স্পেস-১৪(অংশ ৮)
অবশ্যই।গত পহেলা বৈশাখে তুমি সেজেগুজে শাড়ি পড়ে বের হলে,কিছুক্ষণ পর মোহিত কল দিয়ে বলে,শু,আজ খুব খারাপ লাগছে।আমরা বরং অন্যদিন বের হব।পরের দিন,দুজনে ঘুরতে বের হলে। এত তাড়াতাড়ি শরীর ভাল হয়ে গেল?
-কোন কোনদিন খারাপ লাগতেই পারে।এরকম তো আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে,কিছুতেই বিছানা হতে উঠতে ইচ্ছে হয় না।
-খুব বিশ্বাস দেখি প্রেমিকের প্রতি।
-ভালবাসায় বিশ্বাস না থাকলে তো হবে না।
-আপনাদের মানুষদের ঠিক বুঝতে পারি না।লজিকের চেয়ে বিশ্বাসের এত গুরুত্ব দেন কেন,মাথায় ধরে না।এর জন্য অবশ্য রিলিজন দায়ী।রিলিজনের প্রথম স্তম্ভ হচ্ছে বিশ্বাস,এটা কোন কথা হল?অথচ সবকিছুতে লজিক ব্যবহার করলে,জীবনটা কত ভাল হত?
-ভাল হত কিনা বলতে পারি না।বিশ্বাসের যে অনেক ক্ষমতা,সে তুমি বুঝবে না।
-কেন বুঝব না?
-কারণ তোমাদের তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে যাতে লজিকের বাইরে তোমরা যেতে না পার।লজিক বাদে বাকি সবকিছু মিথ্যা।কিন্তু দুনিয়াতে এখনও লজিকের বাইরেও অনেক কিছু আছে যাদের ব্যাখ্যা বিজ্ঞান এখনও দিতে পারে নাই।
-এখন পারে নাই,হয়তো কোনদিন পারবে।লজিকের বাইরে কিছু হয় না মহামতি।
শ্রাবন্তী বুঝতে পারল,এর সাথে কথা বলে লাভ হবে না।সে একটার পর একটা যুক্তি দিতেই থাকবে।তার মাথায় ভাল কোন যুক্তি আসছে না।
-হিপ তুমি যাও।আমি এখন ঘুমাব।
-আপনি মিথ্যা কথা বলছেন?
-কি মিথ্যা বললাম?
-আপনি এখন ঘুমাবেন না।আপনি আমার উপর যে বেশ বিরক্ত তা বুঝতে পারছি।
-তাহলে তো বুঝতেই পারছ।এবার সামনে হতে বিদায় হও।
হিপ কথা না বলে রুম হতে বের হল।শ্রাবন্তীর কেমন কেমন জানি লাগছে।মোহিত অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করতে পারে,এ কথা ভাবতেই পারছে না।ঘুরতে বের হলে মাঝে মাঝে মোবাইলটা বেজে উঠত।তখন চোখে মুখে কিছু লুকোনোর চিহ্ন দেখা যেত।কথা বলার কিছুক্ষণ পরেই কোন এক অজুহাত দিয়ে চলে যেত।যাক,এ স্পেসে এসে ভালই হয়েছে।নিজের চোখ দিয়ে ভালবাসার মানুষের প্রতারণা দেখতে হচ্ছে না।অনিকেত ছেলেটা কেমন আছে,কে জানে?ছেলেটাকে খুব বেশি অবহেলা করেছে।ছেলেটা যে খুব ভালবাসত,তাতে কোন সন্দেহ নেই।ছেলেটার মুখ খুব বেশি মনে পড়ছে।
-আপনি এখানে দাড়িয়ে আছেন কেন?
-তুমি যাবে বলে।
-আমার যাওয়ার পথে আপনি দাড়িয়ে থাকবেন না।
-তোমাকে দেখলে আমার ভাল লাগে।তাই দাড়িয়ে থাকি।যদি দেখা হয়।
-আচ্ছা ভাল করে দেখেন।
-দেখলাম।
-এবার চলে যান।
-তুমি হাঁটলে কেমন লাগে,তা দেখব।তুমি যেতে থাক,আমি দেখি।
-আপনার মাথায় কি বুদ্ধিশুদ্ধি কিছু হবে না?
-এতদিন যখন হল না,তখন আর কবে হবে?
-আপনি জানেন আমার একটা রিলেশন আছে।
-তো কি হয়েছে?এখনকার যুগের রিলেশন ভাঙ্গতে কয়দিন?
-আপনি সত্যিই পাগল।
-আমারও তাই মনে হয়।আপনাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
-এ তো কমন ডায়লগ।নতুন কিছু থাকলে বলেন।
-তোমার সাথে পরিচয় হবার পর,১৪ সংখ্যাটি আমার খুব প্রিয় হয়েছে।আমার কেন জানি মনে হয়,এই সংখ্যার সাথে তোমার জীবনের সুন্দর কোন ঘটনা জড়িত।
-আপনার মাথায় কি এসব আউলফাউল চিন্তা সবসময় ঘুরতেই থাকে?
-বোধহয় বেশি ভালবেসে ফেলেছি,তাই।
-পড়াশুনা কি একেবারে চুলায় দিলেন?
-দিলাম।ও করে আর কি হবে?