স্পেস-১৪(অংশ-৬)
শ্রাবন্তী কিছু বুঝতে পারছে না।পৃথিবীর বয়স বাড়বে এক-দুইশ বছর,অথচ তাদের বয়স বাড়বে মাত্র বিশ তিরিশ বছর?হতভম্ব হয়ে বলল-এটা কেমন কথা?
-এটাই কথা শ্রাবন্তী।পৃথিবীর সবকিছু আপেক্ষিক।
-এটা আবার কি?
-চিরন্তন বলে কিছু নেই।আগে অনেক কিছুই চিরন্তন মনে করা হত,যেমন সময়।আইনস্টাইন এসে এসব থিওরির পেটে মারলেন লাথি,দেখালেন মহাবিশ্বের সবকিছুই আপেক্ষিক।
-ইনি আবার কে?
ফিক হেসে বললেন-এর নাম কখনো শুননি?
শ্রাবন্তী মাথা নাড়ে।
-পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পদার্থ বিজ্ঞানী।রিলেটিভিটি ল দিয়েছেন?
-কি?
-রিলেটিভিটি ল।আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে কোন কিছু গেলে সময় আর ধ্রুবক থাকে না।
এই বলে শ্রাবন্তীর দিকে তাকায়।মেয়েটা হতাশ হয়ে তাকিয়ে আছে।কিছু যে বুঝতে পারছে না,চোখ মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।একটু ঘুরিয়ে বলতে হবে।
-কি কিছু বুঝলে না বোধহয়?
শ্রাবন্তী মাথা নাড়ে।
-কোন ছেলে যখন প্রেমিকার সাথে থাকে,তখন তার কাছে তখন অনেক সময় মনে হবে অল্পসময়।আর প্রেমিককে যদি আগুনের কাছে রাখা হয়,অল্পসময় মনে হবে অনেক সময়।এটাই রিলেটিভিটি ল।
-কি যে হাবিজাবি বলেন,কিছু মাথায় ঢুকে না।
-তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না।মাথায় না ঢুকলে না ঢুকবে।
-আমাদের টিনডিমুটা গ্রহে যেতে কতদিন লাগবে?
-আমরা যে বেগে যাচ্ছি তাতে ৪০০ বিলিয়ন বছর লেগে যাবে।
শ্রাবন্তী শুনেতো বেশ বড় বড় করে তাকালো।বলল-আমরা এত বছর বাঁচব?
-ভাল প্রশ্ন করেছ।আমরা মাসখানিক আমাদের গতিতেই যাব।এরপর ভিনগ্রহের বাসিন্দা ইনফিনিটি ড্রাইভের মাধ্যমে ক্ষণিকেই তাদের কাছে নিয়ে যাবে।তারা জ্ঞান বিজ্ঞানে আমাদের থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন গুণ এগিয়ে।ইনফিনিটি ড্রাইভ কিভাবে কাজ করে,আমাদের অজানা।তাই ধরা যায় মাসখানিকের মধ্যে তাদের কাছে চলে যাব।
এমন সময় শ্রাবন্তী চিৎকার দিয়ে বলল-আমাদের পৃথিবী কই?
ফিক ভাল করে তাকিয়ে দেখে।–ঐ যে ঐ যে হালকা দেখা যাচ্ছে।তাকিয়ে থাক।আর দেখতে পারবে কিনা সেটাতো বলা যায় না।
তারা দুজনে গভীর আগ্রহ নিয়ে পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে আছে।পৃথিবীর প্রতি যে এত ভালবাসা,এই প্রথম দুইজনে বুঝতে পারল।