স্পেস-১৪(অংশ-৬)
এই বলে শ্রাবন্তী রুম হতে বের হল।স্পেসের এক প্রান্তে এসে দাড়ায়।স্বচ্ছ কাচের ভিতর দিয়ে আকাশ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।গোলাকার,ডিম্বাকার বেশ কিছু গ্রহের ঘূর্ণন দেখা যাচ্ছে।মাঝে মাঝে কিছু কিছু মেঘ এদিক ওদিক ঘুরাফেরা করছে।মেঘগুলো খুব বেশি সাদা মনে হচ্ছে।পৃথিবী হতে নরমালি এত সাদাতো মনে হয় না।মায়ের কথা বেশ মনে পড়ছে।যে মার সাথে তার সারাক্ষণ ঝগড়া লেগেই থাকত,মনে হত এ ফালতু মহিলার কাছ হতে কবে মুক্তি পাবে,সে মার ছবি বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে।বারবার মনে হচ্ছে মার সাথে যদি একটি বার কথা বলতে পারত,তাহলে বলত-মা,আই লাভ ইউ।আই লাভ ইউ সো মাচ।মা আমি তোমার সাথে রোজ ঝগড়া করতে চাই।
রোজ চুল বেণী করে দিত।এরপর মুখটা ভাল করে ধুয়ে মুছে আয়নার সামনে নিয়ে দাঁড়াত।বলত-দেখ মা,তুইতো একেবারে রাজকুমারী?পরীর থেকে বেশি সুন্দর।
মায়ের এমন পাগলামি দেখে শ্রাবন্তী হেসে বলত-মা যাওতো।রোজ রোজ এক কথা ভাল লাগে না।
-যা সত্য তাই বললাম।পরীর থেকে বেশি সুন্দর,একথা তোর বিশ্বাস হয় না?
-বিশ্বাস হয়েছে।এবার যাও।
-দুধ এনেছি।দুধটা খেয়ে নে।
-মা প্লীজ রোজ রোজ দুধ খেতে ভাল লাগে না।দুধ খেলেই বমি হয়ে যাবে।
-দুধ না খেলে শরীর ঠিক থাকবে?এমনেতেই দিন দিন রোগা হয়ে যাচ্ছিস।
পীড়াপীড়ি করে দুধ খাওয়ানোর পরে অন্য কাজে যেত।অথচ এখানে কেমন?খাওয়ার কথা কেউ কিছু বলে না।খেতে ইচ্ছে হলে খাও,না হলে না খাও।
-শ্রাবন্তী?
পেছনে তাকিয়ে দেখে ফিক দাড়িয়ে।
-কি করছ এখানে?
-আকাশটা দেখছি।
-ঐ যে চ্যাপ্টা মতন একটা গ্রহ দেখা যাচ্ছে,ওটা আমাদের প্রিয় পৃথিবী।
শ্রাবন্তী বিস্মিত হয়ে বলল-আমাদের পৃথিবী?
-ইয়েস ডেয়ার,আমাদের পৃথিবী?
-এমন কেন?ছোটবেলা হতে তো কমলালেবুর মত গোল শুনে এসেছি।
-তা শুনেছ।আমরা পুরো অংশ দেখতে পাচ্ছি না।কিছু অংশ দেখতে পাচ্ছি।তাই এমন দেখা যাচ্ছে।আর বেশিক্ষণ দেখতে পাব না।বড়জোর মিনিট বিশেক।তাই ভাবলাম শেষ দেখাটা দেখে আসি?
-শেষ দেখা কেন বলছেন?
-যদি পৃথিবীতে ফিরে আসি,তাহলে দেখা যাবে সবকিছু বদলে গেছে।আমাদের বয়স বেড়েছে দেখা যাবে বিশ তিরিশ বছর,পৃথিবীর হয়তো এক-দুইশ বছর হয়ে যাবে।