঁধারকে তাড়িয়ে নেয়,
প্রথম সূর্যের আলো ,
রক্তিম আভা বিচ্ছুরিত হয় চারদিক।
তার পর আসা যাওয়া কত কথা,
যেন লুকোচুরি চাঁদ সূরুজের।
হৃদয় দেয়া নেয়া, একদিন বিয়ে,
মনিরার চলে যাওয়া অন্যের ঘরে,
হৃদয় ভেঙ্গে চুরে ঘুড়িয়ে দিয়ে,
শুধু মাত্র নিজের কথা না বলতে পারার কারণে।
তার পর আষ্টে পিষ্টে বেঁধে ফেলা নিজেকে
মায়ার বাঁধনে অক্টোপাসের মতো।
ভুলে যাওয়া প্রতিশ্রুতির কথা,
গ্রহ উপগ্রহ নিয়ে ছুটে বেড়ানো,দূর্বার গতি।
রাজ হংস যেমন ভেসে বেড়ায়,
বাঁচ্চাদের নিয়ে গভীর জল রাশিতে ।
কোটি কোটি আলোক বর্ষ পর,
অভ্যন্তরীণ রাসায়নিক শক্তি কমতে থাকা,
জীবনী শক্তি কমে হীম শীতল হয়ে,
একদিন বিলীন হয়ে যাওয়া ব্ল্যাক হোলে।
পড়ন্ত বেলায় গোধুলী লগ্নে বসে
এ সবই আজ মনে পড়ে । ।