আমার বোকামী ।
মনুষ্য সমাজে বর্তমান সকল প্রকার বোকামী আমার মধ্যে কি প্রবলভাবে আছে তা একমাত্র আমিই জানি । মাঝে মাঝে এর কিয়দাংশ শেয়ার করার চেষ্টা করি । এবং অনেক রাখঢাক রেখে । কেননা নিজের উপর যে অমূল্য ভালবাসা নিয়ে আমি জন্মেছি তাতে সবটুকু প্রকাশে কিছু ঝুঁকি থাকে । তাছাড়া আমি মানুষ হিসেবে খুব একটা সাহসী নই । কিঞ্চিত উগ্র মেজাজের ভীরু পুরুষ । অবশ্য এই নিয়ে একপ্রকার হীনমন্যতা যে নিজের উপর কাজ করে না তা নয় । তবে মোটের উপর আমি ভীরু মানুষ । আর বর্তমান বাস্তবতায় আমার এ ভিন্ন উপায়ও নেই ।
কোন এক অকল্যান চিন্তায় বইমেলা-২০১১’তে নিজের ঘাটের পয়সা খরচ করে “ললাটবন্দিনী” নামক একখানা পুস্তিকা (উপন্যাস) পয়দা করে ফেলি । তারপর যা হবার তাই হলো । আমার অবশ্য তাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি । কেননা গায়ের চামড়া নেহায়েত গন্ডারের মতো না হলেও বেশ পুরু । তাছাড়া কানও খুব একটা পরিষ্কার করি না । তাই খুব সহজেই সবকিছু মানিয়ে যাই । এবং দ্বিতীয় বোকামী শুরু করি । মহা উৎসাহে “মাটির মূর্তি” নামক আরও একখানা উপন্যাস উৎপাদন করে ফেলি । পূর্বের অর্থদন্ড হতে শিক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেই এবার নিজের উপর আর কোন অত্যাচার করবো না । তাই কোন এক নামী প্রকাশনালয়ে বন্ধু সহযোগে গমন করি । সময়কালটা ২০১২’র নভেম্বর ডিসেম্বর হবে । অনেক দাঁড় বস অপেক্ষা শেষে নেতৃত্বস্হানীয় একজন এলেন । এবং নেহায়েত সৌজন্যতার খাতিরে পরিচয় পর্ব সমাপন পূর্বক আমাকে বিদেয় করে দিতে চাইলে আমি জোর করে ভদ্রলোকের হাতে পান্ডুলিপির একখানা কপি ধরিয়ে দিয়ে আসি ।
আমি নিশ্চিত ভদ্রলোক আজো আমার পান্ডুলিপিখানা ধরে দেখেননি । দেখলে অবশ্যই আমায় ফোন দিতেন । না পুস্তকখানি প্রকাশের জন্য নয় । এমন জঘন্য পুস্তক লেখককে দু’চার শব্দ না বললে বড্ড অন্যায় হবে । তাছাড়া একদিকে যেমন মূল্যবান সময় নষ্ট হবে তেমনি ভবিষৎতও প্রশ্রয় পাবে । অনাগত উৎপাত থেকে কাগজ কলমকে রক্ষার দায়িত্ব সবার ।
আমি ভাগ্যবান এ যা্ত্রায় বড় বাঁচা বেঁচে গেছি । তেমন কোন দন্ড ছাড়া নিঃশব্দেই রক্ষা পেয়ে গেছি ।
আবার ও মুখো হবো এমন বোকা আমি নই । যে মানসম্মান অপরের কৃপায় টেকে গেছে তা নিজের বোকামীতে বিসর্জন দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয় ।
………………নিঃশব্দ নাগরিক ।